|
|
|
|
স্কুলবাসে ছোড়া গ্রেনেড লক্ষ্যভ্রষ্ট, ধৃত আলফা জঙ্গি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
অল্পের জন্য আর একটি ধেমাজি কাণ্ড আজ দেখতে হল না অসমবাসীকে। এ দিন সকালে শিবসাগরে স্কুলবাস লক্ষ্য করে ছোড়া আলফা জঙ্গির গ্রেনেড একটু দূরে গিয়ে পড়ায় রক্তস্নানের হাত থেকে রক্ষা অল্পবয়সী পড়ুয়ারা। প্রাণে বেঁচেছেন বাস প্রহরায় থাকা জওয়ানরাও। ঘটনার অল্পক্ষণের মধ্যেই মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আসাম রাইফেল্সএর দু’টি স্কুলবাস প্রতিদিনের মতো আজ সকালেও নাগিনাজান থেকে নাজিরার কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিল। ৭টা ২০ নাগাদ চোলাধরা গ্রামের কাছে বিহুবাড় রোডে স্কুলবাসের সামনে গ্রেনেড ছোড়ে জঙ্গিরা। কপাল জোরে গ্রেনেডটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বাস পাহারা দিয়ে নিয়ে যাওয়া জওয়ানদের গাড়িটিকেই নিশানা করেছিল জঙ্গিটি।
ঘটনার পরেই দুষ্কৃতীর সন্ধানে চিরুনি তল্লাশিতে নামে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। শিবসাগরের পুলিশ সুপার এ কে সিংহ জানান, গ্রেনেডটি ছুড়েই শিমালগুড়ির কাছে একটি জঙ্গলে আত্মগোপন করে ছিল দীপক গোয়ালা ওরফে বিজয় মাংকি। তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় জানা যায়, বন্ধক রাখা জমি ছাড়াতে আলফার তরফে দীপককে আড়াই লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। প্রথম দফায় পঞ্চাশ হাজার টাকা ও গ্রেনেডটি তাকে দেওয়া হয়। বলা হয়েছিল, কাজ সফল হলে বাকি টাকা দেওয়া হবে। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে, কারা ওই টাকা ও গ্রেনেড দীপকের হাতে তুলে দিয়েছিল।
সেনা ও পুলিশের গোয়েন্দারা আগেই জানিয়েছিলেন, পরেশপন্থী আলফার একটি দল মায়ানমার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে শিবসাগরে ঘাঁটি গেড়েছে। তারা দরিদ্র যুবকদের টাকা দিয়ে সন্ত্রাসের কাজে লাগাচ্ছে। তবে, তারা এইভাবে স্কুলবাস তাগ্ করে গ্রেনেড ছুড়বে ভাবা যায়নি। ঘটনাস্থলের তিন কিলোমিটারের মধ্যেই আলফা সভাপতি অরবিন্দ রাজখোয়ার বাড়ি।
এর আগে, ২০০৪ সালের ১৫ অগস্ট ধেমাজি কলেজ মাঠে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল আলফা। শিশু ও মহিলা মিলিয়ে ১৩ জনের মৃত্যু ঘটে সেই বিস্ফোরণে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে নাশকতা ও এতগুলি শিশু হত্যার ঘটনা আর হয়নি এ রাজ্যে। ঘটনার ৫ বছর ৪ মাস পরে এক বিবৃতিতে পরেশ বড়ুয়া সমগ্র অসমবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছিলেন, ‘‘ধেমাজি বিস্ফোরণ আলফা তথা বিপ্লবের ইতিহাসে সব থেকে কলঙ্কের অধ্যায়।” চলতি বছর মে মাসে ধেমাজির স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে প্রয়াতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অরবিন্দ রাজখোয়া। ওই কাণ্ডের দায় নিজের ঘাড়ে নিয়ে তিনি বলেছিলেন, “আমাদের ক্ষমা করুন। আর রক্তপাত নয়। আলোচনার মাধ্যমেই সব কিছুর সমাধান করতে বদ্ধপরিকর আমরা।” কিন্তু তার পরেও আজ ফের স্কুলবাসের দিকে গ্রেনেড ছোড়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ আলোচনাপন্থীরা। এ ঘটনার নিন্দা করে আলোচনাপন্থী নেতারা বলেন, “শান্তির পথেই অসম সমস্যার সমাধান হবে। দলবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীর হঠকারী সিদ্ধান্ত সমগ্র শান্তি প্রক্রিয়ার কাছে বড় আঘাত।” এ দিকে আজ নলবাড়ির টিহুতে আলোচনাপন্থী আলফা সদস্যদের জন্য ৫০ বিঘা জমিতে নতুন সরকার স্বীকৃত শিবিরের শিলান্যাস করেন রাজখোয়া। আলফার বিদেশ সচিব শশধর চৌধুরিও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। |
|
|
|
|
|