দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে বৃদ্ধ গৃহকর্তা, তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে মারধর করে লুঠপাট চালিয়ে পালাল দুষ্কৃতীরা। শনিবার রাতে বাঁকুড়ার সিমলাপাল থানার বাঘাখুলিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ হৃদয়রঞ্জন ষন্নিগ্রহী, তাঁর স্ত্রী গীতাদেবী এবং ছোট ছেলে প্রশান্ত ষন্নিগ্রহী গুরুতর জখম হয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হৃদয়রঞ্জনবাবুকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে এবং তাঁর স্ত্রী-ছেলেকে কলকাতায় একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, তদন্ত শুরু হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে। |
সিমলাপাল থেকে ২ কিলোমিটার দূরে বাঘাখুলিয়া গ্রামের ওই চাষি পরিবার থাকেন। গ্রামবাসীরা জানান, রাত প্রায় ১টা নাগাদ ৮-১০ জনের সশস্ত্র দুষ্কৃতী দল হৃদয়রঞ্জনবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়। ঘরে ঢুকে ভোজালি, ছুরি দেখিয়ে নগদ টাকা, সোনা-রূপোর গয়না, মোবাইল কেড়ে নেয়। প্রশান্তবাবু বাধা দিতে গেলে দুষ্কৃতীরা তাঁর বাম হাতে ভোজালির কোপ মারে। সেই সময় হৃদয়রঞ্জনবাবুর হাতে ও গীতাদেবীর মুখে অস্ত্রের কোপ মারে দুষ্কৃতীরা। প্রায় আধঘণ্টা ধরে লুঠপাট চালিয়ে মোরাম রাস্তা ধরে সিমলাপালের দিকে পালিয়ে যায় তারা।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হৃদয়রঞ্জনবাবুর নাতি করুণা ষন্নিগ্রহীর কথায়, “রাতে আমরা ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। দরজা ভাঙার শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। দেখি হাফ প্যান্ট, কালো গেঞ্জি ও নীল কাপড়ে মুখ ঢাকা কয়েক জন হাতে ভোজালি-ছুরি নিয়ে উঠোনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এর পরে ওরা ভিতরে ঢুকে পড়ে।” তিনি বলেন, “ওরা ভোজালি দেখিয়ে প্রথমে তিনটি মোবাইল কেড়ে নেয়। আর গয়না-নগদ টাকা কোথায় আছে জানতে চেয়ে কাকাকে মারধর করে। প্রতিবাদ করতেই ওদের এক জন কাকার বাম হাতে ভোজালি বসিয়ে দেয়। তা দেখে দাদু ও ঠাকুমা এগিয়ে আসতেই ওরা তাঁদেরকেও মারধর করে।” |
বাঘাখুলিয়া গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের সামনেই হৃদয়রঞ্জনবাবুর একতলা পাকা বাড়ি। রবিবার ভোরে স্থানীয় বাসিন্দারা জখমদের প্রথমে সিমলাপাল ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করান। সেখান থেকে তাঁদের বাঁকুড়া মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থায় অবনতি হওয়ায় গীতাদেবী ও প্রশান্তবাবুকে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। যদিও হৃদয়রঞ্জনবাবুর বড় ছেলে প্রদীপবাবুর দাবি, “সিমলাপালে একটি জায়গা নিয়ে আমাদের এক আত্মীয়ের সঙ্গে বিরোধ চলছে। ঘটনার পিছনে তাঁর হাত থাকতে পারে বলে আমাদের সন্দেহ।” এসডিপিও (খাতড়া) আলোক রাজোরিয়া বলেন, “দুষ্কৃতীরা ডাকাতির উদ্দেশ্যে না কি অন্য কোনও কারণে এসেছিল, তার তদন্ত চলছে।” |