খেলা

কঠিন সাফল্য
জেলা স্তরে ব্যাডমিন্টনের পরিকাঠামো ঠিকমতো গড়ে ওঠেনি। শহরের দু’তিনটি ক্লাবের মধ্যেই আটকে আছে ব্যাডমিন্টন চর্চা। তবু এর মধ্যে হাওড়ায় সদ্য সমাপ্ত স্টেট র্যাঙ্কিং জুনিয়র ব্যাডমিন্টনে চ্যাম্পিয়ন হল এই জেলার মেয়ে অনন্যা টিগ্গা। নজর কেড়ে নিল এই জেলারই দুই খুদে প্রতিযোগী মণিদীপা দে ও দিশান্ত দেবনাথ।
ব্যাঁটরা ব্যায়াম সমিতির মিনি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বসেছিল এই রাজ্য স্তরের ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা। জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, দুই মেদিনীপুর, কলকাতা-সহ মোট ১৬টি জেলার ১৬১ জন প্রতিযোগী সাব জুনিয়র ও জুনিয়র বিভাগে অংশ নেয়। সাব জুনিয়রে অনূর্ধ্ব ১৩, অনূর্ধ্ব ১৫ এবং জুনিয়রে অনূর্ধ্ব ১৭ ও অনূর্ধ্ব ১৯ বিভাগে লড়াই হয়। বালক বিভাগে ১১০ জন ও বালিকা বিভাগে অংশ নেয় ৫১ জন প্রতিযোগী। হাওড়ার সাত জন প্রতিযোগীর মধ্যে চার জন বালক ও তিন জন বালিকা ছিল।
এ বারই প্রথম অনূর্ধ্ব ১৫ রাজ্য ব্যাডমিন্টনে খেলতে নেমেছিল অনন্যা। গত বছর পর্যন্ত সে ছিল অনূর্ধ্ব ১৩-র খেলোয়াড়। অনূর্ধ্ব ১৫-র ফাইনালে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল দক্ষিণ কলকাতার এষা দে। প্রথম সেটে পিছিয়ে পড়ে অনন্যা। প্রথম সেটটি ১৪-২১-এ জিতে নেয় এষা। কিন্তু এর পরে অনন্যা দুর্দান্ত ভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। বাকি দু’টি সেট ২২-২০ এবং ২৩-২১-এ জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। জয়ের পরে অনন্যা বলল, “প্রথম দিকে একটু নার্ভাস ছিলাম। পরের দিকে নিজেকে ফিরে পাই।” জুনিয়রে অনূর্ধ্ব ১৭ ও অনূর্ধ্ব ১৯ বিভাগেও খেলতে নেমেছিল সে। প্রথমটিতে সেমিফাইনাল এবং দ্বিতীয়টিতে কোয়ার্টার ফাইনালের বেশি এগতে পারেনি।
কেদারনাথ ইনস্টিটিউশনের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মণিদীপা দে ব্যাঁটরা ব্যায়াম সমিতিতে অনুশীলন করার পাশাপাশি খেলা শিখতে যায় দক্ষিণ কলকাতার রায়পুর ক্লাবে। অনূর্ধ্ব ১৩-র ফাইনালে উত্তর কলকাতার ইপ্সিতা সিংহের কাছে লড়াই করেও হেরে যায়। বেঙ্গালুরুতে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় খেলতে যাচ্ছে মণিদীপা। অনূর্ধ্ব ১৩ বালক বিভাগের ফাইনালে হেরে যায় হাওড়ার দিশান্ত দেবনাথ। হাওড়ার মেয়ে শেষাদ্রী সান্যাল পশ্চিম কলকাতার অনুরিয়া দাসের কাছে অনূর্ধ্ব ১৯-এর ফাইনালে হেরে যান। যদিও শেষাদ্রী খেলতে নেমেছিল উত্তর কলকাতার হয়ে।
পাঁচ দিনের এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ অম্বিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইনালে সফল প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র আয়োজক ক্লাবকে ব্যাডমিন্টন ও অন্যান্য খেলার উন্নয়নের জন্য কুড়ি হাজার টাকা অনুদান ঘোষণা করেন। ক্লাব সভাপতি দেবব্রত কুণ্ডু বলেন, “সাংসদ পাঁচ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ওই টাকা পেলে পরিকাঠামো উন্নয়ন সহজ হবে।”
প্রতিযোগিতায় এসে রাজ্য ব্যাডমিন্টন সংস্থার সচিব শেখর বিশ্বাস বলেন, “রাজ্যের ব্যাডমিন্টনের মান বাড়ানোর জন্য আমরা একটি স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছি। এ জন্য সম্প্রতি সল্টলেকে ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে ২৩ কাঠা জমি চাওয়া হয়েছে। ওই কমপ্লেক্সে চারটি কাঠের কোর্ট থাকবে। জেলার ছেলেমেয়েরা ভাল কোচের কাছে ট্রেনিং নিতে পারবে। সুলভে ক্লাবগুলিকে সরঞ্জাম দেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছে।”

ছবি: রণজিৎ নন্দী
Previous Story

Howrah

Next Item




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.