মানভূমের ভাষা আন্দোলনের পুরোধা অতুলচন্দ্র ঘোষ এবং তাঁর স্ত্রী ‘মানভূম জননী’ লাবণ্যপ্রভাদেবীর যুগল মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হল পুরুলিয়া শহরে বিদ্যাসাগর পার্ক প্রাঙ্গণে। ১০ জুলাই যুগল মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী ও মানভূম ভাষা আন্দোলনের সৈনিক চিত্তভূষণ দাশগুপ্ত। সর্বত্যাগী অতুলচন্দ্র ঘোষ স্মৃতি রক্ষা কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, অতুলচন্দ্রবাবুর জন্ম বর্ধমানের খণ্ডঘোষে। তিনি বিশিষ্ট শিক্ষাব্রতী মাখনলাল ঘোষের সন্তান। শৈশবে পিতামাতাকে হারিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে মানুষ হন। ১৮৯৯ সালে পুরুলিয়া জিলা স্কুল থেকে এন্টান্স পরীক্ষায় পাস করে কলকাতায় বিদ্যাসাগর কলেজে (তৎকালীন মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন) ভর্তি হয়েছিলেন। সেখান থেকে বি এ পাস করে আইনি নিয়ে পড়াশানো করে ওকালতি শুরু করেন। কলকাতায় পড়ার সময়ে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মামা সুরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গনে ওঠে। ওই সময় বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের প্রাণপুরুষ সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ইন্ডিয়ান নেশন পত্রিকার সম্পাদক এন এন ঘোষ তাঁকে অনুপ্রাণিত করেন। পরে ওকালতি ছেড়ে ১৯২১ সালে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। আর তাঁর স্ত্রী লাবণ্যপ্রভাদেবী ভাষা আন্দোলন-সহ অন্যান্য আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে চার বার কারাবরণ করেছিলেন। পুরুলিয়া, হাজারিবাগ ও ভাগলপুর জেলে তাঁকে বন্দি রাখা হয়েছিল। ১৯৫৭ সালে পুরুলিয়া আসন থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। তাঁর সেবাকর্মের জন্য জেলার মানুষ তাঁকে ‘মানভূম জননী’ নামে ডানতেন।
|
ছৌনৃত্যের মাধ্যমে ‘বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক একটি নৃত্যনাট্য উপস্থাপন করলেন পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের শিল্পীরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিদ্যাপীঠের প্রেক্ষাগৃহে অরণ্য সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্পীদের এই উপস্থাপনা নজর কেড়েছে। পরিচালক সুনীল পরামানিক জানান, গাছকে দেবতাজ্ঞানে পুজো করা হয়। কিন্তু অসাধু ব্যক্তি মুনাফার লোভে গ্রামের কতিপয় মানুষের মধ্যে অর্থের লোভ সঞ্জার করে তাঁদের দিয়ে গাছ কাটাচ্ছেন। এই বিষয়টি ছৌনাচের মধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। একই অনুষ্ঠানে বেঁচে থাকায় বৃক্ষের গুরুত্ব ও ভূমিকা নিয়েও একটি সঙ্গীতালেখ্য পরিবেশন করেন রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের ছাত্ররা।
|
অঙ্কন, হস্তশিল্প, আবৃত্তি, নাচ প্রভৃতির মাধ্যমে সাঁইথিয়া শহরকে পাদ-প্রদীপের আলোয় তুলে ধরেন পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রদীপ হাওলাদার এবং তাঁর স্ত্রী মন্দিরাদেবী। ২৫ বছর ধরে ওই দম্পতি সাঁইথিয়ায় নিজের বাড়িতে আঁকা, হস্তশিল্প, আবৃত্তি, নাচ প্রভৃতি বিষয়ের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। প্রদীপবাবু অবশ্য জেলার অন্যত্রও অঙ্কন, হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ দেন। ওই দম্পতির ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত প্রায় চার হাজার ছাত্রছাত্রী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ওই দম্পতির কাছে। তবে অঙ্কন ও হস্তশিল্পের কাজের কোনও ডিগ্রি নেই প্রদীপবাবুদের। কোনও সরকারি বা বেসরকারি চাকরি করেন না তাঁরা। সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে চলে তাঁদের জীবন।
|
স্কুলে পড়ার সময় থেকেই নাটকের প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। কলেজে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে নাটক নিয়েই মেতে উঠেছিলেন। ৩৪ বছর আগে রামপুরহাটে ‘প্রবাহ নাট্যম’ নামে নাট্য সংস্থা গড়ে নাটক মঞ্চস্থ করেন প্রিয়ব্রত প্রামাণিক। নাট্য দলে কুশীলবদের সামর্থ দেখে এবং নাটক মঞ্চস্থ করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের কথা ভেবে নিজেই নাটক লিখতে শুরু করেন। তাঁর লেখা ৩৭টি একাঙ্ক ও ২টি পূর্ণাঙ্গ নাটক মঞ্চস্থ করে প্রবাহ নাট্যম। এর মধ্যে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সন্দীপন পাঠশালা’র নাট্যরূপ দিয়ে সবচেয়ে বেশি সমাদৃত হয়েছেন তিনি। ৪৯ জন কুশীলব নিয়ে তারাশঙ্করের শততম জন্মবার্ষিকীতে রামপুরহাটে মঞ্চস্থ হয়েছিল ‘সন্দীপন পাঠশালা’। তাঁর নাট্যদল ছাড়া, আরও কয়েকটি নাট্যদল প্রিয়ব্রতবাবুর নাটক মঞ্চস্থ করেছে। ৭টি নাটক গ্রুপ থিয়েটার পত্রিকায় মুদ্রিত হয়েছে।
|
রবীন্দ্রভারতীর কৃতী ছাত্র, সঙ্গীত শিল্পী সিদ্ধাথর্র্ প্রামাণিককে সম্বর্ধনা ও রবীন্দ্র সঙ্গীত চর্চা বিষয়ে একটি আলোচনা সভা সম্প্রতি আয়োজিত হল বিষ্ণুপুরে। উদয়ন লজের মিউজিক উইং এর উদ্যোক্তা। আলোচনা চক্রে লবীন্দ্র সঙ্গীত চর্চা বিষয়ে বক্তব্য রাখেন বিষ্ণুপুর ঘরানার উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পী জগন্নাথ দাশগুপ্ত।
মানবাজার গার্লস স্কুলে সম্প্রতি একটি সঙ্গীতানুষ্ঠান হয়েছে। স্থানীয় পত্রিকা কংসাবতী আয়োজিত অনুষ্ঠানে এলাকার শিল্পী-আলোচকরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে পত্রিকার সম্পাদকের জীবনী স্মরণ করা হয়।
সাহিত্য পত্রিকা ‘উজান’ প্রকাশিত হবে রবিবার। এই উপলক্ষে বড়জোড়া হাইস্কুলে আগামী নাট্য সংস্থা সেদিন স্বরচিত কবিতা পাঠ, আবৃত্তি, শ্রুতি নাটক ও সাহিত্য আলোচনার আয়োজন করেছে।
উল্টোরথ উপলক্ষে মানবাজারের নাট্য সংস্থা নিউশিল্পীমহলের বার্ষিক মহরৎ অনুষ্ঠান হয়েছে। |