|
|
|
|
|
|
|
মুখোমুখি... |
|
প্রেম জোছনায় |
পাওলি আর তাঁর হালফিলের পুরুষ বন্ধু, অভিনেতা বিক্রম। এঁরা সম্পর্কে বাঁধা পড়েছেন? ইন্ডাস্ট্রি তাই বলছে।
বিক্রম-পাওলির মুখে আধা স্বীকারোক্তি। তাঁদের সঙ্গে আড্ডা দিলেন দেবশ্রুতি রায়চৌধুরী |
পত্রিকা: পাওলি, চার দিকে প্রচুর দীর্ঘশ্বাস শুনতে পাচ্ছেন নিশ্চয়ই? পাওলি (প্রচণ্ড হাসতে হাসতে) কীসের?
পত্রিকা: এই আপনি আর সিঙ্গল নেই...
পাওলি: কে বলছে এ সব? আর তা ছাড়া আমার কাছে আমার কাজই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ।
পত্রিকা: কিন্তু কাজের বাইরেও তো একটা জীবন আছে আর সেই জীবনে এখন নাকি একটাই নাম বিক্রম?
পাওলি: (বিক্রমের দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে) আমরা পরস্পরের সঙ্গে খুব কমফর্টেবল এটুকু বলতে পারি। বাকি কে কী বলছে জানি না।
পত্রিকা: বিক্রম, পাওলির সঙ্গে আলাপ তো আপনি নিজে গিয়ে করেছিলেন?
বিক্রম: হ্যা। সাউথ সিটি মলে। হঠাৎই ওকে দেখতে পেয়ে মনে হয়েছিল, এত দিন ওর ছবি দেখেছি। ওর কাজ এত ভাল লেগেছে। এক বার গিয়ে ‘হাই’ বলে দেখিই না। এখন মনে হয়, ভাগ্যিস আলাপটা করেছিলাম!
পত্রিকা: তাই? এতটা গুরুত্বপূর্ণ একটা ঘটনা পাওলির সঙ্গে আপনার আলাপ হওয়াটা?
(পাওলি চোখ বড় করে কপট বিস্ময়ে হাসছেন তখন)
বিক্রম: অবশ্যই। এত ভাল অভিনেত্রী। অথচ এত ডাউন টু আর্থ। ওর সঙ্গে আলাপ হওয়ার পর আমি সিনেমা মাধ্যমটাকে ভালবাসতে শিখেছি। ওয়ার্ল্ড সিনেমা সম্পর্কে জেনেছি। বিখ্যাত ফরাসি অভিনেত্রী জুলিয়েট বিনোশে কে আগে আমি জানতামই না, ভাবতে পারেন?
পাওলি: (হেসে ফেলে) আর বিনোশে আমার সব থেকে প্রিয় অভিনেত্রী, ভাবুন! |
|
পত্রিকা: কিন্তু, সাউথ সিটির সেই ‘হাই’ এত দূর এগোল কী করে?
বিক্রম: প্ল্যান করে কিছু হয়নি। তার পর আমরা কয়েক বার মিট করলাম। কফি খেলাম। লং ড্রাইভে গেলাম। দেখলাম, আমাদের পছন্দগুলো খুব এক রকম। ওর সঙ্গে কথা বলতে আমার খুব ভাল লাগত।
পাওলি: হ্যাঁ, আমারও। ইন্ডাস্ট্রিতে আমার সে রকম কোনও বন্ধু নেই। বিক্রম সেই জায়গাটায় খুব তাড়াতাড়ি চলে এসেছে। আমাদের ওয়েভ লেন্থ খুব মেলে।
বিক্রম: হ্যা। আর পাওলির কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখছি। সেটাও আমার খুব ভাল লাগছে।
পাওলি: বিক্রমই কিন্তু আমাকে প্রথম ডিস্কে নিয়ে গেছে। তার আগে আমি কখনও ডিস্কে যাইনি। তাই (হাসতে হাসতে) শিখছি আমিও।
পত্রিকা: বিক্রম, অভিনয়ের ব্যাপারেও পাওলি নিশ্চয়ই আপনাকে অনেক সাহায্য করছেন? একসঙ্গে তিন-তিনটে ছবি করছেন দু’জনে...
বিক্রম: সে তো অবশ্যই। আমি তো এর আগে শুধু টেলিভিশন করেছি...
পত্রিকা: অর্থাৎ আপনার এর আগে কোনও ছবি করার অভিজ্ঞতা নেই। এখন হাতে একসঙ্গে তিনটে ছবি। তার মধ্যে ‘এলার চার অধ্যায়’-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ছবিও আছে। তাতে আপনি অতীন। এক সময় যে চরিত্রে শম্ভু মিত্র কলকাতা কাঁপিয়েছিলেন। লোকে তো বলছে, এই জন্যেই পাওলির সঙ্গে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে আপনাকে। পাওলিকে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকতে চাইছেন।
পাওলি: বিক্রম সে রকম মানুষই না।
বিক্রম: এখানে আমি একটু ডিটেলে বলি। প্রথমত, আমি সিনেমায় অভিনয় করব, এ রকম কোনও ভাবনা আমার ছিল না। সিরিয়ালেও খানিকটা হঠাৎই চলে এসেছি। তার পর পাওলির সঙ্গে আলাপের পর ওর সঙ্গে সময় কাটাতে ওর সেটে যেতাম মাঝেমধ্যে। আমাদের দু’জনকে একসঙ্গে কফি খেতে, আড্ডা মারতেও দেখেছেন অনেকে। সে রকম ভাবেই ‘আলোর ঠিকানা’র পরিচালক আমাদের দেখেন এবং ওঁর মনে হয়, আমাদের মধ্যে একটা কেমিস্ট্রি আছে। এর পর ‘আলোর ঠিকানা’র স্টিল দেখেন বাপ্পাদা। ওঁর মনে হয়, অতীন আর এলার মধ্যে যে প্যাশনটা দরকার সেটা আমরা ফোটাতে পারব।
পাওলি: বিক্রমের মধ্যে কিছু না থাকলে অতীনের মতো চরিত্রে ওকে নেওয়ার কথা বাপ্পাদা ভাবতেন না।
পত্রিকা: পাওলি, লোকে কিন্তু এটাও বলছে যে, আপনাদের সম্পর্কটাকে এ ভাবে হাইলাইট করছেন, কারণ এই তিনটে ছবি পরপর আসবে। আগে মুম্বইতে এমন সম্পর্কের ধুয়ো তুলে ছবির পাবলিসিটি করা হত, এ বার এখানেও শুরু হল...
পাওলি: আমি এ ভাবে আমার কাজকে কখনও দেখিনি। দেখবও না। কাজ ভাল করাটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আর সম্পর্ক নাকি অন্য কিছু এ সব নিয়ে মাথা ঘামানোর মতো সময় আমার নেই। আমি শুধু জানি, বিক্রমের সঙ্গে সময় কাটাতে আমার ভাল লাগে। আর আমরা একে অন্যের সঙ্গে খুব কমফর্টেব্ল।
বিক্রম: তা ছাড়া এই ধরনের অভিযোগের উত্তর দিয়ে নিজেদের ছোট করার কোনও মানেই হয় না।
(পাওলির স্মিত হাসি এবং তার পর ‘একটু আসছি’ বলে উঠে যাওয়া।)
|
|
পত্রিকা: বিক্রম, একটা কথা বলুন তো, আপনি কি পাওলিকে ভালবাসেন?
বিক্রম: (একটু বেসামাল। পরক্ষণেই সামলে নিয়ে) হ্যা। আই লাভ হার।
পত্রিকা: বলেছেন ওঁকে? মানে আপনারা একে অপরকে বলেছেন সে সব কথা?
বিক্রম: (লাজুক হেসে) না। আমরা একে অন্যকে চিনি তিন মাস ধরে। কখনও সে ভাবে কথাটা বলা হয়নি।
পত্রিকা: সে কী! আজকাল তো লোকে তিন মিনিটে কত কিছু করে ফেলছে, আর ঘন ঘন লং ড্রাইভে গিয়েও তিন মাসে ‘আই লাভ ইউ’ বলতে পারেননি?
বিক্রম: আমরা আসলে কোনও তাড়াহুড়ো করিনি। একে অপরকে চিনেছি ধীরে ধীরে। ‘আলোর ঠিকানা’র আউটডোরে নিউ দিঘা গিয়েছিলাম। একসঙ্গে অতটা সময় কাটানো এর আগে হয়নি। মনে হল, নতুন করে পাওলিকে চিনলাম সেখানে।
পত্রিকা: সেটা কী রকম চেনা?
বিক্রম: ও কাজের ব্যাপারে যতটা ম্যাচিওর, ব্যক্তিগত জীবনে ততটাই ছেলেমানুষ। আমি আবার ঠিক উল্টোটা। আমরা একে অপরকে তাই দারুণ কমপেনসেট করতে পারি বলে আমার ধারণা।
পত্রিকা: তার পর?
বিক্রম: ঠিক করেছি, আপনার এই ইন্টারভিউটা বেরোনোর আগে ওকে ফর্মালি প্রোপোজ করব। কোথাও নিয়ে গিয়ে।
পত্রিকা: পাওলির সঙ্গে বারবার বিখ্যাত অভিনেতা, পরিচালকদের নাম জড়িয়েছে। এ রকম এক জন নায়িকার সঙ্গে সম্পর্কের মানেটা বোঝেন নিশ্চয়ই?
বিক্রম: অবশ্যই। বুঝি বলেই পাওলিকে অনেকটা চেনা ও জানার পর সিদ্ধান্তটা নিয়েছি।
পত্রিকা: আপনি কি বলতে চাইছেন যে, আপনি কমিটমেন্টে বিশ্বাস করেন, ছুটকো ভাল
লাগায় নয়?
বিক্রম: একেবারেই তাই। আমি জীবনটাকে সে ভাবেই দেখি। আমার ধারণা পাওলিও।
(পাওলি কাজ সেরে ফিরে এলেন। আর বিক্রম উঠে গেলেন ‘আসছি’ বলে। যাওয়ার আগে এই প্রতিবেদকের দিকে তাকিয়ে বলে গেলেন, “যা যা বললাম ওকে বলে দেবেন না প্লিজ।” সে কথা শুনে পাওলির চোখে বিস্ময় আর ঠোঁটে প্রশ্রয়ের হাসি।)
পত্রিকা: পাওলি, বিক্রম যদি কাল প্রোপোজ করেন কী করবেন?
পাওলি: (চোখ কপালে তুলে, দু’হাতে মুখ চাপা দিয়ে হাসি শুরু)।
পত্রিকা: আরে হাসলে হবে? কী করবেন এ রকম একটা সিচুয়েশনে?
পাওলি: জানি না। আগে হোক সে রকম কিছু।
পত্রিকা: জানেন না কেন? আপনারা তো সারা ক্ষণ একসঙ্গে। সময় পেলেই লং ড্রাইভে দু’জনে...এ রকম লং ড্রাইভে আপনি অন্য সবার সঙ্গে যান না নিশ্চয়ই?
পাওলি: (হেসে ফেলে) আমাদের একটা ইকুয়েশন আছে মানছি। ফাঁকা সময় পেলে লং ড্রাইভে যেতে ভালবাসি, সেটাও ঠিক। কিন্তু আমি একাও লং ড্রাইভে যাই, সেটা জানেন তো?
পত্রিকা: বুঝলাম। কিন্তু এই যে পত্রিকার জন্য দু’জনে বিশেষ শু্যট করলেন, সেখানে তো নিছক ‘ভাল ইকুয়েশন’ ছাড়াও আরও অনেক কিছু দেখতে পেলাম মনে হল। এতটা ঘনিষ্ঠ ভাবে ছবি তো আর যার তার সঙ্গে তোলা যায় না!
পাওলি: (আবার হো হো করে হাসতে হাসতে) সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার দরকার কী! (এ বার সিরিয়াস হয়ে) তা ছাড়া আমি তো এক জন অভিনেত্রী। ফটো শু্যটে নিজের দু’শো ভাগ দেওয়াটাও তো আমার কাজ।
পত্রিকা: অর্থাৎ আপনি সাসপেন্স ভালবাসেন...
পাওলি: (আবার দম ফাটা হাসি) দেখুন যদি কিছু হওয়ার হয়, সেটা সময় বলবে। আমি এ সব নিয়ে বেশি কথা বলায়, খবরের কাগজে ইন্টারভিউ দেওয়ায় বিশ্বাসী নই। মুম্বইয়ে একটা কাজের কথা হচ্ছে। হয়তো বেশ কয়েক মাস কলকাতায় থাকব না...
পত্রিকা: লং ডিসট্যান্স সম্পর্ক নিয়ে অনিশ্চয়তা?
পাওলি: কোনও কিছু নিয়েই অনিশ্চয়তায় ভুগি না। শুধু এটা বলতে চাই, কাজ ছাড়া কিছু ভাবছি না। তবে হ্যাঁ, ব্যক্তিগত জীবনে ভাল কিছু হলে ভাল লাগবে।
পত্রিকা: প্যাট (শিলাদিত্য পত্রনবিশ) পর্বের অনেক দিন পর তা হলে একটা গভীর সম্পর্কের মুখে দাঁড়িয়ে আপনি?
পাওলি: জানি না...
পত্রিকা: এই মুহূর্তে যদি বিক্রমকে কিছু বলতে বলি, কী বলবেন?
পাওলি: (যে দরজা দিয়ে বিক্রম বেরিয়ে গেলেন সে দিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে) তুমি খুব ভাল। এ রকমই থেকো প্লিজ। পাল্টে যেয়ো না। আর তার থেকেও বড় কথা, ভাল সিনেমা দেখো, ভাল সিনেমার পক্ষে থেকো। ধন, পরিবর্তন’ চান মুখ্যমন্ত্রী। চান, মানুষের কাছে গিয়ে সিপিএম-এর কর্মীরা তাদের কথা শুনুন| চান, মানুষের উপরে দলের 'মাতব্বরী' বন্ধ হোক! |
ছবি: সোমনাথ রায়
মেক-আপ: অনিরুদ্ধ চাকলাদার স্টাইলিং: স্যান্ডি |
|
|
|
|
|