|
|
|
|
|
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এলে উঠবে সূচক অমিতাভ গুহ সরকার |
|
শুরুটা মন্দ হয়নি। ফলাফলের মরসুমের গোড়াতেই আশার আলো দেখিয়েছে এইচ ডি এফ সি ব্যাঙ্ক এবং ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক। প্রথম ত্রৈমাসিকে এইচ ডি এফ সি ব্যাঙ্কের লাভ বেড়েছে ২২ শতাংশ। তিন মাসে নিট লাভ দাঁড়িয়েছে ৮৪৪ কোটি টাকায়। এই সময়ে ব্যাঙ্কের আয় বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। এইচ ডি এফ সি ব্যাঙ্কের ১০ টাকা ফেস্ ভ্যালুর প্রতিটি শেয়ারের বাজার দর এখন ২৫৫৯ টাকা। শেয়ারের দাম যাতে লগ্নিকারীদের নাগালের মধ্যে আসে, তার জন্য প্রতিটি ১০ টাকার শেয়ারকে ৫টি ২ টাকার শেয়ারে বিভাজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্কের ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের লগ্নিকারীদের জন্য এক বিশেষ জমা প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন চেয়ারম্যান। এই প্রকল্প অনুযায়ী ব্যাঙ্কের সদস্যরা অতিরিক্ত ৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ পাবেন ব্যাঙ্কের বিভিন্ন জমা প্রকল্পে। এই বিশেষ সুবিধা তাঁরা পাবেন ৮ জুলাই থেকে ১৬ অগস্ট পর্যন্ত।
ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্কের নিট লাভ ৫২ শতাংশ বেড়ে পৌঁছেছে ১৮০ কোটি টাকায়। ঋণ ও আমানতের উপর সুদ বাড়া সত্ত্বেও দুই বেসরকারি ব্যাঙ্কের উন্নত ফলাফল আশা জাগায় অন্য ব্যাঙ্কগুলিও হয়তো ভাল ফলাফল উপহার দেবে। চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত হবে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার আর্থিক ফলাফল।
ঋণ ও আমানতের উপর আর এক দফা সুদ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছে দেশের বৃহত্তম স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। সুদ বৃদ্ধির প্রতিকূল প্রভাব পড়বে বাড়ি, গাড়ি-সহ ঋণ নির্ভর বেশ কিছু শিল্পের উপর। অন্য দিকে সুদ বাড়ানো হয়েছে আমানতের উপরও। ৯০ দিন পর্যন্ত জমায় এখন সুদ পাওয়া যাবে ৭ শতাংশ। ১ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত জমায় সুদের হার হবে ৯.২৫ শতাংশ। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে আমানত ভাঙালে জরিমানা হবে মাত্র ০.৫ শতাংশ। ৯০ দিন মেয়াদে এই জরিমানা দিতে হবে না। জরিমানা ১ শতাংশ থেকে ০.৫০ শতাংশে নেমে আসায় ৯.২৫ শতাংশ সুদে দীর্ঘ মেয়াদে লগ্নি করার কথা ভাবাই যেতে পারে। স্টেট ব্যাঙ্কের সুদ বৃদ্ধির প্রভাব অন্য কিছু ব্যাঙ্কের উপর বর্তাবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাইট ইস্যু অথবা সংস্থাগত লগ্নিকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করে ২০,০০০ কোটি টাকা সংগ্রহের পরিকল্পনা পাকা করছে দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক।
বেশ কিছু দিন পর আবার ১৯ হাজার স্পর্শ করে এক দিনের মধ্যে সেনসেক্স আবার নেমে এসেছে আঠারো হাজারের ঘরে। বিশ্ব বাজার কিছুটা শক্তিশালী হয়ে ওঠায় এবং বিদেশি লগ্নিকারীরা আবার ভারতে শেয়ার কিনতে শুরু করায় সেনসেক্স কম বেশি ১৫০০ অঙ্ক উঠেছিল গত দু’সপ্তাহে। শুক্রবার বাজার ধরাশায়ী হয় কয়লা এবং খনি সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের খসড়া বিল বাজারের পছন্দ না- হওয়ায়। এর প্রভাবে ভাল রকম পতন হয় কোল ইন্ডিয়া-সহ অন্যান্য খনি সংস্থা এবং বিভিন্ন ইস্পাত শেয়ারের।
দিনের শেষে ১.১৫ শতাংশ নেমে সেনসেক্স থিতু হয় ১৮৮৫৪ অঙ্কে।
শুক্রবার ভাল খবর পরিবেশন করেছে বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রক। বিশ্বের বাজারে অনিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও জুন মাসে ভারতের রফতানি ৪৬.৪ শতাংশ বেড়ে পৌঁছেছে ২৯০০ কোটি ডলারে। অন্য দিকে আমদানিও বেড়েছে ৪২.৪ শতাংশ। জুন মাসে আমদানির মোট পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৭০০ কোটি ডলার। এর ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি বাড়বে প্রায় ৭৭০ কোটি ডলার। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতি কমছে। বাজারে গেলে অবশ্য উল্টোটাই মনে হবে। আসলে আমরা যে মুদ্রাস্ফীতির খবর পাই তা দু’সপ্তাহ আগের মূল্যমান অনুযায়ী। তেল গ্যাসের দাম বাড়ার প্রভাবে এবং কোনও কোনও অঞ্চলে অতি বর্ষণের কারণে বর্তমান দাম নিঃসন্দেহে অনেক বেশি চড়া। এই পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে দু’সপ্তাহ পরে। দাম বাড়তে থাকলে আবারও সুদ বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে যা দেশের অর্থনীতি এবং শেয়ার বাজারের কাছে আদৌ কাম্য নয়। এই একটি কারণ সব সময়েই চাপে রাখবে শেয়ার সূচককে। অন্য দিকে বাজারের নজর থাকবে ত্রৈমাসিক কোম্পানি ফলাফলের উপর। সব মিলিয়ে একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে ওঠাপড়া চলতে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি খানিকটা নিয়ন্ত্রণে এলে তবেই বাজারের মাঝারি উত্থান আশা করা যেতে পারে। |
|
|
|
|
|