|
|
|
|
বৃষ্টিতে রাস্তা বেহাল তেহট্ট মহকুমা জুড়ে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • করিমপুর |
ঘুম থেকে উঠে স্কুলে যাওয়ার কথা ভাবতেই আঁতকে উঠেছিল ছোট বিট্টু। চোখ খুলে মাকে একটাই প্রশ্ন করেছিল, “ওই রাস্তা দিয়ে যাব কী করে? পা তো কাদায় ডুবে যাবে!” উপায় নেই। ওই রাস্তা দিয়েই গ্রামের সকলকে বাজার, স্কুল, হাসপাতালে যেতে হয়। বন্ধুদের সঙ্গে তাকেও হাঁটু কাদা পেরিয়ে যেতে হয়েছিল স্কুলে।
করিমপুর ১ ও ২ ব্লকের অনেক রাস্তায় দিনকয় আগের বৃষ্টির জন্য ব্যাপক কাদা। সেখান দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাওয়া তো দূরঅস্ত, পায়ে হেঁটে রাস্তা পেরোতে হিমশিম খাচ্ছেন গ্রামের মানুষ। কোথাও আবার মোরাম ভেঙে গোটা রাস্তা খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। তার উপর রয়েছে জমা জল আর কাদা। সীমান্ত লাগোয়া তেহট্ট মহকুমার বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা জানান, বছরের বেশিরভাগ সময়ে রাস্তার চেহারা এমনই থাকে। বর্ষায় তা ভয়াবহ আকার নেয়। এই সময়ে ওই সমস্ত রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে যাতায়াত করাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
করিমপুর-২ ব্লকের সেনপাড়া, পিপুলখোলা পূর্ব দোগাছি বা ঘিয়াঘাট থেকে ধোড়াদহ পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই খারাপ। পিপুলখোলা গ্রামের তাজলুর হালসানা বলেন, “রাস্তায় মোরাম পড়ার পর শেষ কবে সেটি সংস্কার হয়েছিল তা গ্রামের অনেকেরই মনে নেই। অথচ স্কুল, বাজার বা হাসপাতালে যেতে হলে এই রাস্তাই ভরসা। সোমবার রাস্তার বেহাল দশার কথা ব্লক প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।” করিমপুর-১ ব্লকের করিমপুর-২ পঞ্চায়েতের কলাবেড়িয়া গ্রামের রাস্তাটির অবস্থাও খুব খারাপ। সেখানের বাসিন্দাদেরও একই অবস্থা। করিমপুর-২ পঞ্চায়েতের প্রধান বিজেপির সুভাষ মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। বিষয়টি প্রশাসনে জানিয়েছি। শীঘ্রই রাস্তার কাজ হবে। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকেও এলাকার বেশ কয়েকটি রাস্তা সংস্কার হচ্ছে।” একই সমস্যা থানারপাড়া এবং তেহট্টের বাউর, সাটিখালি, বার্নিয়া, গোপীনাথপুর, রাধানগরের বাসিন্দাদের। থানারপাড়ার পণ্ডিতপুর থেকে পাড়দিয়া ঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি বেহাল। অথচ বহরমপুর যাওয়ার জন্য এই রাস্তাটিই ব্যবহার করেন গ্রামের লোক। করিমপুর-২ ব্লক কংগ্রেসের নেতা শান্তনু সিংহরায় বলেন, “রাস্তা বেহাল হওয়ায় ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্ষায় সমস্যাটা আরও বেড়েছে।” পোতারপাড়া থেকে পলসণ্ডা পর্যন্ত ৪-৫ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থাও তথৈবচ।
গোটা ব্যাপারে উদ্বিগ্ন তেহট্ট মহকুমার স্বাস্থ্য কর্তারা। মহকুমার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সঞ্জয় মণ্ডলের কথায়, “বর্ষার পর গ্রামের রাস্তাগুলির যা অবস্থা তাতে তো গাড়ি যাতায়াত করতে পারে না। এ জন্য প্রসূতি, সর্পদষ্টদের সমস্যায় পড়তে হয়। রোগীরা ঠিক সময়ে হাসপাতালে পৌছতে না পারলে রাস্তায় অঘটন ঘটতে পারে। রাস্তা সংস্কার হওয়াটা দরকার।” তেহট্ট মহকুমাশাসক অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল বলেন, “প্রতিটি পঞ্চায়েত প্রধানকে বলা হয়েছে এলাকার কোথায় কোন রাস্তা খারাপ বা কি কি কাজ করতে হবে তার একটা তালিকা তৈরি করে মহকুমা ও জেলা প্রশাসনে পাঠাতে। তা দেখে টাকা অনুমোদন করে কাজ শুরু হবে। কিন্তু এ জন্য পঞ্চায়েত প্রধানদের উদ্যোগী হতে হবে।” |
|
|
 |
|
|