চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব নিয়েই উত্তর দিনাজপুরের একমাত্র সরকারি শিল্প রায়গঞ্জের স্পিনিং মিলের পুনরুজ্জীবন ব্যাপারে উদ্যোগী হলেন কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত। সম্প্রতি রাজ্যের সেচ, বস্ত্র, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া মোহিতবাবুকে স্পিনিং মিলের চেয়ারম্যান পদের দায়িত্ব দেন। মঙ্গলবার মোহিতবাবু স্পিনিং মিল চত্বরে বৃক্ষরোপণ কর্মসুচিতে যোগ দেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন গোয়ালপোখরের কংগ্রেস বিধায়ক গোলাম রব্বানি, জেলা পরিষদের শিল্প ও বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ পূর্ণেন্দু দে-সহ জেলা প্রশাসন ও স্পিনিং মিলের কমর্ীর্-আধিকারিকেরা। স্পিনিং মিলের কর্মী-আধিকারিকেরা মোহিতবাবুর কাছে পুনরুজ্জীবনের দাবি জানান। মোহিতবাবু বলেন, “পূর্বতন রাজ্য সরকারের গাফিলতির জেরে স্পিনিং মিলের উৎপাদন প্রায় বন্ধের মুখে। মিলের কয়েকশো কর্মী নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না। টাকা বকেয়া থাকায় সরবরাহকারী সংস্থা মিলে সুতো পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী মানসবাবুর সঙ্গে কথা বলেছি। খুব শীঘ্রই নতুন রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপে মিলের উৎপাদন স্বাভাবিক হবে।” প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মী-আধিকারিক মিলিয়ে স্পিনিং মেলে বর্তমানে ৭০০ জন কর্মরত রয়েছেন। সেখানে তুলো থেকে সুতো তৈরির কাজ হয়। উৎপাদন ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকাকালীন মিলে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৭ হাজার কেজি সুতো তৈরি হত। |
রাজ্য সরকারের মাধ্যমে সেই সুতো বিক্রি করে কর্মী-আধিকারিকদের বেতন দেওয়ার পাশাপাশি তুলোর দাম মেটানো হত। লাভের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা পড়ত। মহারাষ্ট্র ও পূর্ব মেদিনীপুরের দুটি তুলো সরবরাহকীরা সংস্থা মিল কর্তৃপক্ষের কাছে বর্তমানে তুলোর দাম বাবদ প্রায় ৭ কোটি টাকা পাবেন। দীর্ঘদিন ধরে পূর্বতন রাজ্য সরকার মিলের কর্মী-আধিকারিকদের বেতন দিতে গিয়ে সরবরাহকারী সংস্থাগুলিকে তুলোর দাম না মেটানোয় গত জানুয়ারি মাস থেকে মিলে তুলো পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে ওই দুই সংস্থা। তুলোর অভাবে সেই থেকে মিলের উৎপাদন প্রায় বন্ধের মুখে। মিলের কর্মী-আধিকারিকেরা এখনও পর্যন্ত জুন মাসের বেতন পাননি। মিলের বেশির ভাগ মেশিন ও যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে গিয়েছে। বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর মোহিতবাবু মিলের পুনরাজ্জীবনের লক্ষ্যে উদ্যোগী হন। তিনি মিলের কর্মী-আধিকারিকদের সঙ্গে একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। সম্প্রতি মোহিতবাবুর নেতৃত্বে কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল মিল পরিদর্শন করে সমস্যার কথা রাজ্য সরকারকে জানায়। এর পরই মোহিতবাবুকে মিলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়ে মিলের পুনরুজ্জীবনের আশ্বাস দেন মানসবাবু। স্পিনিং মিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সম্পাদক অনিল সরকার বলেন, “মিলের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মীরা আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন। মিল ও কর্মীদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মিলটিকে বাঁচাতে আমরা মোহিতবাবুর দ্বারস্থ হয়েছি।” |