|
|
|
|
রাজনৈতিক দলগুলি সংযত হোক, চান উদ্বিগ্ন শিক্ষাবিদ্রা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বহরমপুর |
কৃষ্ণনাথ কলেজের ছোঁয়া লেগেছে বহরমপুর কলেজে।
গত বছর নির্বাচনে জয়ী হয়ে বহরমপুর কলেজ ছাত্র সংসদ পুনর্দখল করে এসএফআই। এর পরে গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরেই বহরমপুর কলেজেরও পালা বদল ঘটে। ছাত্রসংসদের ক্ষমতায় থাকা এসএফআই কর্মী-সমর্থকরা দ্বিধা বিভক্ত হয়ে যায়। এক পক্ষ তৃণমূল ছাত্রপরিষদে, অন্য পক্ষ ছাত্রপরিষদের সঙ্গে মিশে যাওয়ায় এই মুহূর্তে কলেজে বহরমপুর কলেজে এসএফআই-এর অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এর ফলে জোট সরকার কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের মধ্যে ক্ষমতা দখলের লড়াই শুরু হয়েছে, যা নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে যেমন আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, তেমনি বহরমপুর কলেজে লাগাতার গণ্ডগোলের জেরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বহরমপুর শহরের সর্বস্তরের মানুষ। |
|
কলেজে তাণ্ডব। আতঙ্কিত ছাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র। |
বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের অধ্যক্ষ সোমেশ রায় বলেন, “কলেজগুলিতে ছাত্র রাজনীতির নামে যা চলছে, তা এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। মেধার ভিত্তিতে কলেজে ছাত্র ভর্তি করার চেয়ে নিজের দলের সমর্থক হয়ে ওঠায় মানদণ্ড হয়ে গিয়েছে। ফলে যে দলের ক্ষমতা বেশি তারা কলেজ দখল করছে। কলেজ প্রশাসনে হস্থক্ষেপ করছে বহিরাগতরা, যা বাঞ্ছনীয় নয়। এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এই অবস্থায় রাজনৈতিক দলের জেলা নেতৃত্বের আরও সংযত আচরণ করা উচিত। তবে বহু দিন পরে পুলিশ ও প্রশাসন কলেজ কর্তৃপক্ষের কথা শুনছে, এটা অবশ্য ভাল দিক।”
অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক শক্তিনাথ ঝাঁ বলেন, “গোটা সমাজ যখন জটিল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক একটা আবর্ত ও দ্বন্দ্বে ভুগছে। তখন কলেজ শিক্ষক বা ছাত্ররাও এর বাইরে থাকতো পারে না। কারণ তারা সমাজেরই অঙ্গ। প্রতিটি রাজনৈতিক দলগুলি কলেজগুলি দখল করতে চাইছে, যা অনেকটা এলাকা দখলের মত। বহু দিন ধরেই এটা চলে আসছে। তবে জেলার কলেজগুলিতে যা ঘটছে, তার পিছনে অন্য কোনও স্থানীয় সমস্যা রয়েছে বলে মনে হয়। জেলা বা রাজ্য নেতৃত্ব চাইলেই বন্ধ করতে পারে, কিন্তু তা হচ্ছে না।” বহরমপুর নাগরিক সমিতির সম্পাদক ও অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক বিষাণ গুপ্ত বলেন, “কলেজগুলিতে বর্বরোচিত ঘটনা ঘটছে। বহিরাগতরা কলেজে যে উৎপাত চালাচ্ছে তাতে কলেজ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই। কেননা, লাগাতার এই ঘটনা ঘটলে কলেজে পড়াশোনার পরিবেশ বলে তো কিছু থাকছে না। পুলিশ ও প্রশাসন এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। রাজনৈতিক ভাবেই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।” বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের শিক্ষিকা বর্ণালী মুখোপাধ্যায় বলেন, “পছন্দ মত ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলের যতটা আগ্রহ থাকে, কলেজে শিক্ষার পরিবেশ তৈরির ব্যাপারে তাঁরা ততটাই অনাগ্রহী।” জিয়াগঞ্জ শ্রীপৎ সিংহ কলেজের অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান আহমেদ বলেন, “রাজনৈতিক দলের আচরণ আরও সংযত হওয়া উচিত। এ জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বকেই এগিয়ে আসতে হবে।” |
|
|
|
|
|