|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
সমাপ্তিতেই খুন ‘অমর’ বঙ্কিম |
বইপোকা |
‘সেই অনন্ত গঙ্গাপ্রবাহমধ্যে, বসন্তবায়ুবিক্ষিপ্ত বীচিমালায় আন্দোলিত হইতে হইতে কপালকুণ্ডলা ও নবকুমার কোথায় গেল?’ বঙ্কিম এই প্রশ্নে শেষ করিয়াছিলেন তাঁহার উপন্যাস কপালকুণ্ডলা। উত্তর মিলিল ‘অমর চিত্র কথা’য়। ইহার কপাল কুণ্ডলা : দ্য ফিয়ারলেস চাইল্ড অব দ্য ফরেস্ট-এর অন্তিমে কপালকুণ্ডলা নবকুমারকে বলিতেছে, ‘দ্য ফরেস্ট মেকস আস টেক লিভ অব আওয়ার সেন্সেস। লেটস গো অ্যাওয়ে ফ্রম হিয়ার কুইকলি।’ ইহার পর দেবরানি মিত্রর ‘স্ক্রিপ্ট’ যাহা লিখিতেছে তাহার মর্ম এই: ‘সকলই অরণ্যে শুরু হইয়াছিল এবং অরণ্যেই সমাপ্ত হইতে চলিয়াছে। আমরা জানি না শয়তান কাপালিক এবং মতিবিবির কী হইল। তাহারা অন্ধকারেই রহিল, নবকুমার ও কপালকুণ্ডলা আলোতে ফিরিয়া আসিল।’ অমর চিত্রকথার আলোচ্য সংখ্যাটি এইখানেই সমাপ্ত হইয়াছে। কিন্তু যে কথাটি অমর করিয়া রাখিয়া গিয়াছে এই অভূতপূর্ব চিত্রকথা তাহা হইল কাহিনিকে শিশুপাঠ্য করিতে গিয়া নীতিশিক্ষা এবং ভালমন্দ সম্পর্কে জ্ঞান দিবার প্রবণতাটি এখনও অমর। তাহার তাড়না এতটাই যে তাহার জন্য ধ্রুপদী সাহিত্যের পরিণতি বদলাইতেও দ্বিধা নাই। উদ্দেশ্যটি মহৎ, সন্দেহ নাই, কিন্তু প্রশ্ন হইল, ইহা কত দূর সঙ্গত? কপালকুণ্ডলা বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস, তাহার গল্পটুকু ছাঁকিয়া সরল করিয়া সরল ভাষায় বলা যাইতে পারে কিন্তু কাহিনিতে পরিবর্তন কখনও সমর্থনযোগ্য নহে। কারণ তাহা হইলে উহা আর বঙ্কিমচন্দ্রের থাকে না। যদি কাহিনি অপরিবর্তিত রাখিয়া তাহাকে কমিক্সায়িত করিতে কোনওরূপ বাধা থাকে তবে বরং তার কমিক্সায়ন মুলতুবিই থাকুক, বাংলা সাহিত্যে ‘ক্ল্যাসিক’ তো এখনও কম পড়ে নাই! |
|
|
|
|
|