|
|
|
|
গ্রেফতার একদা ঘনিষ্ঠ ৩ অনুগামী |
বিধায়কের উপরে বন্দুক নিয়ে হামলা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মালদহ |
একদা তাঁরই এক ঘনিষ্ঠ অনুগামীর বিরুদ্ধে ইংরেজবাজার পুরসভার কংগ্রেসি চেয়ারম্যান বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর উপর হামলার চেষ্টার অভিযোগ উঠল । সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ পুরসভার গেটের সামনেই ওই অনুগামী দলবল নিয়ে রিভলভার উঁচিয়ে পুর চেয়ারম্যানের দিকে ধেয়ে যায়। দেহরক্ষী ঝাঁপিয়ে পড়ে হামলাকীদের নিরস্ত করেন। পরে লাগোয়া এলাকার কংগ্রেস কর্মীদের গণপ্রহারে গুরুতর জখম তিন জনকে মালদহ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ধৃতদের নাম মেঘনাথ বিশ্বাস, সোমনাথ বিশ্বাস এবং ভাস্কর। মেঘনাথ ও সোমনাথ দুই ভাই। ধৃতদের কাছ থেকে পুলিশ দুটি গুলি ভর্তি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে। পুলিশ সুপার ভূবন মন্ডল বলেন, “পুর চেয়ারম্যানের উপর হামলার ঘটনায় তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের থেকে গুলি ভর্তি দুটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। কেন দুষ্কৃতীরা পুর চেয়ারম্যানের উপরে হামলা করে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” এদিন বেলা ১১টা নাগাদ বাড়ি থেকে বার হয়ে পুর চেয়ারম্যান আদালতে যান। সেখান থেকে কালীতলায় দলের পার্টি অফিস হয়ে হেঁটে পুরসভায় আসছিলেন। পুর চেয়ারম্যান বলেন, “দোতালার সিড়ির সামনে মেঘনাথ কয়েক জন অপরিচিত যুবককে নিয়ে আমায় ঘিরে ধরে। আমি রাস্তা ছেড়ে সরে দাঁড়াতে বললে, কোমর থেকে রিভলবার বার করে আমায় মারতে আসে। আমার দেহরক্ষী ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্ষা করে।” পুর চেয়ারম্যানের উপরে হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকার কয়েকশো কংগ্রেস কর্মী ছুটে আসেন। দুই দুষ্কৃতীকে ছিনিয়ে নিয়ে শুরু হয় গণপ্রহার। পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। ইতিমধ্যে হাসপাতাল চত্বর থেকে আরও এক দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলেন বিধায়কের অনুগামীরা। তাকেও মারধর করা হয়। পুলিশ ওই দুষ্কৃতীকেও উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করে। পুলিশ জানায়, মেঘনাথ কংগ্রেস কর্মী ছিলেন। পুর চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। কয়েক মাস আগে পুর চেয়ারম্যান উদ্যোগী হয়ে পুরসভার একটি পে টয়লেট চালানোর দায়িত্ব দেন মেঘনাথকে। টাকা পয়সা ঠিকমতো জমা না-দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কয়েক বছর আগে শহরের বুড়াবুড়ি তলায় এক সিটু নেতা খুনের ঘটনায় ধৃত দুই ভাই মেঘনাদ ও সোমনাথ বিশ্বাসের সঙ্গে কৃষ্ণেন্দুবাবুও অভিযুক্ত হন। সেই খুনের মামলা চলছে। ওই সুলভ শৌচাগার থেকে মেঘনাথকে সরিয়ে দেওয়ার পরেই পুর চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি তাঁরা তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন বলে অভিযোগ। ১৫ জুলাই মেঘনাথ পুরসভায় হামলা করতে ঢুকেছিল বলে কৃষ্ণেন্দুবাবুর অভিযোগ। সিসিটিভিকে মেঘনাথের পুরসভায় ঢোকার ছবি দেখে কৃষ্ণেন্দুবাবু মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে খবর দেন। পুলিশ দেখে সে দিন মেঘনাথ পালিয়ে যায় বলে দাবি করেছেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। পুর চেয়ারম্যান বলেন, “অনেকদিন আগে ওঁরা কংগ্রেসের কর্মী ছিল। ওদের কংগ্রেস থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।” এই হামলার পিছনে মেঘনাথ ছাড়াও আরও কেউ রয়েছে বলে সন্দেহ করছেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। তিনি বলেন, “দেহরক্ষী সময়মতো আমাকে বাঁচাতে না ঝাঁপালে দুষ্কৃতীরা আমায় গুলি করে মেরে ফেলত। আমার আশঙ্কা ধৃত দুষ্কৃতীদের পিছনে থাকা আসল কালপ্রিট অন্য কেউ। তাকে পুলিশ খুঁজে বের করুক।” |
|
|
|
|
|