মাওবাদীদের জন্য মমতার প্রস্তাব ‘স্বাগত’ সিপিএমের
স্ত্র সমর্পণ করলে মাওবাদীদের জন্য আর্থিক প্যাকেজের যে প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছেন, তাকে ‘স্বাগত’ জানাল সিপিএম। তাদের মতে, মাওবাদীদের মূলস্রোতের রাজনীতিতে ফেরানোর যে কোনও প্রচেষ্টাকেই স্বাগত জানানো উচিত।
মাওবাদীদের জন্য যে ঘোষণা মমতা করেছেন, তার ‘শর্ত’ এবং ‘আন্তরিকতা’র উপরেই বিষয়টির ‘সাফল্য’ নির্ভর করছে বলে মনে করছে সিপিএম। বন্দুকের রাজনীতিতে বিশ্বাসী মাওবাদীরা আদৌ অস্ত্র ছাড়তে রাজি হবে কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। কিন্তু সরকারের তরফে মমতার উদ্যোগকে স্বাগত জানাতে কোনও কার্পণ্য করছে না রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল।
মমতার প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও তারা যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের আর্জিতে অতীতে সাড়া দেয়নি, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য তথা দলের সংসদীয় দলনেতা সীতারাম ইয়েচুরি। শুক্রবার তিনি বলেন, “পূর্বতন নকশাল বা এখনকার মাওবাদীদের কাছে আমরা বহু বারই আর্জি জানিয়েছি বন্দুকের পথ ছেড়ে গণতন্ত্রের রাস্তায় আসার জন্য। কিন্তু তাদের তরফে সদর্থক সাড়া মেলেনি।” প্রসঙ্গত, হিংসার পথ ছেড়ে সংসদীয় গণতন্ত্রে অংশ নিতে রাজি হওয়ায় নেপালের মাওবাদীদের সঙ্গে আলোচনায় গিয়েছিলেন ইয়েচুরিই।
রাজ্য সিপিএম অবশ্য মনে করছে, মাওবাদীদের জন্য আলোচনার প্রস্তাব ‘অভিনব’ নয়। এর আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম মাওবাদীদের অস্ত্র সংবরণ করার শর্তে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তারই প্রেক্ষাপটে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকারও আত্মসমর্পণ করলে মাওবাদীদের জন্য পুুনর্বাসন প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু মাওবাদীদের তরফে বিশেষ সাড়া মেলেনি। তবে মমতা এখন মাওবাদীদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চালালে সিপিএম তাতে বাধা হতে চায় না। বরং তাদের অবস্থান, মাওবাদী সমস্যার সমাধান ‘জরুরি’ মনে করে মমতার সরকার বিরোধীদের সহযোগিতা নিয়ে এগোলে রাজ্যের পক্ষেই ভাল হবে।
রাজ্য সিপিএমে মাওবাদী সংক্রান্ত বিষয়ের ভারপ্রাপ্ত দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য, “তথাকথিত এই মাওবাদীদের বিশ্বাসটাই যে হেতু বন্দুকের নলে, তাই আলোচনার প্রস্তাব থাকলেও তার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে গণতান্ত্রিক কাঠামোয় আলোচনার সুযোগ তো রাখা যেতেই পারে।” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের আরও বিশ্লেষন, “পুরনো নকশালদের সঙ্গে তা-ও কিছুটা জমসমর্থন ছিল। কিন্তু তথাকথিত এই মাওবাদীরা লোককে শুধু ভয় দেখিয়ে রেখেছে।”
এ বারের ভোটে বিপর্যয়ের মধ্যেও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিনপুর, বাঁকুড়ার রাইপুর, রানিবাঁধ বা পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের মতো সব চেয়ে বেশি মাওবাদী-অধ্যুষিত বিধানসভা কেন্দ্রগুলি সিপিএম-ই জিতেছে। তাই সিপিএমের মতে, মাওবাদী মোকাবিলায় তাদের ‘ভূমিকা’ অস্বীকার করতে পারবে না নতুন সরকার। আগে মমতা মাওবাদী প্রশ্নে তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করেনি বলে অভিযোগ করলেও সিপিএম মাওবাদী-প্রশ্নে নতুন সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করেই চলতে চায় বলে জানিয়েছে।
Previous Story Rajya Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.