|
|
|
|
আরামবাগের দুই এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
দু’টি বিক্ষিপ্ত ঘটনায় মঙ্গলবার তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে জখম হলেন তিন জন। সকলকেই ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে।
এ দিন সকালে গোঘাটের নরহরবাটি গ্রামে ভাস্কর ঘোষাল নামে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতাকে তাঁর নিজের বাগানে ঢুকে মারধর করে কয়েক জন। তিনি ভুরকুন্ডা গ্রামে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক। আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভাস্করবাবুর কথায়, “অরণ্য সপ্তাহ উপলক্ষে নিজের বাগানে কিছু চারা পুঁতেছিলাম। এই নিয়ে গ্রামের মানুষকেও গত কয়েক দিন ধরে উৎসহিত করছিলাম। এ দিকে, আমারা বাগানেরই চারা উপড়ে নেওয়া হচ্ছিল। একটি মাচাও ভেঙে দেওয়া হয়। এ দিন দেখি আমাদের দলেরই কিছু ছেলে সেই কাণ্ড করছে। প্রতিবাদ করলে জনা দশেক মিলে আমাকে মারধর শুরু করে। আমার স্ত্রী ও ভাই বাধা দিতে গেলে তাদের গায়েও হাত তুলেছে।” কয়েক জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন ভাস্করবাবু।
অভিযুক্তদের এক জন, তৃণমূল নেতা শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, “গাছ উপড়ে ফেলা বা মাচা ভাঙার মতো কোনও ঘটনাই ঘটেনি। মাচা ভেঙে দেওয়ার মিথ্যা অপবাদে ওই শিক্ষক এক মহিলাকে মারধর করেন। তারই প্রতিবাদ করা হয়েছে।” শুভেন্দুবাবুরাও থানায় পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অন্য একটি ঘটনায়, সোমবার রাতে খানাকুলের রামপ্রসাদ গ্রামে তৃণমূলের সভা থেকে ফেরার পথে প্রহৃত হন তৃণমূল নেতা ইলিয়াস চৌধুরী-সহ ৫ জন। তাঁর দুই ভাইপো পাপ্পু চৌধুরী এবং বাবু চৌধুরীকে মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা করানো হয়।
ইলিয়াসের অভিযোগ, ২১ জুলাই সমাবেশ উপলক্ষে মিছিল হচ্ছিল। ঘোষপুরের বাসিন্দা ওই নেতার দাবি, “সভা সেরে বাড়ি ফেরার পথে আমাদেরই দলের কিছু লোক পথ আটকে মারধর করে।” এই ঘটনায় লিয়াকত খান নামে এক দলের এক উঠতি নেতা জড়িত বলে অভিযোগ ইলিয়াসের। প্রহৃত তৃণমূল নেতা বলেন, “এলাকার লোক লিয়াকতের নেতৃত্ব মানতে চায় না। কিন্তু সন্ত্রাস করে নিজের দল ভারি করতে চাইছে। সমস্ত বিষয়টি দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানিয়েছি।”
অন্য দিকে, লিয়াকতের পাল্টা দাবি, “ইলিয়াসের লোকজন গালিগালাজ করছিল। নেতৃত্ব নিয়ে কটাক্ষ করছিল। প্রতিবাদ করলে ওরাই মারধর করে। ওরাই সন্ত্রাস করছে খানাকুলে।” এ ক্ষেত্রেও দু’পক্ষ অভিযোগ জানিয়েছে থানায়। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে খানাকুলের তৃণমূল নেতা শৈলেন সিংহের বক্তব্য, ‘‘পুরনো তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে নতুন কর্মীদের সংঘাত খানাকুলে বিপদ ডেকে আনছে। এর পিছনে সিপিএমের ষড়যন্ত্র আছে কিনা, সে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।”
গোঘাটের কাঁঠালি গ্রামে বিজেপি নেতা জগবন্ধু দে-কে তৃণমূলের লোকজন মারধর করে বলে অভিযোগ। তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। তাঁর অভিযোগ, গ্রামে বিজেপি-র পতাকা তোলায় বারণ করেছিল তৃণূল। সে কথা না শোনায় মারধর করা হয়। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। |
|
|
|
|
|