ভাঙন গঙ্গা, ফুলহারেও
তিপথ পাল্টে পাড় ভেঙে কয়েক বছর থেকে এগিয়েছে গঙ্গা। কিন্তু সেচ দফতর ও প্রশাসনের তরফে ওই ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিপন্ন হতে বসেছে মালদহের রতুয়া-১ ব্লকের মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের জঞ্জালিটোলা গ্রাম। আবার একই ভাবে ফুলহার ভাঙন রোধের কাজ না-হওয়ায় বিপর্যস্ত হয়েছে বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের রুহিমারি ও রামায়ণপুর এলাকা। গত বছর গঙ্গার ভাঙনে দেড়শোটি বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার পরে এবার ফের শুরু হয়েছে ভাঙন। ইতিমধ্যে জঞ্জালিটোলা এলাকার ৪০০ পরিবার অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। রুহিমারি, রামায়ণপুর এলাকায় গত বছর ৭১টি বাড়ি ফুলহারে তলিয়েছিল। এ বছরও গত দু’সপ্তাহে ৩৩টি বাড়ি নদীতে তলিয়েছে। কিন্তু গঙ্গা ও ফুলহারের ভাঙনে ওই এলাকাগুলি বিপর্যস্ত হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। বিধানসভায় তিনি জানান, সেচ দফতর ও প্রশাসন ওই এলাকার ভাঙন প্রতিরোধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এর পরেই সেচকর্তারা নড়েচড়ে বসেন। তবে নদীর ওপারে দিয়ারা এলাকায় ফুলহারের ভাঙন রোধে প্রকল্প তৈরি হলেও গঙ্গা ভাঙন রোধ যে জটিল তা সেচ দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে। সম্প্রতি সেচকর্তারা ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখেন। জানা গিয়েছে, এখানে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করতে উপগ্রহ চিত্র জরুরি। সেই প্রস্তুতিও সেচ দফতরে শুরু হয়েছে। রতুয়ার বিধায়ক বলেন, “জঞ্জালিটোলা গ্রাম নিশ্চিহ্ন হওয়ার মুখে। চারশোটি পরিবার ভাঙনের আতঙ্কে ঘরদোর সরিয়ে নিলেও তাঁদের বসতভিটে নদীতে তলিয়েছে। রুহিমারি, রামায়ণপুরে ৩৩টি বাড়ি নদীতে ভেসে গিয়েছে। দুর্গতরা অন্যের জমিতে খোলা আকাশের নীচে দিন কাটাচ্ছে। তাদের ত্রাণ দেওয়া হয়নি।” বিধায়কের অভিযোগ, পাড় ভাঙতে ভাঙতে গঙ্গা ও ফুলহার এগিয়ে এলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বস্তুত ওই এলাকার কোনও তথ্য সেচ দফতর বা প্রশাসন রাখে না। বাধ্য হয়ে বিষয়টি বিধানসভায় তুলে ধরেছি। দুর্গতদের জন্য পাঁচশো ত্রিপল চেয়েছি। সেচ দফতর ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ফুলহার নদীর ওপারে মহানন্দাটোলা ও বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েত দুটিকে একসঙ্গে কাটাহা দিয়ারা চর এলাকা বলা হয়। ওই চর এলাকার পশ্চিমে গঙ্গা, পূবে ফুলহার। গঙ্গা আগে ছিল ঝাড়খণ্ডের দিকে। পাড় ভেঙে এখন তা আছড়ে পড়েছে রতুয়ার জঞ্জালিটোলায়। ফুলহার পেরিয়ে ৫ কিলোমিটার দূরে জঞ্জালিটোলায় যাওয়ার কোনও রাস্তা নেই। প্রায় ৭৫ হাজার মানুষের বাস দিয়ারা অঞ্চলে। স্কুল, ব্যাঙ্ক, ডাকঘর সবই এখানে আছে। যে ভাবে গঙ্গা ও ফুলহার দু’দিক থেকে সাঁড়াশি আক্রমণ করছে তাতে শুধু কয়েকটি গ্রামই নয়। ভাঙন রোধ না হলে গোটা দিয়ারাই বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ওই এলাকায় ভাঙন রোধে যে কোনও কাজ এতদিন হয়নি তা সেচ দফতরের কর্তারা স্বীকার করেছেন। সেচ দফতরের মালদহ নর্থ সেন্ট্রাল সার্কেলের সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার সন্দীপ দে বলেন, “ওই এলাকায় গঙ্গা ও ফুলহার আগে দূরে থাকলেও এখন অনেক কাছাকাছি। একটি এলাকায় দুই নদীর মিলনও ঘটেছে। ফুলহারের ভাঙন রোধের জন্য প্রকল্প পাঠানো হলেও গঙ্গা ভাঙন রোধে কাজের জন্য উপগ্রহ চিত্র প্রয়োজন। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) তরুণ সিংহ রায় বলেন, “দুর্গতরা যাতে ত্রাণ না পায় সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রধানদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিডিওকে ত্রাণের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। সেচ দফতর ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা দেখছে।” বিলাইমারির প্রধান নদী মণ্ডল, মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লতিকা মণ্ডল বলেন, “দুই নদীর ভাঙনে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।”
First Page Uttarbanga Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.