লাইনে হাতির মৃত্যু ঠেকাতে উদ্যোগ, বৈঠকে আশ্বাস দীনেশের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে উত্তরবঙ্গে ট্রেনে কাটা পড়ে বুনো হাতির মৃত্যু রুখতে উদ্যোগী হলেন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী। মঙ্গলবার তিনি শিলিগুড়ির পরিবেশপ্রেমী সংস্থা হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের (ন্যাফ) একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেন। রেলমন্ত্রীই তাঁদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন। সংস্থার প্রতিনিধি দলের কাছ থেকে একটি লিখিত প্রস্তাবও তিনি গ্রহণ করেন। আজ, বুধবার এই ব্যাপারে তিনি দিল্লিতে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের সঙ্গে এই বিষয়ে বৈঠক করবেন। ওই বৈঠকের পরে বুনো হাতির মৃত্যু রুখতে রেলের পক্ষ থেকে আর কী কী করা দরকার তা চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। এ দিন নিউ জলপাইগুড়িতে রেলের অতিথি নিবাসে বসে তিনি বলেন, “বুনো হাতির ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর বিষয়টি অত্যন্ত জটিল। জঙ্গলে বুনো হাতির সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। কী ভাবে বুনো হাতির ট্রেনে কাটা পড়া বন্ধ করা যায় সেটা সকলে মিলে আলোচনা করে ঠিক করতে হবে। সেই জন্যই ন্যাফের প্রতিনিধি দলকে ডেকেছিলাম। দিল্লিতে পরিবেশবিদদের সঙ্গেও কথা বলব।” |
|
শিলিগুড়ি কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী। ছবিটি তুলেছেন সন্দীপ পাল। |
ন্যাফের পক্ষ থেকে এদিন রেলমন্ত্রীর কাছে ডুয়ার্সের রেলপথে রাতে ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, ডুয়ার্সের বাসিন্দাদের প্রয়োজন নেই এমন ট্রেনও ওই পথে চলাচল বন্ধ করতে বলা হয়েছে। গত এক দশকে উত্তরবঙ্গে রেল যোগাযোগ যেমন বেড়েছে তেমনই বেড়েছে ট্রেনের সংখ্যা। সে ক্ষেত্রে বিকল্প পথ হিসাবে ন্যাফের পক্ষ থেকে নিউ জলপাইগুড়ি-নিউ কোচবিহার রেলপথে ডাবল লাইন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “ট্রেনের গতি কমানো কিংবা ওয়াচ টাওয়ার বসিয়ে বুনো হাতির কাটা পড়া বন্ধ করা যাবে না। ডুয়ার্সে রাতে ট্রেন চালানো বন্ধ করা এবং ডুয়ার্সের বাসিন্দাদের প্রয়োজন নেই এমন ট্রেনের সংখ্যা কমাতে হবে। ট্রেনের গতিও কমাতে হবে। তাহলেই হাতির মৃত্যু অনেকটা ঠেকানো যাবে। রেলমন্ত্রী যেভাবে আগ্রহ নিয়ে আমাদের কথা শুনেছেন তাতে মনে হচ্ছে কিছু একটা হবে।” শিলিগুড়ি জংশন থেকে মালবাজার হয়ে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত ডুয়ার্সের রেলপথটি মহানন্দা, গরুমারা এবং বক্সার মতো ৩টি গুরুত্বপূর্ণ অভয়ারণ্যের ভিতর দিয়ে গিয়েছে। ওই তিনটি অভয়ারণ্যের ভিতরেই সারা বছর বুনো হাতির পাল থাকে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালে ডুয়ার্স রুটের রেলপথ ব্রডগেজে উন্নীত হওয়ার পরে ট্রেনের সংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমনই বুনো হাতির মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৯ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন মহল থেকে বহু বার রেল কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করা হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। গত বছর বানারহাটে ট্রেনের ধাক্কায় একসঙ্গে ৭টি বুনো হাতির মৃত্যুর পরে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকও নড়েচড়ে বসে। |
|