|
|
|
|
লর্ডসে বল পড়ার আগেই শুরু হয়ে গেল ‘যুদ্ধ’ |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
লর্ডস টেস্ট শুরু হওয়ার আগেই ভারত-ইংল্যান্ড মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল! আর সেই মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে একশোতম সেঞ্চুরির বিরল কীর্তির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সচিন তেন্ডুলকরও এসে পড়লেন।
এক দিকে প্রস্তুতি ম্যাচের ব্যাটিং বিপর্যয়কে উড়িয়ে দিয়ে ভিভিএস লক্ষ্মণ বলে দিলেন, তাঁদের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানেরা জানেন আন্তর্জাতিক স্তরে কী ভাবে মানিয়ে নিতে হয়। প্রথম টেস্ট শুরু হওয়ার আগে খুব বেশি প্রস্তুতি পাওয়া গেল না বলেও উদ্বিগ্ন নন লক্ষ্মণ। “এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যা ঠাসা সূচি তাতে অনেক সময় প্রস্তুতি ম্যাচ পাওয়া যায় না। ওয়েস্ট ইন্ডিজেই তো আমরা টেস্ট সিরিজে খেলতে নামলাম কোনও প্রস্তুতি ম্যাচ ছাড়াই। লর্ডসে নিশ্চয়ই আমরা ভাল প্র্যাক্টিস সেশন পাব আর আমি আত্মবিশ্বাসী তাতেই আমরা ভাল খেলব।”
অন্য দিকে অ্যান্ড্রু স্ট্রস জানিয়ে দিলেন, ক্রিকেটার সচিন তেন্ডুলকরের প্রতি যতই তাঁদের শ্রদ্ধা থাকুক, সেই শ্রদ্ধার ছিটেফোঁটা মাঠের মধ্যে দেখা যাবে না। মাঠের মধ্যে তাঁরা সচিনের একশোতম সেঞ্চুরির যাত্রাপথকে কাঁটায় ভরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। “কোনও সন্দেহ নেই, ক্রিকেটে সচিন যে সব সাফল্য পেয়েছে তার জন্য ওঁর সর্বোচ্চ প্রশংসা প্রাপ্য। সেই কারণে মাঠের মধ্যে সচিনকে আউট করার জন্য আমরা আরও বেশি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকব। আমাদের বোলাররা এটাকে দুর্দান্ত একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখবে,” বলেছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক স্ট্রস। যিনি নিজে কি না সচিনের খুব বড় ভক্ত। কিন্তু সেই সব ব্যক্তিগত ভক্তি-টক্তি এক বার মাঠে নেমে পড়লে আর থাকবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন স্ট্রস। “আমি স্লেজিং শব্দটা পছন্দ করি না। তবে এটুকু বলে দিতে পারি যে, বাইশ গজে ভারতের সব ব্যাটসম্যানের জীবন যতটা কঠিন করে তোলা যায় তার সব রকম ব্যবস্থা আমার বোলাররা করবে।”
স্ট্রস মনে করেন, সচিন তাঁর একশোতম সেঞ্চুরি নিয়ে হইচই থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন। আর চেষ্টা করেও হয়তো সব সময় নিজেকে সরিয়ে নিতে পারবেন না। স্ট্রসের প্রধান অস্ত্র জেমস অ্যান্ডারসনও বলে দিয়েছেন, একশোতম সেঞ্চুরির উপলক্ষ সচিনের ফোকাস নষ্ট করে দেবে। তাঁর অধিনায়কের মতো অ্যান্ডারসনও মানছেন একশোতম সেঞ্চুরি নিয়ে বাজনার প্রভাব সচিন তাঁর উপর সহজে পড়তে দেবেন না। “কিন্তু ক্রিকেটে আজগুবি ঘটনা মাঝেমাঝেই দেখা যায়। কয়েক দিন আগে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজে দীনেশ চান্দিমল যেমন সিঙ্গলস না নিয়ে শুধু বাউন্ডারি মেরে গেল নিজে সেঞ্চুরি করবে বলে। লর্ডসের ঐতিহ্য, পরিবেশ, সেখানে শেষ বার খেলতে নামার মতো আবেগ মিলিয়ে অনেক কিছুই ঘটে যেতে পারে।”
লক্ষ্মণ আবার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন এবং ভারতের বর্তমান কোচ ডানকান ফ্লেচারের। “আমরা ভাগ্যবান ফ্লেচারের মতো কোচ পেয়েছি। উনি খুবই অভিজ্ঞ। আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজে ওঁর সঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি এবং আমি খুবই প্রভাবিত। আমার মনে হয়েছে ফ্লেচারের থেকে অনেক কিছু শেখার আছে,” বলে দিচ্ছেন লক্ষ্মণ। সঙ্গে যোগ করছেন, “ব্যাটিং টেকনিক নিয়ে ফ্লেচারের সঙ্গে আমার অনেক কথা হয়েছে। এবং বুঝতে দেরি হয়নি যে, ওর ক্রিকেটজ্ঞান কতটা গভীর।” ধোনিদের ইংল্যান্ড সফরকে বলা হচ্ছে, এক নম্বর হওয়ার পর থেকে সবথেকে কঠিন সফর। কিন্তু লক্ষ্মণ মনে করছেন, তাঁদের নতুন করে কিছু প্রমাণ করার নেই। “আমরা ব্যাপারটা ও ভাবে দেখছি না যে, প্রমাণ করতে হবে আমরা এক নম্বর। র্যাঙ্কিংয়ের চেয়ে আমরা প্রত্যেকটা ম্যাচ জেতার দিকে বেশি নজর দিতে চাই।” গ্যারি কার্স্টেনের উত্তরসূরিকে নিয়ে লক্ষ্মণের উচ্ছ্বাস থামছে না, “লর্ডস টেস্ট কোচ হিসেবে ফ্লেচারের একশোতম টেস্ট হতে যাচ্ছে। উনিই বিশ্বের প্রথম কোচ যিনি একশো টেস্টের মাইলস্টোন পেরোতে যাচ্ছেন। আমার মনে হয় এটা একটা দুর্দান্ত প্রাপ্তি।” |
|
|
 |
|
|