|
|
|
|
পশ্চিম খড়মপুরে জৈবগ্রাম তৈরি করতে উদ্যোগী হল কৃষি দফতর |
কেদারনাথ ভট্টাচার্য • মন্তেশ্বর |
চাষের কাজে রাসায়নিক সারের প্রয়োগ বেড়েই চলেছে। এই সারের মাত্রাতিরিক্ত প্রয়োগে নষ্ট হচ্ছে জমির উর্বরতা। ফলনও কমতে শুরু করেছে। চাষের কাজে জৈব প্রযুক্তির প্রসার বাড়াতে মন্তেশ্বরের পশ্চিম খড়মপুর গ্রামে জৈব গ্রাম তৈরিতে উদ্যোগী হল কৃষি দফতর। সম্প্রতি ৪০ জন কৃষককে নিয়ে একটি প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করে এই প্রকল্পের কাজও শুরু করে দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিম খড়মপুর গ্রামটিতে বহু বছর ধরে চাষিরা ঝিঙে, শসা, পটল, বেগুন-সহ নানা সব্জি চাষ করেন। ব্লক কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানেই মাত্রাতিরিক্ত হারে রাসায়নিক সারের প্রয়োগ করেন চাষিরা। এর জন্যই জৈব গ্রাম হিসাবে এই এলাকাকেই বেছে নিয়েছেন দফতরের বিশেষজ্ঞরা। প্রকল্পের জন্য ১০ হেক্টর কৃষি জমি নেওয়া হয়েছে। এই নির্দিষ্ট পরিমাণ জমির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ৪০ জন চাষি। সম্প্রতি গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রকল্পের নানা খুঁটিনাটি নিয়ে চাষিদের সঙ্গে কথা বলেন জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) শ্যামল দত্ত, সহ কৃষি অধিকর্তা (শস্য সুরক্ষা) সুপ্রিয় ঘটক, কালনা মহকুমা কৃষি আধিকারিক স্বপনকুমার মারিক, ব্লক কৃষি আধিকারিক রঙ্গন বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সাধন দাস ও কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রাজকুমার রায়। প্রকল্প রূপায়নের বিষয়ে চাষিদের সমস্যার কথাও শোনেন তাঁরা। |
 |
নিজস্ব চিত্র। |
ব্লক কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্পের একটি ধাপে রয়েছে প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা। অন্য ধাপে রয়েছে, চাষিদের জৈব সার, জৈব কীটনাশক ইত্যাদি বিলি করা। প্রশিক্ষণ ও সচেতনতার উদ্দেশে গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে আয়োজন করা হবে ২২টি প্রশিক্ষণ শিবির। এই শিবিরগুলিতে শুধু জেলার বিশেষজ্ঞরাই নন, বিধানচন্দ্র কৃষি বিদ্যালয় থেকেও বিশেষজ্ঞরা আসবেন। যাঁরা চাষিদের প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া ছাড়াও জৈব প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হাতে-কলমে শেখাবেন। এছাড়া জৈব প্রযুক্তি প্রয়োগে উৎপন্ন ফসল পাঠানো হবে বিধানচন্দ্র কৃষি বিদ্যালয়ের এগ্রিকালচার কেমিক্যালস বিভাগে। সেখানকার রির্পোটের সাহায্যে চাষিদের দেখানো হবে জৈব প্রযুক্তি প্রয়োগ করা কতটা নিরাপদ। জৈব গ্রাম তৈরির জন্য কৃষি দফতরের খরচ হবে এক লক্ষ টাকা। এর মধ্যে ৫৫ হাজার টাকা সচেতনতা ও প্রশিক্ষণের জন্য খরচ করা হবে। বাকি টাকা খরচ করা হবে জৈব উপকরণ কিনতে।
ব্লক কৃষি আধিকারিক রঙ্গন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এলাকায় জৈব প্রযুক্তি প্রসারের জন্যই এই উদ্যোগ।” তাঁর দাবি, “জৈব গ্রাম তৈরি করতে সফল হলেই এলাকায় রাসায়নিক সারের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার বন্ধ করা যাবে।” মহকুমা কৃষি আধিকারিক স্বপনকুমার মারিকের কথায়, “এ বার কালনা মহকুমায় শুধু পশ্চিম খড়মপুর গ্রামেই জৈব গ্রামের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। যে ৪০ জন চাষি প্রশিক্ষণ নিয়ে ফসল ফলাবেন, তাঁরাই এই নতুন পদ্ধতির কথা অন্যদের বোঝাবেন।”
কৃষি দফতরের জৈব গ্রাম তৈরির প্রকল্পে খুশি পশ্চিম খড়মপুরের চাষিরা। কালাচাঁদ দাস, তারক দাস, সুজিত দাসদের কথায়, “চাষাবাদ নিয়ে এমন উদ্যোগ এর আগে কখনও হয়নি। আমরা প্রশিক্ষণ নিয়ে তা সঠিক ভাবে প্রয়োগ করার চেষ্টা করব।” |
|
|
 |
|
|