|
|
|
|
নিকাশি বেহাল, চারপাশে আবর্জনা কান্দি হাসপাতালে |
নিজস্ব সংবাদদাতা• কান্দি |
নিকাশি নর্দমাগুলি দীর্ঘ দিন সংস্কার না-হওয়ায় আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। দূষিত জল জমে থাকছে।
নাম-না-জানা বহু আগাছার ঝোপ-জঙ্গল তৈরি হয়েছে চারপাশে। জমা জলে মশাদের আঁতুর ঘর তৈরি হয়েছে।
এমন দুর্গন্ধ উঠছে যে, সুস্থ ভাবে বিশ্রাম নিতে হিমশিম খেতে হয় ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা রোগীর আত্মীয়দের। ওই ঝোপঝাড়ে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেছে বিষাক্ত পোকামাকড়।
দিনের বেলা ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগ গবাদি পশুদের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে উঠেছে।
স্বাগত কান্দি মহকুমা হাসপাতালে।
২৫০ শয্যার এই মহকুমা হাসপাতালে খড়গ্রাম, বড়ঞা, কান্দি, ভরতপুর-১ ও ২ নম্বর মোট পাঁচটি ব্লক ছাড়াও বীরভূম, বধর্মান জেলারও একটা অংশের বাসিন্দারা এই হাসপাতালের উপর নির্ভর করেন। অথচ এই হাসপাতালে অন্তর্বিভাগ যতখানি দূষণমুক্ত ঠিক সমপরিমাণ দূষিত পরিবেশ ওই হাসপাতালের পারিপার্শ্বিক এলাকা। সব কিছু জানার পরেও সমস্যা সমাধানের কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ। হাসপাতালে চিকিৎসারত কয়েক জন রোগীর আত্মীয় বিকাশ দাস বলেন, “হাসপাতালের ভিতরে তবুও কিছুটা পরিষ্কার আছে। কিন্তু বাইরেটা আবর্জনায় ছয়লাপ হয়ে আছে।” হামিদ শেখ বলেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেন ব্যবস্থা নেয় না বুঝতে পারছি না। অথচ হাসপাতালে লেখা আছে, পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন। ও সব লেখার কোনও মানে হয় না।”
হাসপাতালের সুপার মৃগাঙ্গমৌলি কর বলেন, “হাসপাতালের বাইরে আবর্জনা একটু আছে। তবে আমরা পরিষ্কার করার চেষ্টায় আছি। পুরসভার সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।” যদিও ওই হাসপাতালের চত্বর দূষণ মুক্ত করার জন্য কেউ উদ্যোগী হয় না বলে অভিযোগ এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির। কান্দির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা জানান, এক সময় তাঁরা লাগাতার আন্দোলন করেছিলেন। কিন্তু কিছুই হয়নি। এলাকার অন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও উদ্যোগী হয়ে হাসপাতালের আবর্জনা পরিষ্কার করেছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও দিনই ওই কাজ করেনি।
কান্দির জেমো নরেন্দ্র নারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ড. সূর্যেন্দু দে বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের সুস্বাস্থ্যের জন্য দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার প্রয়োজন বলে পড়িয়ে থাকি। পরিবেশ পরিচিতি বলে একটা পাঠ্য বই আছে। কিন্তু হাসপাতালের পরিবেশ দেখলে মনে হয়, আমরা ছাত্রছাত্রীদের কী পড়াচ্ছি? উদ্যোগের অভাব থাকার জন্য এমন বেহাল পরিবেশ।” কান্দি পুরসভার পুরপ্রধান গৌতম রায় বলেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে হাসপাতালে যাতে দূষণ মুক্ত পরিবেশ ফেরানো যায়, সেই ব্যবস্থা নেওয়ায় উদ্যোগী হচ্ছি। যে কোনও উপায়ে সেটা ফিরিয়ে আনাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।” কান্দি মহকুমা হাসপাতালের দুরাবস্থার কথা স্বীকার করেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৈয়দ শাহাজান। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরগুলিতে পরিষ্কার রাখতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের বৈঠক হবে। সেখানে বিষয়টি জানাব।” |
|
|
 |
|
|