মাসির বাড়ির মহাভোগ পাতে পাস্তা থেকে পায়েস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নবদ্বীপ |
পাস্তা থেকে পোলাও। পিৎজা থেকে পায়েস। মাসির বাড়ির আট দিন জগন্নাথদেবকে এই ভাবেই নানা ব্যঞ্জনে ভোগ দিচ্ছেন ভক্তেরা। নবদ্বীপ বা মায়াপুরের বিভিন্ন মঠ-মন্দিরে গত রবিবার থেকে চলেছে রথযাত্রা উপলক্ষে বিশেষ পুজোপাঠ ও ভোগরাগ।
সব জগন্নাথের অবশ্য এখানে মাসির বাড়ি নেই। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রতি বছরের মতো অস্থায়ী গুণ্ডিচা তৈরি করা হয়েছে। সেখানেই মহা সমারোহে চলছে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান। এর মধ্যে সব থেকে আড়ম্বরে উৎসব পালন করা হচ্ছে মায়াপুরে ইস্কনে। পাঁচ কিলোমিটার দূরের রাজাপুরের জগন্নাথ মন্দির থেকে রথে চড়ে জগন্নাথ এসেছেন মায়াপুরের মূল মন্দিরে। সেখানে বিরাট করে গুণ্ডিচা মন্দির তৈরি করে অস্থায়ী ভাবে পুজো হচ্ছে। এসেছেন দেশ বিদেশের ভক্তেরা। আর তাঁরাই জগন্নাথকে রেঁধে খাওয়াচ্ছেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পদ। |
|
ভোগ দেওয়া হয়েছে জগন্নাথকে। মায়াপুরে ছবিটি তুলেছেন সুদীপ ভট্টাচার্য। |
ইস্কনের মুখপাত্র রমেশ দাস বলেন, “প্রতিদিন গড়ে এক হাজার মাটির পাত্রে ভোগ নিবেদন করা হচ্ছে। তাতে পিৎজা পাস্তা চাউমিন থেকে অন্ন, পরমান্ন, পুষ্পান্ন সবই থাকছে। আর যে পরিমাণ ভোগ নিবেদন করা হচ্ছে প্রতিদিন তাতে বহু লোক প্রসাদ পেতে পারেন।”
নবদ্বীপের চৈতন্যজন্মস্থান আশ্রমে অস্থায়ী ভাবে তৈরি করা হয় গুণ্ডিচা। সেখানে নবদ্বীপের সুপ্রাচীন বালক সাধুর জগন্নাথ থাকেন ৮ দিন। মঠের প্রধান অদ্বৈত দাস বলেন, “এই আট দিন বিশেষ করে পুজার্চনা করা হয়। সকালে মঙ্গলারতি। রাজভোগ অর্পণ করা হয়। সন্ধ্যায় কীর্তন। এর সঙ্গে প্রতিদিন নিত্য নতুন ষোড়শ ব্যঞ্জনে তাঁর ভোগ হয়।” নবদ্বীপের সারদেশ্বরী আশ্রমের সন্ন্যাসীদের পরিচালিত রথের কোনও আলাদা মাসির বাড়ি নেই। আশ্রমের ভদ্রাপুরীদেবী বলেন, “রথের দিন জগন্নাথ রাতে আবার আশ্রমে ফিরে আসেন। তবে সারা বছর যে মন্দিরে জগন্নাথদেব থাকেন এই আট দিন সেখানে থাকেন না। তাঁর অন্যত্র থাকার ব্যবস্থা করা হয়। আশ্রমের দোতলার ঘরই তাঁর মাসির বাড়ি।” ভদ্রাপুরীদেবী বলেন, “এই আট দিন তাঁকে মাসির বাড়ির মতো বিশেষ আদরে রাখা হয়। ভোগের উপকরণে থাকে নানা বৈচিত্র। কোনওদিন বিকেলে হয়তো ক্ষীর দেওয়া হল। কোনওদিন হয়তো মালপোয়া। তার সঙ্গে পাঠ কীর্তন তো রয়েইছে।” |
|