উত্তরের চিঠি

রেলগেটে ‘গেট’-এর চিহ্ন নেই
এসো প্রাণ, মৃত্যুর সাথে খেলি এক দান। কোনও ফ্রেম-বাঁধাই ছবির এমনতর ক্যাপশানে আজ আর আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। এ মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ নয়, বার বার মনে পড়ে। দেশের হাজারো প্রহরাবিহীন লেভেল-ক্রসিং এ লেখার বিষয় নয়। সম্ভাব্য মৃত্যুর ললাটলিখনে আধুনিক জীবনযাত্রার মধ্যেও বিশ্রী কালির দাগে বিক্ষত এ শহর। জলপাইগুড়ির তিন নম্বর রেল গুমটির রেলগেট। ‘রেলগেট’ শব্দবন্ধে আই সি ইউ-এর রোগীও হেসে ফেলবেন। ‘গেট’-এর ছিটেফোঁটা স্মৃতিও উধাও এখান থেকে। বহু বার এমন খবরে চোখ রেখে নাগরিক জীবনে কোনও নতুনত্ব নেই। একবার জনৈক শ্রমিকের লাল গামছা দেখিয়ে রেল থামিয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব সংবাদপত্রের প্রথম পাতাতেই আটকে থাকল। রেল পরিষেবা কী ভাবছে? স্থানীয় তিন নম্বর গুমটির ঝুপড়ি উচ্ছেদ, নিয়ন আলোর ঔজ্জ্বল্য যদি প্রগতির পদক্ষেপ হয়, তবে এই মরণফাঁদ জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনের কর্মচারীদের কয়েক যোজন পিছনে নিয়ে উপড়ে ফেলেছে। তবে কি কোনও জ্ঞানেশ্বরী, গাইসালের অপেক্ষায় রেল দফতর? মিডিয়া, ফ্ল্যাশবাল্ব, অ্যাম্বুল্যান্সের হুড়োহুড়িতে কি দফতরের ঘুম ভাঙবে? এই ক্রসিং-এর চারপাশেই হাইস্কুল, কদমতলা গার্লস স্কুল, এফ ডি আই স্কুল, সোনালি গার্লস, গভর্নমেন্ট গার্লস-এর মতো একগুচ্ছ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সুতরাং লালফিতে, নীলপাড়, হাফপ্যান্টই এই ক্রসিং-এর পথযাত্রী। শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের বোধের উন্মেষপর্ব ধর্তব্যের মধ্যেই আসে না, সুতরাং দুর্ঘটনা আজ ঘটেনি মানেই কালকের প্রতীক্ষা। এক লহমায় শহরের এই ব্যস্ততম পারাপারেও অশনি সংকেত এড়িয়ে যায় সব্বার চোখ। রেলের হুইশলে চলার পথকে আটকে দেওয়ার স্পর্ধা এখানে অনুপস্থিত, শুধু তিস্তা-তোর্ষা, সুপারফাস্ট, দার্জিলিং মেল, হলদিবাড়ি লোকালের সময়সারণি স্মরণে রাখতে হবে, না হলে মৃত্যু অনিবার্য। তবে কি এটাই পরিবর্তন। মানুষ হাঁটছে, রেল ছুটছে, গার্ড পতাকা নাড়াচ্ছে কোনও গ্রুপ থিয়েটারের পথনাটক বলে মুহুর্মুহু ভ্রম হয়। কিন্তু মৃত্যুর কোনও রিটেক হয় না, কেড়ে নিলে ফিরবে না আর। মুক্তমঞ্চ জলপাইগুড়ির তিন নম্বর রেলগুমটির লেভেল ক্রসিং। এখানে বেনিয়মই নিয়ম। আরও একবার রেল দফতরের কাছে এই মৃত্যু উপত্যকার বিধান চাইছি। কাল থেকে আবার হয়ত ভুলে যাবেন, আবার মানুষ মৃত্যুর সঙ্গে করমর্দনে এগিয়ে আসবে ক্রসিং-এ। কিন্তু এখানে তো লাল ফিতের ফাঁস নেই, লোকাল-জোনাল কমিটির দাদাগিরি নেই, তবে সমস্যাটা কোথায়? স্টেশনে যাত্রীশেড, প্ল্যাটফর্মের আধুনিকীকরণই শেষ কথা নয়, স্টেশন চত্বরের বাইরে চোখ খুলবে কবে? প্রশ্নের সরণি বেয়ে বারবার হেঁটে যাচ্ছে বোধ, তবু ভ্রূক্ষেপ নেই, বড় উদাসীন এ শহর!
নর্দমা সংস্কার হোক
রেল লাইন বরাবর পুরসভার যে কাঁচা বিশাল নর্দমা চার নম্বর গুমটি থেকে তিন নম্বর গুমটির পাশ বরাবর হয়ে এবং পাণ্ডাপাড়ার মধ্যে দিয়ে গদাধর নদী পর্যন্ত চলে গিয়েছে, সেইটি দীর্ঘকাল সংস্কারের অভাবে বর্ষাকালে এলাকাবাসীদের চূড়ান্ত দুর্ভোগের মধ্যে ফেলে। এলাকাবাসীদের প্রতিদিনের বর্জ্য পদার্থ ফেলতে ফেলতে নর্দমাটি আজ যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, তাতে প্রতি বর্ষায় নর্দমার দূষিত জল দুই কূল প্লাবিত হয়ে নানা রকম পেটের রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটবে তা এখনই নিঃসন্দেহে বলা যায়। শুধু তাই নয়, নর্দমাটির নাব্যতা কমতে কমতে এবং জঙ্গল ও আবর্জনায় ভরে যাওয়ার ফলে এটিকে আজ নর্দমা না বলে সাপ ও মশার আঁতুড়ঘর বললেই চলে। বর্ষায় মহামায়াপাড়া থেকে শুরু করে পাণ্ডাপাড়া ও কংগ্রেসপাড়ার অধিকাংশ অংশ প্লাবিত হয়ে এলাকাবাসীদের দুর্দশার অন্ত থাকে না। অবিলম্বে এ বিষয়ে উদ্যোগী হওয়া দরকার।
এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।
‘উত্তরের চিঠি’,
এ বি পি প্রাঃ লিঃ,
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড,
শিলিগুড়ি ৭৩৪৪০১
Previous Story Uttarbanga First Page



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.