মারাদোনাকে ফেরানোর দাবি, বাতিস্তা দায়িত্ব ছাড়তে রাজি নন
তিরিক্ত সময় যখন শেষ হল তখন আর্জেন্তিনা কোচ সের্জিও বাতিস্তা চোখ বুজে মুখটা আকাশের দিকে তুললেন। হতাশার বাহ্যিক রূপ। ১২০ মিনিটের দৌড়োদৌড়ি শেষে এ বার ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিতে হবে শেষ চারে যাওয়ার লড়াই।
টাইব্রেকারে হেরে যাওয়ার পরে ভেঙে পড়া কার্লোস তেভেজের মাথায় সান্ত্বনার হাত দিলেন মেসি। ও দিকে তখন ফোরলানকে কাঁধে তুলে নিয়েছেন উরুগুয়ের ফুটবলাররা। অন্য দিকে ম্যাচের সেরা উরুগুয়ে গোলকিপার নেস্তর ফার্নান্দো মুসলেরা মিকলকে নিয়ে নাচানাচি চলছে। গ্যালারিতে আর্জেন্তিনীয়দের বিশ্বাস হচ্ছে না, তাঁদের কোপা আমেরিকা শেষ। এবং শেষ আর্জেন্তিনাজাত এক গোলকিপারের জন্যই। মুসলেরার জন্ম বুয়েনস আইরেসে। এত দিন খেলতেন রোমের লাৎজিওতে। গত মাসে সই করেছেন তুরস্কের গালাতাসারেতে।
আর্জেন্তিনা ঘরের মাঠে কোপা আমেরিকায় এই প্রথম সেমিফাইনাল যেতে পারল না। নিজের দেশে ১৯৮৭-তে মারাদোনার দলের চতুর্থ হওয়াই সব থেকে খারাপ পারফরম্যান্স ছিল এত দিন। এ বার মেসিরা আর্জেন্তিনাকে শেষ চারে নিয়ে যেতে পারলেন না। জোর গুঞ্জন, এ বার কি বাতিস্তার চাকরি যাবে?
আর্জেন্তিনার অস্ত যাওয়ার মুহূর্ত। উরুগুয়ে গোলকিপার মুসলেরা টাইব্রেকারে বাঁচাচ্ছেন তেভেজের কিক। -এএফপি
ক’দিন আগেই আলোচনা চলছিল, মারাদোনা জাতীয় দলের দায়িত্বে ফিরে আসতে পারেন। আর্জেন্তিনার হারের পরে অনেকে গ্যালারিতে মারাদোনার ছবি নিয়ে বিক্ষোভ জানান। মারাদোনাকে ফিরিয়ে আনার দাবি ওঠে। বাতিস্তা কিন্তু সাংবাদিক সম্মেলনে এসে জানিয়ে দিলেন, দায়িত্ব ছাড়ছেন না। বলেন, “কোচের পদ ছাড়ার কোনও চিন্তা আমার মাথায় নেই। পাঁচ-ছয় মাস আগে আমি কাজ শুরু করেছি। কোপা জেতার লক্ষ্য ছিল ঠিকই, তবে বৃহত্তর লক্ষ্য কিন্তু ২০১৪ বিশ্বকাপ।” এই হারকেও বড় করে দেখতে নারাজ বাতিস্তা। ম্যাচের পর বললেন, “আমি এই হারকে ব্যর্থতা বলব না। ব্যর্থতা বললে বেশিই বলা হবে। আমরা জেতার জন্যই খেলছিলাম। খেলেছিও ভাল।”
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারানোর আনন্দ গোপন রাখেননি দিয়েগো ফোরলান। টুইটারে ফোরলান লিখেছেন, “আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। গোটা উরুগুয়ে আজ আনন্দ করুক।” আর একটিতে লিখেছেন, “সেমিফাইনালে পৌঁছে গেলাম। উরুগুয়েবাসী হিসাবে গর্ব হচ্ছে।”
গত বিশ্বকাপের পর ফের বড় টুর্নামেন্টে গোল শূন্য মেসি। তবে তিনি পাশে পাচ্ছেন তাঁর কোচ ও বিপক্ষ কোচকে। বাতিস্তার কথায়, “প্রথম তিরিশ মিনিট তো মেসি অসাধারণ খেলেছেই, গোটা ম্যাচে ওর পারফরম্যান্স মোটেই খারাপ নয়।” জয়ী কোচ অস্কার তাবারেজের মুখেও মেসির প্রশংসা, “ও খুব ভাল খেলেছে। আমার টিম দশ জন হয়ে যাওয়ার পরেও নিজেদের পরিকল্পনা থেকে সরেনি। এটাই আমার কাছে খুব তৃপ্তির। মেসিকে খুব ভাল মার্কিং করা হয়েছে।”
মেসি, তেভেজ, হিগুয়াইনরা কথা বলার মেজাজে ছিলেন না। আর্জেন্তিনার ডিফেন্ডার জাবালেতা মনে করেন, ম্যাচটার নিষ্পত্তি হওয়া উচিত ছিল নির্ধারিত সময়েই। “বিরতির ঠিক আগে থেকে ওরা দশ জনে খেলছিল। এই সুযোগ নিয়ে আমাদের জেতা উচিত ছিল।” জানেত্তির কথায়, “সব কিছু ঠিকঠাক করার পরও কোপা থেকে বিদায় নেওয়া খুব হতাশাজনক। ১২০ মিনিট আমরা ভালই খেলেছিলাম। কিন্তু আর একটা গোল করতে পারলাম না।” ৩৮ মিনিটে উরুগুয়ের গোলদাতা দিয়েগো পেরেজ দু’বার হলুদ কার্ডের পর লাল কার্ড দেখেন। আর্জেন্তিনাও অবশ্য দশ জন হয়ে গিয়েছিল। মাসচেরানো ৮৬ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে বেরিয়ে যাওয়ায়। এখানেই নিজের দলকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন লুই সুয়ারেজ। বলেছেন, “বেশির ভাগ সময়টাই আমাদের দশ জনে খেলতে হয়েছে কিন্তু আমরা মাঠে সবটুকু দিয়েছি। এখন আমাদের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গিয়েছে।”
উরুগুয়ে ম্যাচটাকে কতটা গুরুত্ব দিয়েছিল সেটা বোঝা যাচ্ছে অধিনায়ক দিয়েগো লুগানোর কথায়। “ম্যাচটা আমাদের কাছে ফাইনালের মতো ছিল। আমরা দারুণ ভাবে আক্রমণ করেছি। আর সবথেকে বড় প্রতিদ্বন্দ্বীকে কোপা থেকে ছিটকে দিতে পেরেছি।”
Previous Story Khela Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.