|
|
|
|
রিপোর্ট চাইলেন ডিজি |
তদন্তকারীই টাকা চাইছেন, নালিশ করলেন অভিযুক্ত |
সুনন্দ ঘোষ • কলকাতা |
তদন্তের ভার যাঁর উপরে, তাঁর বিরুদ্ধেই এ বার তদন্ত!
তিনি রেল-পুলিশের এক অফিসার। একটি ঘটনায় এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করছিলেন তিনি। এ বার তাঁরই বিরুদ্ধে অভিযোগ, মামলা ‘হাল্কা’ করার আশ্বাস দিয়ে তিনি ওই ব্যবসায়ীর কাছে টাকা চেয়েছেন। ওই ব্যবসায়ী রেল-পুলিশের ডিজিকে এই মর্মে লিখিত অভিযোগ করেন যে, সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারটি টেলিফোন করে তাঁর কাছে ১২ হাজার টাকা দাবি করেছেন। যার ভিত্তিতে তদন্তের নিদের্র্শ দিয়েছেন ডিজি দিলীপ মিত্র। ব্যবসায়ীর নাম সঞ্জীব মজুমদার। বাড়ি হিন্দমোটরে। সুগন্ধী ও প্রসাধনীর ব্যবসা তাঁর। কোন ঘটনায় জড়ালেন উনি? সঞ্জীববাবুর বয়ান অনুযায়ী, গত ২৬ মে বেলা দশটা নাগাদ তিনি ব্যান্ডেল লোকালে হাওড়া স্টেশনে নামেন। প্ল্যাটফর্মে তখন বিনা টিকিটের এক যাত্রীকে ঘিরে টিকিট পরীক্ষক ও যাত্রীদের তর্কাতর্কি হচ্ছিল। তিনিও দাঁড়িয়ে পড়েন। এক পুলিশ অফিসার তাঁকেও ধরেন। সঞ্জীববাবু জানিয়েছেন, অফিসারকে ধাক্কা মেরে পালানোর চেষ্টা করেন। সফল হননি।
সঞ্জীববাবুর কাছে বৈধ মান্থলি ছিল। তা হলে ও ভাবে পালাতে গেলেন কেন? বছর তেত্রিশের ব্যবসায়ীটি বলেন, “এই জানুয়ারিতে আমার হার্টে বেলুন-সার্জারি হয়েছে। হাই ব্লাড-সুগার, হাই কোলেস্টেরল। স্রেফ ঘাবড়ে গিয়ে পালাতে চেয়েছিলাম। অফিসারকে ধাক্কাও মেরেছিলাম।”
সঞ্জীববাবুকে জিআরপি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে বাড়ির লোক থানায় গিয়ে ওঁর চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখান। কিন্তু সঞ্জীববাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে মামলা শুরু করে পুলিশ। তাঁকে গ্রেফতার করে থানায় রাখা হয়। পুলিশের কাজে বাধাদান এবং পুলিশকে মারধরের অভিযোগে হাওড়া জিআরপি থানায় সঞ্জীববাবুর নামে মামলা রুজু হয় গত ২৬ মে। আদালত সঞ্জীববাবুকে সাত দিন জেলে রাখতে বলে। এর পর শুনানি ২৬ অগস্ট।
এখন ডিজি-র কাছে সঞ্জীববাবুর অভিযোগ, চার্জশিট দেওয়ার আগে তদন্তকারী অফিসার ফোন করে বারো হাজার টাকা চেয়েছেন। বিনিময়ে আশ্বাস দিয়েছেন, তিনি চার্জশিট জমাই দেবেন না! এ ক্ষেত্রে চার্জশিট জমা না-পড়ার অর্থ, প্রমাণ মেলেনি বলে অভিযোগটিকে ‘হাল্কা’ করে দেওয়া। প্রসাধনী-ব্যবসায়ীর আরও নালিশ, “মামলার কেস-ডায়েরি সাত দিনের মধ্যে কোর্টে জমা দেওয়ার জন্য এর আগে আমার থেকে নগদ ছ’হাজার টাকা ও তিনটে বডি-স্প্রে নেন ওই অফিসার।” তিনি বলেন, “জানি, আমার দোষ হয়েছিল। কিন্তু এখন যা শুরু হয়েছে, তা আর সহ্য হচ্ছে না। মাঝে মধ্যেই ফোন করে টাকা চাওয়া হচ্ছে। এত টাকা কী করে দেব?” ডিজি দিলীপবাবু জানান, সঞ্জীববাবুর লিখিত অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। তাঁর কথায়, “এডিজি-কে বলেছি ব্যাপারটা নিয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে।” |
|
|
|
|
|