কংগ্রেস-তৃণমূল সংঘর্ষ কলেজে
ংগ্রেস এবং তৃণমূলের বহিরাগত কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় সোমবার রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বহরমপুর কলেজ চত্বর। এদিন কলেজে ভূগোল অনার্সের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা এবং প্রথম বর্ষের জেনারেল কোর্সে ভর্তি প্রক্রিয়া চলছিল। সেই সময়ে দু’পক্ষের কর্মী-সমর্থকেরাই লাঠি-রড হাতে মারমুখী হয়ে ওঠে। যদিও ওই ঘটনায় পরীক্ষা বা ভর্তি প্রক্রিয়া কোনও ভাবে ব্যাহত হয়নি। পরে খবর পেয়ে বহরমপুর থানার পুলিশের বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠি উঁচিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ওই ঘটনায় থানায় অবশ্য কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। বহরমপুর থানার আইসি প্রমোদরঞ্জন বর্মণ বলেন, “বহিরাগত কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এদিন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ওই ঘটনায় কোনও পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি। কেউ গ্রেফতারও হয়নি।”
এদিন সকাল ১১টার সময় কলেজের ছাত্র পরিষদ সমর্থকদের ঢুকতে না দেওয়াকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোলের সূত্রপাত বলে অভিযোগ। দলের কর্মীদের কলেজে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না খবর পেয়ে জেলা মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী মৌসুমী বেগম কলেজ চত্বরে পৌঁছন। দু’পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধস্তাধস্তি থেকে মারপিট শুরু হয়ে যায়। গণ্ডগোলের খবর পেয়ে তত ক্ষণে কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে ছাত্রপরিষদের কর্মী-সমর্থকরাও বহরমপুর কলেজ চত্বরে হাজির হয়। তারাও ওই ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এই অবস্থায় আইসি-র নেতৃত্বে বহরমপুর থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী কলেজ চত্বরে পৌঁছে লাঠি উঁচিয়ে বহিরাগতদের তাড়া করে। পুলিশের ভয়ে পাঁচিল টপকে দু-পক্ষের কর্মী-সমর্থকরা তখন কেউ ওয়াইএমএ মাঠের দিকে, কেউ আবার দমকল দফতরের দিকে ছুটে পালায়।
তৃণমূল ছাত্র নেতা পার্থ পালের অভিযোগ, “এদিন কলেজে গণ্ডগোলের কোনও পরিবেশ ছিল না। শান্তিপূর্ণ ভাবে কলেজে ভর্তি চলছিল। আচমকা কংগ্রেসের মৌসুমী বেগম বহিরাগতদের নিয়ে এসে কলেজের ভেতরে ঢুকে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের মারধর শুরু করে গণ্ডগোলের পরিস্থিতি তৈরি করে। মারের হাত থেকে বাঁচতে আমাদের কর্মী-সমর্থকরা তখন প্রতিরোধ করতে বাধ্য হয়েছে।” মৌসুমী বেগম বলেন, “ছাত্রপরিষদ সমর্থকদের কলেজে ঢুকতে দেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। এ জন্য তৃণমূলের লোকজন গত কয়েক দিন থেকেই বহিরাগতদের নিয়ে এসে কলেজের গেটের সামনে পাহারা দিচ্ছে। ছাত্রপরিষদের সমর্থক কোনও কলেজ ছাত্রকে তারা কলেজে ঢুকতে দিচ্ছে না। মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছে তারা। এদিনও ওই ঘটনা ঘটলে আমরা তার প্রতিবাদ জানিয়েছি।”
বহিরাগতদের সংঘর্ষে কলেজ চত্বর অশান্ত হয়ে উঠলে ভর্তি হতে আসা প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও যেমন আতঙ্ক তৈরি হয়, তেমনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন কলেজ শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। ভগবানগোলা থেকে ভর্তি হতে আসা মহম্মদ আখরুজ্জামান বলেন, “কলেজে ভর্তি হতে এসে প্রথম দিনই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হলো। আতঙ্কে আমরা কলেজের ক্লাশরুমে লুকিয়ে পড়ি। এতে কলেজের পড়াশোনার পরিবেশই নষ্ট হচ্ছে।”
বহরমপুর কমার্স কলেজে বহিরাগতদের থামাতে লাঠি চালাতে হল পুলিশকে।
কলেজ অধ্যক্ষ সমরেশ মণ্ডল বলেন, “ওই সংঘর্ষের ঘটনায় আমাদের কলেজের কোনও ছাত্র জড়িত ছিল না। যা হয়েছে কলেজের বাইরে এবং বহিরাগতদের মধ্যে গণ্ডগোল হয়েছে বলে শুনেছি। পরে পুলিশ এসে অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই ঘটনায় কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া বা ভূগোল অনার্সে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা ছিল। যদিও তা কোনও ভাবে ব্যাহত হয়নি। তবে এর ফলে কলেজের পড়াশোনার পরিবেশ থাকছে না। অবিলম্বে পরিস্থিতি শান্ত না হলে কলেজ অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
এই অবস্থায় কলেজের গণ্ডগোল ঠেকাতে বিভিন্ন কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিয়ে আগামী ২০ জুলাই জেলা প্রশাসনের তরফে বৈঠক ডাকা হয়েছে।

ক্লাস পিছোল পাঁচ দিন
প্রশাসনিক কারণে ক্লাশ শুরু ৫ দিন পিছিয়ে দিয়েছে বহরমপুর কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজ অধ্যক্ষ সমরেশ মণ্ডল বলেন, “প্রশাসনিক কারণে কলেজের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তিনটি বর্ষেরই ছাত্রছাত্রীদের ক্লাশ শুরু হবে আগামী ২৫ জুলাই থেকে ওই ক্লাশ শুরু হবে। আগে ঠিক ছিল ক্লাস শুরু হবে ২০ জুলাই।”
First Page Murshidabad Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.