বিশ্বকাপের পর কোপাতেও কাপ নেই মেসির
তাবারেজের চালে অস্ত গেল আর্জেন্তিনা
উরুগুয়ে ১ (৫) (পেরেজ)
আর্জেন্তিনা ১ (৪) (হিগুয়াইন)
বিবার সকালটা আর্জেন্তিনা সমর্থকদের কাছে মোটেই আনন্দের নয়। আমি কিন্তু বেশ উপভোগ্য ফুটবলই দেখলাম মেসি বনাম ফোরলান লড়াইয়ে। বিশেষ করে যতক্ষণ দু’দলেই এগারো জন ফুটবলার খেলছিল।
উরুগুয়ে কোচ অস্কার তাবারেজের একটা ট্যাকটিক্যাল পরিবর্তনই কোপা আমেরিকা থেকে ছিটকে দিল আর্জেন্তিনাকে। বিরতির সাত মিনিট আগে দিয়েগো পেরেজ লাল কার্ড দেখে বেরিয়ে যায়। এর পরই তাবারেজ ছক পাল্টে ফেলেন। মিডফিল্ডকেও নামিয়ে আনেন ডিপ ডিফেন্সে। যাতে রক্ষণ আরও জমাট হয়ে গেল। ফরোয়ার্ডে একা থাকল শুধু সুয়ারেজ। ওই সময় মাঝমাঠ থেকে মেসি-দি’মারিয়াদের দৌড়গুলো বার বার আটকে যেতে থাকল লুগানো, কাসেরেস, গঞ্জালেসদের পায়ে।
একজন সর্তীর্থদের কাঁধে। ফোরলান।
তার মধ্যেও যে ক’বার মেসি-হিগুয়াইনরা রক্ষণ ভেঙে এগিয়ে গেল তত বারই বাধা হয়ে দাঁড়াল ফার্নান্দো মুসলেরা। উরুগুয়ের এই গোলকিপার যেন ভগবান হয়ে দেখা দিয়েছিল। টাই-ব্রেকারেও তেভেজের শট বাঁচিয়ে নায়ক হয়ে গেল ও-ই। ওয়ান-টু-ওয়ানেও কত বার যে মেসি, হিগুয়াইনের শট আটকাল! এত বার গোলের সামনে থেকে ফিরে আসতে হচ্ছিল বলে মেসিরা হতাশও হয়ে পড়ছিল। আর্জেন্তিনা উইং ব্যবহার করলেও, মাঝখান দিয়ে খুব বেশি ঢোকার চেষ্টা করতে দেখলাম না। আর্জেন্তিনার লক্ষ্য ছিল মেসি-দি’মারিয়া নির্ভর স্কিলফুল ফুটবল। আর উরুগুয়ের সম্বল ছিল কিছুতেই হার মানব না মনোভাব। টাই-ব্রেকারে উরুগুয়ের ফুটবলাররা যে রকম ঠান্ডা মাথায় পাঁচটা শট মারল তাতে আমি অবাক।
আর্জেন্তিনা-উরুগুয়ের ম্যাচ দেখার আগ্রহ ছিল দিয়েগো ফোরলান আর লিওনেল মেসিকে এক সঙ্গে মাঠে দেখতে পাব বলে। ভাগ্য ভাল, দু’জনের কেউই হতাশ করেনি। ফোরলান তো দু’জনের খেলা একা খেলতে পারে। অসম্ভব দম। পাসিং ভাল, সব রকম শট নিতে পারে। কর্নার, ফ্রি-কিক সব কিছুতেই সমান দক্ষ। তবে মেসির মতো বক্সের সামনে থেকে ড্রিবল করে ঢুকতে খুব বেশি দেখা যায় না। কিছুটা হলেও এই ম্যাচে ফোরলানের থেকে মেসিকেই এগিয়ে রাখব।
একজন মাটিতে। মেসি।
প্রথম আধ ঘণ্টার খেলা দেখে তো আমার মনে হয়েছিল আর্জেন্তিনা আরও গোল করবে। শেষ পর্যন্ত জিতেও যাবে। পাঁচ মিনিটে পেরেজের গোলে উরুগুয়ে এগিয়ে যাওয়ার ১২ মিনিট পরই গোল শোধ দিয়েছিল হিগুয়াইন। মেসির ফ্রি-কিকে মাথা ছুঁইয়ে। দুটো গোলই ভাল। দি’মারিয়া, মেসি, জাবালেতা আর গাগো বার বার পাস খেলতে খেলতে উঠে যাচ্ছিল। এই চার জনের মুভমেন্টটা হচ্ছিল পেন্ডুলামের মতো। এতে গোলের সুযোগও তৈরি হচ্ছিল। ৩৮ মিনিটে উরুগুয়ে দশ জন হয়ে গেছিল। আর্জেন্তিনা অধিনায়ক মাসচেরানো লাল কার্ড দেখল ৮৬ মিনিটে। মাঝখানে উরুগুয়ের দশ জনে খেলার সুবিধা নিতে পারল না মেসিরা।
আর্জেন্তিনার কোচ বাতিস্তার দুটো ভুলের কথাও বলতে হবে। প্রথম ভুল, মেসির সঙ্গে দি’মারিয়ার বোঝাপড়ায় যখন ব্যতিব্যস্ত উরুগুয়ের রক্ষণ, তখন ওকে তুলে নেওয়াটা উচিত হয়নি। ওর বদলি পাস্তোরে অতটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। আর দ্বিতীয় ভুল, এই ম্যাচে ঠিকঠাক ফর্মে না থাকা আগুয়েরোকে ৮৩ মিনিট পর্যন্ত মাঠে রেখে দেওয়া হল। ওই সময়ে তেভেজ নেমে সুবিধা করতে পারল না। তেভেজ নীচে নেমে খেলতে পারে। আরও বেশি সময় ও মাঠে থাকলে আক্রমণে ধার বাড়ত।
টাইব্রেকারে ব্যর্থ তেভেজ।
ব্রাজিল, আর্জেন্তিনা-র পর লাতিন আমেরিকার ফুটবলে সব থেকে বড় শক্তি উরুগুয়েই। সেমিফাইনালে পেরুর সামনে পড়ছে ওরা। অঘটন না ঘটলে ফোরলানদেরই ফাইনালে যাওয়া উচিত। পেরেজকে পরের ম্যাচে পাচ্ছে না উরুগুয়ে। তবে তাতে খুব একটা অসুবিধা হবে বলে মনে করছি না। একটা দল হিসাবে খেলার ক্ষমতা উরুগুয়ের যথেষ্ট আছে।

ছবি: এএফপি
First Page Khela Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.