তৃণমূলের কার্যালয়ে হামলায় অভিযুক্ত দিশম
কৃষিজমির মালিকানা নিয়ে বিবাদের জেরে সশস্ত্র মিছিল করে তৃণমূলের কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির সমর্থকদের বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হরিপালের বাহিরখণ্ড পঞ্চায়েতের নারায়ণপুর গ্রামে। থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল। এসডিপিও (চন্দননগর) তথাগত বসু বলেন, “পুলিশ অভিযোগ পেয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আইনমাফিক উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই গ্রামের বেশ কয়েক বিঘা জমিতে ‘অবৈধ’ দখলদার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দু’টি পক্ষের বিবাদ রয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, প্রায় তিন দশক আগে জমির মালিকদের গায়ের জোরে হঠিয়ে দিয়ে কয়েকজন গ্রামবাসী অবৈধ ভাবে সেখানে চাষ করতে শুরু করেন। তাতে মদত ছিল সিপিএমের। কয়েক জনকে বর্গাও দেওয়া হয়। এ নিয়ে ‘প্রকৃত’ কয়েক জন মালিক আদালতে মামলাও করেন।
তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে বিষয়টি নিয়ে ফের নাড়াচাড়া শুরু হয়। ‘প্রকৃত’ মালিকেরা জমি ফিরে পেতে কোমর বাঁধেন। তৃণমূল স্মারকলিপি দিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। তৃণমূল নেতাদের দাবি, পুলিশ তাঁদের জানায়, যে জমি নিয়ে বিতর্ক নেই এবং সেই সমস্ত কাগজপত্র যদি ঠিক থাকে, তা হলে ‘প্রকৃত’ মালিকেরা চাষ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ওই চাষিদের নিরাপত্তাও দেবে পুলিশ। রবিবার সকালে কয়েকজন ‘প্রকৃত’ মালিক ‘নিজেদের’ জমিতে চাষ করবেন বলে খবর ছড়ায়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এ দিন চাষ করতে নামেননি ওই ব্যক্তিরা। কিন্তু ‘জবরদখলকারী’দের পক্ষ নিয়ে দিশম পার্টি আসরে নামে বলে অভিযোগ।
এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ তারা তির-ধনুক, টাঙ্গি, বল্লম, হেঁসো নিয়ে গ্রামে মিছিল করে। অভিযোগ, শুধু মিছিল করাই নয়, গ্রামের তৃণমূল কার্যালয়ে চড়াও হয়। সেখানে ভাঙচুর চলে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সংবলিত ২১ জুলাইয়ের হোর্ডিং এবং পতাকা ছিঁড়ে ফেলা হয়। শীতল খাঁ নামে এক তৃণমূল সমর্থকের বাড়িতেও চড়াও হয় মিছিলকারীরা। পুলিশ আসার আগেই অবশ্য তারা ফিরে যায়।
পুলিশ পৌঁছলে গ্রামবাসীরা তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। শেষ পর্যন্ত ঘটনাস্থলেই তাঁরা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেন পুলিশ অফিসারদের হাতে। হরিপালের তৃণমূল নেতা সমীরণ মিত্র বলেন, “জমি যাঁদের তাঁরাই চাষ করতে পারবেন না, এটা হতে পারে না। পুলিশও এতে সম্মতি দিয়েছিল। দিশমের সঙ্গে সিপিএমের লোকেরা মিলে অযথাই তাণ্ডব করল।” সিপিএমের কারও নাম নামে অবশ্য পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। দিশমের কয়েক জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে। দিশমের হুগলি জেলা সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত হাঁসদার অবশ্য দাবি, “তৃণমূল মিথ্যা অভিযোগ করছে। গ্রামবাসী এবং আমাদের লোকজন মিছিল করেছেন ঠিকই, কিন্তু কোনও ভাঙচুর হয়নি।” লক্ষ্মীকান্তবাবুর কথায়, “যে গরিব লোকগুলো তিন দশক ধরে চাষ করে আসছেন, তাঁদের জোর করে তুলে দেওয়া হবে, এটা কেমন কথা? আমরা বলেছিলাম, আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে। কিন্তু তৃণমূল গা-জোয়ারি করাতেই গ্রামবাসীরা প্রতিরোধে নামেন।” ঘটনায় জড়িত থাকার কথা মানেনি সিপিএম। এ দিকে, ঘটনার পরে দু’পক্ষই পুলিশের দিকে আঙুল তুলেছে। সমীরণবাবু বলেন, “দিশম এবং সিপিএম যখন হামলা চালাচ্ছে, তখন পুলিশ এল না। এল ঘটনার ঘণ্টা দু’য়েক পরে।” লক্ষ্মীকান্তবাবুর দাবি, “আমরা আগেই পুলিশকে জমায়েতের কথা জানিয়েছিলাম। অথচ পুলিশ আসেনি। এই সুযোগে তৃণমূলের লোকেরা উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করে।” পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই তারা সেখানে যায়।
Previous Story South Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.