|
|
|
|
দোষারোপের গর্তে খোদ ইসিএল |
ফের ধস পরাশকোলে |
নিজস্ব সংবাদদাতা• অন্ডাল |
ফের ধস অন্ডালের পরাশকোলে। সোমবার রাতে প্রায় তিন ফুট চওড়া জমি বসে গিয়ে গর্ত তৈরি হয়েছে পরাশকোলের ২ নম্বর কলোনি এলাকায়। শনিবার সন্ধ্যায় ও সোমবার ভোরে গ্রামের যেখানে ছাই আলগা হয়ে ধস নামে, তার প্রায় আধ কিলোমিটার দূরেই এই ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার সন্ধ্যায় পরাশকোলে ধস ভরাটে ব্যবহার করা ছাই আলগা হয়ে তলিয়ে যান সন্তান-সহ দুই বাবা। রবিবার সকালে তাঁদের দেহ উদ্ধার হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দুর্ঘটনাস্থল থেকে ফুট দশেক দূরে ফের ছাই ধসে গর্ত হয়। এলাকার কয়েকটি বাড়িতে ফাটলও দেখা দেয়। মঙ্গলবার ভোরে পরাশকোল ২ নম্বর কলোনি এলাকায় জমি ধসে তৈরি হওয়া একটি গর্ত নজরে পড়ে গ্রামবাসীর। এলাকায় পরপর এমন ঘটনায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা পুনর্বাসনের দাবিতে সরব হয়েছেন।
এ দিন যেখানে ধস নামে তার অদূরেই রয়েছে খনিকর্মী আবাসন। ওই আবাসনের বাসিন্দা শান্তি দেবী জানান, সোমবার রাতে তাঁরা একটি আওয়াজ শুনতে পান। মঙ্গলবার ভোরে দেখেন, আবাসন থেকে খানিকটা দূরে গর্ত তৈরি হয়ছে। আর এক খনিকর্মী যোগিন্দর পণ্ডিত জানান, রাতের পালির কাজ করে ভোরে বাড়ি ফেরেন। তখনই মাটি বসে গর্তের ঘটনা নজরে আসে। |
|
গর্ত ছোট, বিপদ ছোট নয়। মঙ্গলবার আচমকাই ফের মাটি ধসে গেল অন্ডালের পরাশকোল এলাকায়। নিজস্ব চিত্র। |
তবে এই গর্ত তৈরি হওয়া নিয়ে ইসিএল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। অন্ডালের কাজোড়া এরিয়ার চিফ জেনারেল ম্যানেজার রাধিকারঞ্জন কিশোর জানান, বহু দিন আগে ওই এলাকায় ভূগর্ভস্থ খনি ছিল। যেখানে গর্ত হয়েছে, সেই জায়গায় ভূগর্ভের হাওয়া বাইরে বের করে দেওয়ার জন্য ফ্যান-ঘর ছিল। হাওয়া চলাচলের জন্য ওখানে যে গর্তটি ছিল, অনেক দিন আগেই তা ভরাট করা হয়। কোনও কারণে সেখানকার মাটি খানিকটা বসে গিয়েছে। তাঁর দাবি, “এটা ঠিক ধস বলা যায় না। এ নিয়ে আতঙ্কেরও কিছু নেই।”
তবে ইসিএলের আধিকারিকের দাবি মানতে নারাজ স্থানীয় বাসিন্দা ও রাজনৈতিক দলগুলি। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তথা সিপিআই নেত্রী মঞ্জু বসু দাবি করেন, ওই এলাকায় অবৈধ খনি ছিল। ইসিএল দায়সারা ভরাট করেছিল। তার জেরেই আবার ধস নেমেছে। মঞ্জুদেবীর আরও দাবি, “পরাশকোলে শনিবার ও সোমবার যেমন ঘটেছে, এখানেও যে কোনও সময়ে তার পুনরাবৃত্তি হতে পারে। নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে ইসিএল এখন ফ্যান-ঘরের গল্প ফাঁদেছে।” তিনি বলেন, “পরপর এমন ঘটনায় জনরোষ যে কতটা বাড়ছে, তা ইসিএল কর্তৃপক্ষ আঁচ করতে পারছেন না। জনপদের নিরাপত্তার দায়িত্ব ইসিএল এবং প্রশাসন এড়িয়ে যেতে পারে না।” খনি কর্মী আবাসনের কয়েক জন বাসিন্দাও বলেন, “আমরা আতঙ্কিত। কর্তৃপক্ষ আমাদের অন্যত্র বসবাসের ব্যবস্থা করুক।”
তৃণমূলের অন্ডাল ব্লক সভাপতি কাঞ্চন মিত্র বলেন, “আমরা ইসিএলের সঙ্গে সমস্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চাই। ভূগর্ভে কোথায় কী পরিস্থিতি রয়েছে, খতিয়ে দেখুক ইসিএল। তা না হলে আমরা আন্দোলনে নামব।” |
|
|
|
|
|