গত বছর ১ জুলাই বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মদিনে বিধানসভায় তাঁর ছবিতে মালা না-দিয়েই রাজারহাট নিয়ে দলের বৈঠকে যোগ দিতে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতারা। তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কও হয়েছিল। এ বার সরকারি পক্ষে যাওয়ার পরে ৮ জুলাই জ্যোতি বসুর জন্মদিনে আর এক ধরনের বিড়ম্বনায় পড়তে হল তাঁদের। বিধানসভার লবিতে বসুর তৈলচিত্রের সামনে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে সামনের সারিতে বসেছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিম এবং বিরোধীপক্ষের বেশ কিছু নেতা। প্রাক্তন কিছু বিধায়কও ছিলেন। পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সেখানে গিয়ে দেখেন, তাঁর জন্য আরও কোনও আসন খালি নেই! এমনিতে পার্থবাবু এ সব ক্ষেত্রে বিশেষ হাঁক-ডাক করে নিজের ‘উপস্থিতি’ জাহির করতে চান না। সে দিনও আসন নেই দেখে দাঁড়িয়েই ছিলেন। প্রাক্তন মন্ত্রী, সিপিএম বিধায়ক আনিসুর রহমান অস্বস্তি কাটাতে পার্থবাবুকে ডেকে বসাতে গেলেন। আনিসুর বার কয়েক অনুরোধ করার পরে পার্থবাবু পাল্টা তাঁকে ‘ব্যস্ত’ না-হতেই অনুরোধ করলেন। সরকারপক্ষের এমন বিড়ম্বনার পরে অস্বস্তিতে পড়েছেন বিধানসভার কর্মীরাই। অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক আহ্বায়ক ছিলেন স্পিকার স্বয়ং! ঘুরে এল জুলাই-যন্ত্রণা।
|
রাজ্যের নবনির্বাচিত বিধায়কদের একটি বড়সড় ট্রলি-স্যুটকেস দেওয়া হয়েছে বিধানসভার পক্ষ থেকে। প্রথম দিন নির্দিষ্ট একটি কাউন্টার থেকে বিধায়কদের সেই ট্রলি-ব্যাগ সংগ্রহ করতে হয়েছে। পরে সচিবালয়ের নির্দিষ্ট জায়গা থেকে। ট্রলি-ব্যাগ নিতে গিয়ে কংগ্রেসের এক বিধায়ক দলীয় সতীর্থকে বলেছেন, “ঘরছাড়া বিধায়কদের বেশ কাজের জিনিস হল! এর মধ্যে অনেক জিনিসপত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারবেন।” পরিচিত সাংবাদিকের তৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়া, “এটা কিন্তু এখন সুশান্ত ঘোষের সবচেয়ে বেশি কাজে লাগত! কিন্তু উনিই তো নিতে পারলেন না!”
|
হেরে গেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একদা কর্পোরেট বড়কর্তা। অধুনা ডাকসাইটে তৃণমূল নেতা। মমতা-মন্ত্রিসভার ‘নম্বর টু।’ রাজনৈতিক ওজন ধারাবাহিক ভাবে বেড়েছে গত কয়েক বছর ধরে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ওঠা-নামা করেছে দেহের ওজন। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরন্তর এবং স্নেহশীল গঞ্জনায় সেঞ্চুরি থেকে তিন কেজি কমে সাতানব্বইয়ে মোটামুটি থিতু হয়েছিলেন অধুনা শিল্প-বাণিজ্য ও পরিষদীয় মন্ত্রী। কিন্তু তৎসত্ত্বেও তিনিই ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যনেতাদের মধ্যে সবচেয়ে ওজনদার। আপাতত তাঁকে ‘যুগ্মজয়ী’ শিরোপা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। কারণ আজ, সোমবার যে চার তৃণমূল প্রার্থী রাজ্যসভায় মনোনয়ন পেশ করবেন, তাঁদের মধ্যে বয়সে তরুণতম সৃঞ্জয় বসু ওজনে বহু যোজন দূরে ফেলে দিয়েছেন পার্থবাবুকে। যিনি তাঁর বাবা স্বপনসাধন বসুর যোগ্য উত্তরসূরি। সব দিক দিয়েই। রাজ্যে পার্থবাবু। কেন্দ্রে সৃঞ্জয়। যুগ্মজয়ী।
|
আলটপকা শুনে মনে হতে পারে, মুম্বই হামলায় নিহত মুম্বই পুলিশের এনকাউন্টার-বিশেষজ্ঞ বিজয় সালাসকরের কথা বলা হচ্ছে বুঝি। কিন্তু তার সঙ্গে এই শব্দবন্ধের দূরতম সম্পর্কও নেই। এই শব্দ অতি সম্প্রতি ঢুকেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজস্ব উদ্ভাবনে। নিজে বরাবরই ঘোরতর অসাম্প্রদায়িক এবং সর্ব ধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাসী। তাঁর শোয়ার ঘর এবং বাড়ির লাগোয়া দফতরে শ্রীরামকৃষ্ণ, মা সারদা এবং স্বামী বিবেকানন্দের ছবির পাশেই শোভা পায় ফ্রেমে বাঁধানো মক্কায় পবিত্র হজযাত্রীদের গণ-নমাজ পড়ার জীবন্ত ছবি। একই বৃন্তে সেই দু’টি কুসুমেরই ফলিত শব্দ ‘সালাসকার।’ মুসলিমদের সেলাম ওয়ালেকুমের সঙ্গে হিন্দুদের নমস্কার।
|
ক্রীড়ামন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে যে ভাবে কলকাতা এবং গোটা রাজ্যের বিভিন্ন স্টেডিয়ামে টহল মারতে শুরু করেছেন, তাতে মদন মিত্রের নামটাই তাঁর রাজনৈতিক বন্ধুমহলে কিঞ্চিৎ বদলে গিয়েছে। ভবানীপুরের শাঁখারিটোলার আদি বাসিন্দা নাকি সম্প্রতি রাজ্য ব্যাডমিন্টন সংস্থার কর্মকর্তাদের একাংশকে খোলাখুলি ব্যাডমিন্টনে চ্যালেঞ্জও জানিয়েছেন! পাশাপাশি হানা দিচ্ছেন যুবভারতী থেকে বিভিন্ন ময়দানে বাম জমানায় খেলাধুলো ছাড়া স্টেডিয়ামের ‘অন্যান্য’ ব্যবহার সরেজমিনে দেখতে এবং কড়া ব্যবস্থা নিতে। ঘুরে এসেছেন লালগড়েও। কী নাম হয়েছে তাঁর? ময়দান মিত্র!” |