|
|
|
|
ঠেললেন অনুপ্রবেশ-বলও |
রাজ্যে ‘মিনি-বিপ্লব’, মমতাকে শুভেচ্ছা আডবাণীর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
পশ্চিমবঙ্গে ‘কমিউনিস্ট অপশাসনে’র জন্য তাঁর এক কালের সহকর্মীকে অভিনন্দন জানিয়ে গেলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী। বিজেপি-র বর্ষীয়ান নেতা এবং দেশের প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রীর মতে, পশ্চিমবঙ্গে ব্যালটবক্সের মাধ্যমে ‘মিনি-বিপ্লব’ হয়েছে! তার জন্য এ রাজ্যের জনতাকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশিই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পশ্চিমবঙ্গ পুনর্গঠনের আয়াসসাধ্য কাজের জন্য শুভেচ্ছা-বার্তা দিয়েছেন আডবাণী।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটে ‘পরিবর্তনে’র পরে রবিবারই প্রথম কলকাতায় এসেছিলেন আডবাণী। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রিসার্চ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে এক সভায় তিনি বলেন, “ভোটের পর প্রথম এলাম। পশ্চিমবঙ্গে এ বারের ভোট তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। ৩৪ বছরের অপশাসন সমাপ্ত হয়েছে, পরিবর্তন এসেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাগত, তাঁর শাসনকে স্বাগত।” |
|
ভবানীপুরে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে আডবাণী। -রাজীব বসু |
এনডিএ জমানার উপ-প্রধানমন্ত্রীর মতে, “এত বছরে রাজ্যের প্রশাসন সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিল। বিশেষত, শিক্ষা ব্যবস্থার কথা বেশি করে বলব। যে রাজ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মেছিলেন, সেখানে শিক্ষা ব্যবস্থার কী হাল হয়েছিল! ভাঙা প্রশাসনকে পুনর্গঠন, বিভক্ত একটা সমাজের পুনর্মিলন এবং অর্থনীতি, শিক্ষা ও উন্নয়নের সমস্ত ক্ষেত্রে বাংলার পুরনো গৌরব ফিরিয়ে আনার পরিশ্রমসাধ্য কাজ মমতাকে করতে হবে। তার জন্য শুভেচ্ছা রইল। যে পরিবর্তন হয়েছে, তা ভালই হয়েছে। যা হবে, তা-ও ভালই হবে!”
বস্তুত, বিধানসভা ভোটে মমতার ‘ঐতিহাসিক সাফল্যে’র পরেই অভিনন্দন জানাতে তাঁকে ফোন করেছিলেন আডবাণী। ‘ব্যস্ততা’র জন্য তৃণমূল নেত্রী তাঁর ফোন ধরতে না-পারায় ‘ব্যথিত’ও হয়েছিলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক। তবে কলকাতায় আসার প্রথম সুযোগেই আডবাণী বুঝিয়ে দিয়েছেন, সেই অধ্যায় মনে রেখে মমতার সাফল্য স্বীকারে তিনি কুণ্ঠিত নন। আডবাণী বলেন, “বাজপেয়ীর সরকারে মমতাজি আমাদের সঙ্গে কাজ করেছিলেন। তাঁর সাধারণ জীবনযাপন এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য তাঁর পূর্ণ অঙ্গীকারের আমি গুণগ্রাহী।”
তবে প্রশংসা করলেও বিজেপি-র রাজনীতির পুরনো তাস এ দিন সুকৌশলে ব্যবহার করে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের সমস্যা সমাধানের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতার কোর্টে বল ঠেলেছেন আডবাণী। তাঁর কথায়, “প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ যাবেন। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও সঙ্গে যেতে পারেন শুনছি। বাংলাদেশে হিন্দুরা যাতে সুরক্ষিত থাকেন, সেটা দেখতে হবে। আর বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ বন্ধের জন্য জোর দিতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ওঁরা এই দু’টি বিষয়ে কথা বলবেন, আশা করি।” তার আগে ভবানীপুরে শ্যামাপ্রসাদের বাড়িতে শ্রদ্ধা জানিয়ে বেরিয়ে এ দিনের রেল দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে রেলের পূর্ণমন্ত্রী না-থাকা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি আডবাণী। তিনি বলেন, “বিষয়টা একটা দফতরে পূর্ণমন্ত্রী থাকা বা না-থাকার নয়। ইউপিএ-র গোটা মন্ত্রিসভা এবং সরকার ২০১৪ পর্যন্ত চলবে কি না, সেটাই দেখার বিষয়!”
আডবাণী মমতার ভূয়সী প্রশংসা করলেও একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ অবশ্য নতুন সরকারের রাজ্যের নাম বদলের উদ্যোগের কড়া সমালোচনা করেছেন। রাহুলের বক্তব্য, “কমিউনিস্টরা যে চক্রান্ত করেছিল, তার পরবর্তী লোকেরাও তা-ই করছে! তাই পশ্চিমবঙ্গ মুছে দিয়ে শুধু বাংলা বা বঙ্গ করার চেষ্টা হচ্ছে। যাতে পশ্চিম এবং পূর্ববঙ্গের যে ইতিহাস ছিল, দেশভাগের যে অধ্যায় ছিল, সেটা পরবর্তী প্রজন্মকে ভুলিয়ে দেওয়া যায়! মানুষকে এই কথা আমাদের বোঝাতে হবে।” অনুষ্ঠানে ছিলেন ছত্তীশগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহও। মাওবাদী-অধ্যুষিত ওই রাজ্যে ‘অপারেশন গ্রিনহান্ট’ বন্ধের দাবিতে কলেজ স্কোয়ারে আচমকা বিক্ষোভ দেখায় একটি সংগঠন। |
|
|
|
|
|