|
|
|
|
টোকেনে বেসামাল মেট্রো চালু রাখল টিকিটও |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
তাড়াহুড়ো করে টোকেন চালু করার খেসারত দিতে হচ্ছে মেট্রো-কর্তৃপক্ষকে। চূড়ান্ত হয়রান হচ্ছেন যাত্রীরাও। নতুন ব্যবস্থা চালু হওয়ার পরে কিছু স্টেশনে কাগজের টিকিট তুলে দেওয়া হয়। অন্যান্য স্টেশনে দু’রকম ব্যবস্থাই চালু ছিল। কিন্তু টোকেন খোয়া যাওয়ার আর্থিক ক্ষতি এবং নতুন ব্যবস্থায় ক্রমেই বাড়তে থাকা যাত্রী-ভোগান্তি এড়াতে আপাতত আগের মতোই প্রত্যেকটি স্টেশনে টোকেনের সঙ্গে ফের কাগজের টিকিটও চালু করেছে মেট্রো। নতুন ব্যবস্থার এমনই বেহাল দশা যে, কোথাও কোথাও বন্ধই করে দিতে হয়েছে টোকেন দেওয়া।
প্রায় সব স্টেশনেই টোকেন দেওয়া হচ্ছে একটি বা দু’টি কাউন্টারে। ফলে ব্যস্ত সময়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে নাজেহাল হচ্ছেন যাত্রীরা। দীর্ঘক্ষণেও কাউন্টার অবধি পৌঁছতে না-পারায় পরপর ট্রেন ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। গন্তব্যে পৌঁছেও টোকেন ফেলার যন্ত্র ঠিকমতো কাজ না করায় আর এক দফা দেরি। এর পাশাপাশি, টোকেন কাটা যাচ্ছে শুধু একটি যাত্রার জন্য। সব মিলিয়ে নতুন ব্যবস্থায় এই বাড়তি ভোগান্তি নিয়ে যাত্রীরা মাঝেমধ্যেই ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন। |
|
অন্য দিকে, টোকেন চালু হতে না-হতেই পুরনো স্মার্ট কার্ডের রিচার্জ, মাল্টিরাইড টিকিট দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বিভিন্ন স্টেশনে। মেট্রো-কর্তৃপক্ষ ১২ রাইডের টিকিট চালু রাখার কথা জানালেও বেশির ভাগ স্টেশনেই বেশ কিছু দিন তা মেলেনি। ১২ রাইডের কাগজের টিকিট কাটতে গিয়ে কাউন্টারের কর্মীদের সঙ্গে রীতিমতো ঝামেলা করতে হয়েছে বলেও অভিযোগ অনেকেরই। চন্দ্রা ভট্টাচার্য নামে এক নিত্যযাত্রী বলেন, “১২ রাইডের টিকিট চাইতে ওরা সাফ বলে দিলেন, ‘নিয়ে কী করবেন’। এ দিকে, সে দিনই কাগজে বেরিয়েছে ওই টিকিট এখনও দিচ্ছে মেট্রো। একদফা ঝামেলার পরে সে কথা বলতেই টিকিট মিলল।” অলোক বসু নামে আর এক যাত্রীর অভিযোগ, দু’টি স্টেশনের কাউন্টার থেকে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ১২ রাইড টিকিট শেষ। তৃতীয় বার চেষ্টা করে শেষমেশ তিনি ওই টিকিট কাটতে পারেন।
টোকেন ব্যবস্থায় স্টেশনগুলিতে যাত্রীদের ভিড় আটকে থাকায় এবং তাঁদের নিত্য ভোগান্তি ও ক্ষোভের জেরে অগত্যা ফের পুরনো টিকিট চালু করার কথা ঘোষণা করেছেন কর্তৃপক্ষ। বেশ কিছু স্টেশনে অবশ্য টোকেন দেওয়া বন্ধ করে কাগজের টিকিট চালু হয়েছে। আজ, বুধবার থেকে ফের এক দিনের যাওয়া-আসার (রিটার্ন) টিকিট দেওয়াও শুরু হবে। পরে নতুুন ব্যবস্থা ঠিকঠাক চালু হলে কাগজের টিকিট পুরো তুলে দেওয়া হবে বলে জানান মেট্রোর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রত্যুষ ঘোষ।
মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন ব্যবস্থা শুরুর দিনে স্টেশনগুলিতে মোট ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টোকেন ছেড়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ১০ দিনের মধ্যেই হাজার পাঁচেক টোকেন খোয়া গিয়েছে। এক-একটি টোকেন তৈরির খরচ প্রায় ২০ টাকা। ফলে ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে মেট্রোর। আর্থিক ক্ষতি এড়াতে তাই স্টেশনগুলিতে যাত্রীদের উদ্দেশে ঘোষণাও করা হচ্ছে, যাতে তাঁরা ভুলবশত টোকেন নিয়ে চলে না যান।
অন্য দিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ কবি সুভাষ থেকে একটি ট্রেন ছাড়তে গিয়ে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। ত্রুটি সারিয়ে পাঁচ মিনিট পরে ট্রেনটিকে টালিগঞ্জে নিয়ে গেলে তাতে ফের যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এর পরে সেটি আর চালানো যায়নি। যাত্রী নামিয়ে ট্রেন কারশেডে পাঠানো হয়। পরবর্তী গাড়ি পেতে যাত্রীদের ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। |
|
|
|
|
|