যে দিন তাঁর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল, সে দিনই তাঁকে নামতে হচ্ছে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে। পেরুর বিরুদ্ধে। আর এ নিয়েই আর্জেন্তিনায় চরম হেনস্থার মুখে দিয়েগো ফোরলান। কোপায় অবশিষ্ট একমাত্র মহাতারকা।
আর্জেন্তিনার নামী মডেল জায়রা নারা-র সঙ্গে ফোরলানের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার। কিন্তু মাসখানেক আগে জায়রাই ভেঙে দিয়েছিলেন তাঁদের সম্পর্ক। ফোরলান সেই সময় বলেছিলেন, “আমি বিয়ের জন্য তৈরি ছিলাম না। সময় চেয়েছিলাম জায়রার কাছে। ও আমার কথা মানতে চায়নি।” |
সেই ঘটনার প্রভাব পড়েছে কোপাতেও। আর্জেন্তিনা-উরুগুয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল চলার সময় গ্যালারিতে প্রচুর আর্জেন্তিনা সমর্থককে দেখা যায় ‘বিশ্বাসঘাতক ফোরলান’ লেখা পোস্টার হাতে। যখনই কর্নার বা থ্রো করতে মাঠের ধারে গিয়েছেন, তখনই তাঁকে লক্ষ্য করে ছুটে এসেছে নানা মন্তব্য। গ্যালারিতে আর্জেন্তিনীয় তরুণীদের হাতে ছিল পোস্টার, “আমাদের ভাগ্য ভাল, আমরা ফোরলানের সঙ্গে সম্পর্কে জড়াইনি। তা হলে আমাদেরও একই অবস্থা হত।”
জায়রা নারার সঙ্গে ফোরলানের সম্পর্ক অনেক দিনের। স্পেনের বিশ্বকাপ জয়ী তারকা কাসিয়াস যেমন টিভির অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে চুম্বন করেন তাঁর বান্ধবীকে, ফোরলানও আর্জেন্তিনার এক অনুষ্ঠানে ওই চুম্বন করেন জায়রাকে। জায়রার দিদি ওয়ান্ডা নারাও বিখ্যাত সে দেশে। এক সময় ছিলেন দিয়েগো মারাদোনার বান্ধবী। ওয়ান্ডা পরে বিয়ে করেন আর্জেন্তিনার মাঝারি মানের ফুটবলার ম্যাক্সিমিলানো লোপেজকে। ম্যাক্সি লোপেজ খেলেন ইতালির সিরি এ ক্লাব কালসিও কাতানিয়াকে। গোটা আর্জেন্তিনা ধরে নিয়েছিল, ফোরলান সে দেশের জামাই হচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত তা না হওয়ায় হতাশার বহিঃপ্রকাশ দেখা দেয় গোটা দেশে। আর্জেন্তিনা ম্যাচে ছিল তার প্রতিফলন। মারাত্মক চাপে ছিলেন ফোরলান।
আর্জেন্তিনাকে হারানোর পর ফোরলানকে তাই দেখা গেল অন্য মেজাজে। সাধারণত তাঁকে মাত্রাতিরিক্ত উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায় না। সে দিন জেতার পর কিন্তু ফোরলানকে মাঠে সতীর্থদের সঙ্গে যথেষ্ট হই-হুল্লোড় করতে দেখা গেছে। মনে করা হচ্ছে এর পিছনে রয়েছে ফোরলানের ব্যক্তিগত আঘাত ভুলে থাকার চেষ্টা অথবা ওই ম্যাচে গ্যালারির বিদ্রুপের জবাব দেওয়া। ফোরলান ব্যক্তিগত সম্পর্ক নষ্টের বিষণ্ণতা কাটিয়ে এখন চাইছেন কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হয়ে ঘরে ফিরতে।
গ্যালারির বিদ্রুপ উপেক্ষা করে ফাইনালে দলকে নিয়ে যেতে পারেন কি না সেটাই দেখার। |