|
|
|
|
দাবি সিবিআই তদন্তের |
নিয়ম ভেঙে জমি ঘনিষ্ঠদের, অভিযোগ নীতীশের বিরুদ্ধে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা |
আট মাস আগে দ্বিতীয় বার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন নীতীশ কুমার। নিজের মন্ত্রিসভার স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে সবার আগে মন্ত্রীদেরই প্রকাশ্যে সম্পত্তি ঘোষণার নির্দেশ দেন তিনি। সেই নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধেই এ বার অভিযোগ উঠল জমি কেলেঙ্কারির। অভিযোগ, বিহারের শিল্প উন্নয়ন নিগমের (বিআইডিএ) জমি নীতীশের ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী-সান্ত্রীদের নিকট আত্মীয়দের অন্যায় ভাবে পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ ওঠার পরে সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি প্রাথমিক ভাবে এড়িয়ে যাওয়ারই চেষ্টা করা হয়েছে। রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী রেণু কুমারী বলেছেন, “আমি কিছুই জানতাম না। এখন শোনার পরে জানার চেষ্টা করছি।” আর বিব্রত মুখ্যমন্ত্রী এ নিয়ে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি। আজ বিধানসভা চলার ফাঁকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নীতীশ কুমার শুধু বলেছেন, “আমিও শুনেছি। শোনার পরেই মুখ্যসচিবকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। রিপোর্ট দেখার পরেই এ নিয়ে আমি মন্তব্য করতে পারব।”
রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী পরভিন আমানুল্লা এবং তাঁর স্বামী তথা রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরের প্রধানসচিব আফজল আমানুল্লা মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তাঁদের মেয়ে রেহমাত ফতিমাকে বিআইডিএ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের জন্য প্রায় ৮৭ হাজার বর্গফুট জমি দিয়েছে বলে রাজ্যের শিল্প দফতরের রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে।
একই ভাবে নীতীশের ঘনিষ্ঠ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পি কে শাহির মেয়ে উর্বশী শাহিকেও প্রায় ৮৭ হাজার বর্গফুট জমি দিয়েছে বিআইডিএ। মিনারেল ওয়াটারের কারখানা তৈরির জন্য জেডিইউ সাংসদ জগদীশ শর্মার ছেলে রাহুল শর্মাকেও হাজিপুরের শিল্পতালুকে জমি দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল, ফারবিশগঞ্জের বিতর্কিত জমি বণ্টন। যে জমিতে রাস্তা তৈরি নিয়ে মাসখানেক আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এক শিশু-সহ চার জনের মৃত্যু হয়, শিল্প দফতরের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ওই জমিটি রয়েছে বিজেপি-র বিধান পরিষদ সদস্য অশোক অগ্রবালের ছেলের নামে। জমিটি অশোকের ছেলেকে বেআইনি ভাবে পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত প্রায় ছ’বছর ধরে বিহারে ক্ষমতায় রয়েছেন নীতীশ কুমার। এর মধ্যে এটাই সরাসরি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির অভিযোগ। স্বাভাবিক ভাবেই আজ বিধানসভায় সরকারকে চাপে ফেলতে শোরগোল তোলেন বিরোধী দলের বিধায়কেরা। আরজেডি-র পরিষদীয় দলের নেতা এবং প্রধান বিরোধী দলের নেতা আব্দুল বারি সিদ্দিকি বলেছেন, “নীতীশ কুমারের আসল রূপ বেরিয়ে পড়েছে। উনি যদি এখনও ‘মিস্টার ক্লিন’ থাকতে চান, তবে এখনই এ বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করুন।” বিধানসভার বাইরেও সরব হয়েছেন বিরোধীরা। লোকজনশক্তি পার্টির নেতা রামবিলাস পাসোয়ান নীতীশের পদত্যাগ এবং পুরো ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন।
জমি প্রাপকরা অবশ্য অবৈধ ভাবে জমি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন। যে টিভি চ্যানেল প্রথম এই ‘জমি কেলেঙ্কারি’র খবর প্রচার করে, তাদের পরভিন ও আফজল আমানুল্লার তরফে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রী পরভিনের দাবি, “নিয়ম মেনেই সরকার জমি বণ্টন করেছে। মন্ত্রীর আত্মীয় হলে কেউ কি শিল্প স্থাপনের জন্য আবেদন করতে পারেন না?” |
|
|
|
|
|