|
|
|
|
নির্দেশ হাইকোর্টের |
মায়াবতীকে বিপাকে ফেলে ফের বাতিল জমি অধিগ্রহণ |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
জমি অধিগ্রহণ নিয়ে ফের ধাক্কা খেল মায়াবতী সরকার। ইলাহাবাদ হাইকোর্ট আজ গ্রেটার নয়ডার দু’টি গ্রামে প্রায় ৬০০ হেক্টর জমির সরকারি অধিগ্রহণ বাতিল করে দিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের গৌতম বুদ্ধ নগর জেলার পাটওয়ারি এবং দেওলা গ্রামের এই জমি আবাসন গড়ার জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছিল।
এ মাসের প্রথমে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রেখে পাটওয়ারিরই পাশের গ্রামে ১৫৬ হেক্টর অধিগৃহীত জমি কৃষকদের ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। জমি অধিগ্রহণ প্রশ্নে কৃষকদের অসন্তোষকে পুঁজি করে রাহুল গাঁধী যখন উত্তরপ্রদেশে আন্দোলন তীব্র করছেন, তখন পরপর আদালতের এই নির্দেশ দলিত নেত্রীকে অস্বস্তিতে ফেলবে নিঃসন্দেহে।
২০০৮ সালে গ্রেটার নয়ডা অথরিটি পাটওয়ারি এবং দেওলা গ্রামের প্রায় ৬০০ একর জমি অধিগ্রহণ করে তা কয়েকটি আবাসন সংস্থাকে বিক্রি করেছিল। গ্রামের ১০০ জনেরও বেশি বাসিন্দা হাইকোর্টে অভিযোগ জানিয়েছিলেন যে, তাঁদের আপত্তি জানানোর কোনও সুযোগই রাজ্য সরকার দেয়নি এবং উপযুক্ত ক্ষতিপূরণও দেয়নি। বিচারপতি সুনীল অম্বাওয়ানি এবং বিচারপতি এস এস তিওয়ারির বেঞ্চ এ দিন জানায়, জমি আবাসন গড়ার জন্য নেওয়া হয়েছিল। তাই জমির মালিকদের কথা না শুনে অধিগ্রহণ করা উচিত হয়নি। ঠিকঠাক আলোচনা হলে জমির মালিকরা নির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ পেতেন। পাটওয়ারির পাশের শাহবেরি গ্রামেও ‘শিল্পের জন্য’ যে ১৫৬ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করেছিল সরকার, তা অধিগ্রহণ আইনের ‘জরুরি’ ধারায় নেওয়া হয়েছিল। ফলে জমিহারা কৃষকরা তা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যেতে পারেননি। শুধু সে কারণেই নয়, শিল্পের জন্য জমি নিয়ে তাতে কেন বিলাসবহুল আবাসন তৈরি করা হল, তা নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিল শীর্ষ আদালত।
দিল্লির উপকণ্ঠে গৌতম বুদ্ধ নগর জেলা গত কয়েক মাস ধরেই জমি-আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু। গত মে মাসে যমুনা এক্সপ্রেসওয়ের জন্য জমি নেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশ-গ্রামবাসী সংঘর্ষে দুই পুলিশের মৃত্যু হয়। মারা যান এক গ্রামবাসীও। ভাট্টা পারসল গ্রামের বাসিন্দাদের উপরে পুলিশের অত্যাচারের অভিযোগ এনে আন্দোলনে নেমে পড়েন রাহুল গাঁধী। একের পর এক পদযাত্রা এবং আলিগড়ে মহাপঞ্চায়েতের মাধ্যমে আন্দোলন তীব্রতর করছেন তিনি।
ইলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে খুশি কংগ্রেস। দলের বক্তব্য, রাহুল গাঁধী জমি প্রশ্নে যে আন্দোলন করছেন, আদালতের একের পর এক রায়ে তা বৈধতা পাচ্ছে। এবং তা আন্দোলন তীব্র করতে অক্সিজেন জোগাচ্ছে। উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন আগামী বছর। তার আগে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি-সহ বিভিন্ন বিষয়ে মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগাতে নেমে পড়েছে বিরোধী দলগুলো। তবে জমি প্রশ্নে কংগ্রেস ছাড়া অন্য কোনও দল মাঠে নামেনি। ফলে তার ফায়দা পুরোপুরি তুলতে চায় তারা। পাশাপাশি জমি অধিগ্রহণ সংশোধন বিল পাশ করা এখন সরকারের কাছে অগ্রাধিকার। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশে জমি আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে একটি সুসংহত জমি নীতি প্রণয়ন সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। এবং নতুন গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী, সনিয়া-ঘনিষ্ঠ জয়রাম রমেশ দায়িত্ব নেওয়ার পরেই বলেছেন, কেন্দ্রের জমি-নীতি উত্তরপ্রদেশ সরকারের নীতির থেকে অনেক ভাল হবে।
তবে পাটোয়ারি গ্রামের ওই জমিতে বেশ কয়েকটি আবাসন তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তার বুকিং-ও হয়েছে। ফলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের মতো ইলাহাবাদ হাইকোর্টের আজকের নির্দেশেও বিপাকে পড়েছে বেশ কয়েকটি নামী আবাসন সংস্থা। এবং যাঁরা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে সে সব নির্মীয়মাণ আবাসনে বুকিং সেরে ফেলেছেন, চরম বিপদে তাঁরাও। |
|
|
|
|
|