চিত্রকলা ও ভাস্কর্য ১...
বিশ্ব জুড়ে আলোড়িত হচ্ছে যে ‘অন্ধকার’
সোসাইটি অব কন্টেম্পোরারি আর্টিস্টস দলের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গত এক বছর ধরে তাঁরা নানা অনুষ্ঠান করছেন। সুবর্ণজয়ন্তী সমাপ্তি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হল সম্প্রতি বিড়লা অ্যাকাডেমিতে। এই প্রদর্শনীতে সোসাইটির ২০ জন সদস্যের কাজ ছাড়াও দেখানো হল কয়েক জন তরুণ শিল্পীর ছবি ও ভাস্কর্য। এ প্রদর্শনীতে প্রতিফলিত হল দৃশ্যকলার সাম্প্রতিকের পাশে ভবিষ্যতের ইঙ্গিতও।
সোসাইটির শিল্পীদের মধ্যে সুনীল দাসের দু’টি বড় ক্যানভাস দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এই শিল্পী কখনও এক জায়গায় থেমে থাকেন না। নিরন্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চলেন। এ বারের অ্যাক্রিলিকে আঁকা দু’টি বড় ক্যানভাসের শিরোনাম ‘ইন্টারসিটি’। প্রেক্ষাপটে তীব্র অন্ধকার। এই অন্ধকার নিয়েই তাঁর নিরীক্ষা। যে অন্ধকার এখন বিশ্ব জুড়ে আলোড়িত হচ্ছে। কিছু আসবাব শনাক্ত করা যায় ইতস্তত ছড়ানো। কিছু রেখা, বিন্দু-ভিন্ন বর্ণের। অজস্র রুপোর টাকা সেঁটে কিছু জ্যামিতিক আকার তৈরি করেছেন। পরিবৃত তমসায় এই বিত্তের একক সাম্প্রতিকের কিছু সংকেত নিয়ে আসে। এই কালচেতনাই ‘সোসাইটি’র ষাটের দশকের শিল্পীদের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
বিমূর্ততার নানা ধরন আমরা এ বারের প্রদর্শনীতে দেখতে পাই। ষাটের শিল্পীদের মধ্যে বি আর পানেসর, দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়, গণেশ হালুই, লালুপ্রসাদ সাউ উল্লেখযোগ্য। অবয়বের সঙ্গে নিরবয়বের টানাপোড়েনের ভিতর দিয়ে তাঁরা সময়ের সত্তাকে স্পর্শ করতে চেয়েছেন। সময়ের অন্তর্নিহিত সংঘাত প্রবল হয়ে উঠেছে আশির দশকের শিল্পী আদিত্য বসাকের দু’টি ক্যানভাসে। প্রদীপ মৈত্রের অসামান্য দু’টি জলরং সমুদ্র নিসর্গের অন্তর্লীন সঙ্গীতকে উদ্ভাসিত করেছে। ১৯৯০-এর দশকের দুই শিল্পী পার্থ দাশগুপ্ত ও অতনু ভট্টাচার্যের ছবি দেখলে বোঝা যায় পরিশুদ্ধ নিরবয়বের মধ্যে কেমন করে তাঁরা সঞ্চারিত করেছেন এই জটিল সময়ের তমসা।
শিল্পী: সুনীল দাস
ভাস্কর্যে নিরবয়বের প্রজ্ঞাদীপ্ত নিরীক্ষা রয়েছে বিমল কুণ্ডুর আলুলায়িত জড়িয়ে থাকা সরু তামার তারের রচনাটিতে। সুনীলকুমার দাস আয়তনময় জ্যামিতিকতার বিন্যাসে ব্রোঞ্জে-যে শূকরের প্রতিকূপ গড়েছেন-সন্তর্পণে তা জীবন সত্যেরই প্রতীক হয়ে ওঠে। অন্য দুই প্রবীণ ভাস্কর নিরঞ্জন প্রধান ও মানিক তালুকদার কাজ করেছেন তাঁদের সুপরিচিত আঙ্গিকে।
যেমন দেখা যায়, অন্যান্য শিল্পীদের ছবিতে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়, অতীন বসাক, মনোজ দত্ত, মনোজ মিত্র, সাধন চক্রবর্তী, সনৎ কর ও সুহাস রায়। পরিচিত প্রবাহের পাশে দু’ একটি মননদীপ্ত অন্বেষণ এ বারের প্রদর্শনীর বৈশিষ্ট্য।
এ রকম বর্তমানের পাশে ভবিষ্যতের যে প্রতিশ্রুতি দেখি তা যথেষ্টই আশাব্যঞ্জক। শিবরাম দাসের সিরামিকস ভাস্কর্যগুলি দক্ষতা ও জীবনবোধের কল্পনাদীপ্ত সমাহার। দীপাঞ্জন বাগচির ছাপচিত্রে কুকুরের রূপায়ণ পূর্ববর্তী প্রজন্মের প্রতিফলন হলেও মননদীপ্ত রচনা। গণেশচন্দ্র দাসের অ্যাক্রিলিক ও শাম্বা বিশ্বাসের টেম্পেরায় রয়েছে নতুন আঙ্গিকের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এ ছাড়াও ভাস্কর্য করেছেন রণজিৎ বোর।
প্রদীপকুমারের কাঠ খোদাইয়ের দক্ষতা অনস্বীকার্য। জেমস খামলিয়ান ও আয়হুনবুলোরিন-এর ভাস্কর্য নতুন চেতনায় দীপ্ত। মহম্মদ নূর-এর অ্যাক্রিলিকের ক্যানভাসের আয়তনময়তায় মানবিক বিপর্যয়ের ইঙ্গিত থাকে। মুগ্ধ করেছেন শর্মিলী সরকার তাঁর রচনাগুলিতে।
তপনকুমার মহারাণার ভাস্কর্যটি স্বকীয়তায় ভাস্বর। কৌশিক দাসের অ্যাক্রিলিকের ক্যানভাস ‘লেডি অ্যান্ড দ্য ক্রাউন’ বলিষ্ঠ রচনা। কৌশিক পাল ও অরুণোদয় ঘোষ বিশ্বাসের ক্যানভাস পরিচিত রূপরীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ।
ভাস্কর চৌধুরীর আর্টে কোনও নতুন ভাবনার ইঙ্গিত নেই। ইন্দ্রজিৎ রায়ের ছবিগুলি দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সঞ্জয়কুমার পাত্র-র বিমূর্ত ছবিগুলি অনেকটা সংশয়দীর্ণ।
Previous Item Alochona Next Item


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.