|
|
|
|
পাহাড় লাইনের যন্ত্রণা |
আলো জ্বলে না, পাখা ঘোরে না, ক্ষুব্ধ যাত্রীরা |
উত্তম সাহা • শিলচর |
আধুনিক ব্যবস্থা চালু করতে চেয়েছিলেন রেলকর্তারা। আর সেটাই যন্ত্রণা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে পাহাড় লাইনের রেলযাত্রীদের। লামডিং-শিলচর বা, লামডিং-আগরতলা, আপ-ডাউন কোনও ট্রেনেই আলো জ্বলে না। পাখা ঘোরে না। কাজ করে না বাতানুকূল যন্ত্র। ফলে গরমে সিদ্ধ হওয়ার মতো অবস্থা যাত্রীদের।
না, আলো পাখা বা এসি বিকল হওয়ার কারণে এই যাত্রী দুর্ভোগ নয়। আসলে আগে পাহাড় লাইনে ট্রেনের সঙ্গেই জোড়া থাকত পাওয়ার ভ্যান। সেখান থেকেই কামরায় কামরায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হত। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পাওয়ার ভ্যান সরিয়ে চালু করা হয় ব্যাটারি-ব্যবস্থা। ব্যাপারটা অনেকটা সাইকেলের ডায়ানামোর মতো। যত জোরে ট্রেন চলবে, তত জোরে আলো-হাওয়া। কিন্তু পাহাড় লাইনে এই ব্যবস্থাই ভোগান্তি বাড়িয়ে দেয়। একে তো মিটার গেজ, তার উপর দুর্বল রেললাইন। পাহাড়ে চলার সময় অধিকাংশ জায়গায় ট্রেন চলে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার গতিতে। কোথাও আবার হাঁটার গতির সমান। ফলে আলো জ্বলে না। পাখা ঘোরে না। কাজ করে না এসি। রাতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন যাত্রীরা।
অথচ এই রুটে তিন জোড়া এক্সপ্রেস ট্রেন রয়েছে। লামডিং ও শিলচরের মধ্যে দুই জোড়াকাছাড় এক্সপ্রেস এবং বরাক ভ্যালি এক্সপ্রেস। লামডিং ও আগরতলার মধ্যে চলে এক জোড়াআগরতলা এক্সপ্রেস। যাত্রীদের অভিযোগ, দিনের বেলা কোনও ক্রমে কেটে গেলেও রাত বড় দুঃসহ। বছর দুয়েক আগেও ডিমা হাসাও জেলায় জঙ্গিদের আক্রমণের মূল লক্ষ্য ছিল যাত্রিবাহী ট্রেন।
জঙ্গি-যন্ত্রণা আপাতত কিছুটা কমলেও ডাকাতির ঘটনা বেড়ে গিয়ছে। দিন কয়েক আগেই কাছাড় এক্সপ্রেসে ডাকাতি হয়েছে। তাই সন্ধ্যা নামলেই আতঙ্ক গ্রাস করে যাত্রীদের। সব থেকে বেশি সঙ্কটে পড়েন শিশু-বৃদ্ধ এবং অসুস্থ যাত্রীরা।
যাত্রীদের এই সমস্যা নিয়ে রেল কী বলছে? উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ অফিসার এস হাজং জানান, ব্রড গেজের কাজ চলছে। গেজ পরিবর্তনের পরই এ সমস্যা মিটে যাবে। কিন্তু দেড় দশক ধরে চলা এই কাজ যে কবে শেষ হবে তা কেউই জানেন না। হাজংয়ের অবশ্য দাবি, বিষয়টি নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষও ভাবনাচিন্তা করছেন। কথা হচ্ছে পাওয়ার ভ্যান ফিরিয়ে আনার ব্যাপারেও।
যাত্রীদের আরও অভিযোগ আছে। তাঁদের বক্তব্য, অধিকাংশ সময়েই ট্রেনে জল থাকে না, শৌচাগার অপরিচ্ছন্ন। টি টি-রাও নিজেদের দায়িত্ব পালন করেন না। ফলে টিকিট কেটেও অনেক বৈধ টিকিটধারী যাত্রী সংরক্ষিত আসনে বসতে পারেন না। সেখানে বসে থাকে টিকিটহীন লোকজন। এ লাইনে এটাই কার্যত দস্তুর হয়ে উঠেছে। এ সব কিছুর জন্য বৈধ টিকিটধারী যাত্রীরা দায়ী করেন রেল কর্তৃপক্ষের ঔদাসীন্যকেই। |
|
|
|
|
|