|
|
|
|
বাঁকুড়া মেডিক্যাল |
কর্মবিরতির ফাঁকে দিঘায় কয়েক জন জুনিয়র ডাক্তার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বাঁকুড়া |
কর্মবিরতির প্রথম দিনেই জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে নিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তা সত্ত্বেও তাঁরা ৬০ ঘণ্টা কর্মবিরতি করলেন। সেই ফাঁকে জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ আবার দিঘা থেকেও বেড়িয়ে এলেন। ঘটনাটি বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। কর্মবিরতির ‘সুযোগ নিয়ে’ কিছু জুনিয়র ডাক্তারদের এই বেড়াতে যাওয়ার ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তো বটেই, চিকিৎসক ও কর্মচারীদের একাংশও বিরক্ত। ক্ষুব্ধ, হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরাও।
হাসপাতালের সুপার পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে এক রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে গোলমালের পরে নিরাপত্তার দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি পালন করেন। শুক্রবারই আমরা ওঁদের দাবি মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু কাজে না এসে ওঁদের একাংশ দিঘায় বেড়াতে যান। শহরের বাজারেও অনেককে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। এটা মোটেই বরদাস্ত করা যায় না। শনিবার রাতেই আমি ওঁদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য বলি।” তিনি জানান, রবিবার দুপুর থেকে জুনিয়র ডাক্তারেরা কাজে যোগ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ অপারেশন থিয়েটারের সামনে এক জুনিয়র ডাক্তারের সঙ্গে বচসা বাধে রোগীর আত্মীয়দের। জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে তাঁদের মারপিটও হয়। এর পরেই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পুলিশ মোতায়েন করা, ওয়ার্ডের ভিতরে রোগীর আত্মীয়দের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা এবং হাসপাতাল চত্বরে থাকা ফাঁড়িতে পুলিশকর্মীর সংখ্যা বাড়ানোর দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি শুরু করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামাল দিতে সেই রাতেই সিনিয়র চিকিৎসকদের ডেকে এনে রোগী দেখার ব্যবস্থা করেন।
বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মনোজ চৌধুরী বলেন, “শুক্রবার জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনার পর সে দিনই জরুরি বিভাগে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ফাঁড়িটির শক্তি বৃদ্ধি করাও হবে। এক জনের বেশি রোগীর আত্মীয় যাতে ওয়ার্ডের ভিতরে ঢুকতে না পারেন, সে ব্যবস্থা চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানানো হয়। তার পরেও ওরা সেদিন কর্মবরতি প্রত্যাহার করেনি।” তিনি জানান, হাউসস্টাফ, ইনটার্ন ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েটের চিকিৎসক-সহ ২৩৯ জন কর্মবিরতিতে গিয়েছিলেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এই সুযোগে জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ শুক্রবারই দিঘায় বেড়াতে চলে যান। কয়েক জন বাড়িও চলে যান।
এই খবর ছড়িয়ে পড়ায় সিনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাঁরা জুনিয়র ডাক্তারদের ফোন করে দিঘা থেকে অবিলম্বে ফিরে আসতে বলেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে শনিবার সন্ধ্যায় কয়েক জন জুনিয়র ডাক্তার হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁদের দিঘায় বেড়াতে যাওয়া সহকর্মীদের সত্ত্বর ফিরে আসার জন্য খবর দিতে বলেন হাসপাতাল সুপার। বাঁকুড়ার তৃণমূল বিধায়ক কাশীনাথ মিশ্র বলেন, “জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনটাই অন্যায়। তার উপরে কর্মবিরতি চলাকালীন যাঁরা দিঘায় বেড়াতে গিয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় কি না, সেজন্য অধ্যক্ষ ও সুপারকে বলা হবে।” চিকিৎসকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টরসের সভাপতি হিমাদ্রি পাল বলেন, “ছাত্রাবস্থায় আমরা আন্দোলন করার আগে কলেজ কর্তৃপক্ষকে আগাম জানিয়ে আন্দোলনে যেতাম। এরা তো সেসব করেনি। দিঘায় গিয়ে থাকলে খুব ভুল কাজ করেছে।” এ ব্যাপারে জুনিয়র ডাক্তারদের মতামত জানা যায়নি। |
|
|
 |
|
|