শহর-উন্নয়নে দুই পুরসভা চায় এমকেডিএ’র সাহায্য
হরের উন্নয়নে এমকেডিএ’র দ্বারস্থ হচ্ছে মেদিনীপুর ও খড়্গপুর পুরসভা। কাঁসাইয়ের দুই তীরের দুই শহর ও আশপাশের ১৪টি পঞ্চায়েত এলাকার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই এক সময়ে গোড়াপত্তন হয়েছিল মেদিনীপুর-খড়গপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এমকেডিএ)। আগে পর্ষদ চেয়ারম্যান ছিলেন সিপিএম সাংসদ পুলিনবিহারী বাস্কে। তখন বিরোধী পরিচালিত দুই পুরসভার কর্তৃপক্ষেরই অভিযোগ ছিল, শহর-উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে না এমকেডিএ। প্রকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হলেও মঞ্জুর হচ্ছে না। পালাবদলের পরে পর্ষদের চেয়ারম্যান মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক মৃগেন মাইতি। তৃণমূল-কংগ্রেস জোট পরিচালিত দুই পুরবোর্ডই তাই এখন আশাবাদী, এ বার উন্নয়নকাজে সাহায্য মিলবে, গতি আসবে জমে থাকা নানা প্রকল্পে।
খড়্গপুরের পুরপ্রধান জহরলাল পালের বক্তব্য, “কয়েকটি রাস্তা সংস্কারের কথা পর্ষদকে বলা হয়েছিল। কিন্তু কাজ শুরু হয়নি। ফের নতুন করে প্রকল্প জমা দেওয়া হবে।” একই বক্তব্য মেদিনীপুরের উপ-পুরপ্রধান এরশাদ আলিরও। তাঁর কথায়, “মেদিনীপুরের বিধায়কই এখন পর্ষদের চেয়ারম্যান। স্বাভাবিক ভাবে শহরবাসীর প্রত্যাশা অনেক বেশি। আমরাও এমকেডিএ’র কাছে নতুন করে প্রকল্প জমা দেব। আশা করি, এ বার আর কাজে গড়িমসি হবে না।”
দুই শহরের উন্নয়নে বড় ভূমিকা রয়েছে মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদের। সাত বছর আগে এই পর্ষদ গড়ে তোলা হয়। এই সময়ের মধ্যে দুই শহরের বেশ কয়েকটি রাস্তা সংস্কার করেছে এমকেডিএ। যেমন, খড়্গপুরের সাহাচক থেকে মালঞ্চ রোড, মেদিনীপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে রেল স্টেশন, ডাকবাংলো রোড প্রভৃতি। সঙ্গে সদর শহরে তৈরি হয়েছে সুলভ শৌচাগার। মেদিনীপুর পুরসভা কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের দখলে। খড়্গপুরে আগে ক্ষমতাসীন ছিল কংগ্রেস, এখন তৃণমূল। দুই পুর-কর্তৃপক্ষেরই অভিযোগ, এমকেডিএ’র সিপিএম নিয়ন্ত্রিত বিগত বোর্ড দুই পুরসভার সঙ্গে তেমন সহযোগিতা করেনি। দুই শহরে কাজ হয়েছে সামান্যই। অনেক প্রকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হলেও প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। খড়্গপুরের চৌরঙ্গি থেকে পুরাতন বাজার পর্যন্ত রাস্তা একমুখী করার দাবি দীর্ঘ দিনের। এখানে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। রাস্তার দু’পাশেই রয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির শো রুম, বেসরকারি সংস্থার অফিস। সংকীণর্র্ হওয়ায় যানজটে সমস্যা দেখা দেয়। ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে যে রাস্তা খরিদার দিকে গিয়েছে, তা-ও চওড়া করা জরুরি। সূত্রের খবর, রেলশহরে ঢোকার এমনই কয়েকটি রাস্তা সংস্কারের দাবি নিয়ে এক সময়ে এমকেডিএ’র কাছে দরবার করা হয়েছিল। কিন্তু অর্থ বরাদ্দ হয়নি। খড়্গপুরের পুরপ্রধানের কথায়, “উদ্যোগের অভাবেই কাজ পড়ে থেকেছে।” এ বার রেলশহরে কয়েকটি সুলভ শৌচাগার করার কথাও ভাবছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। এমকেডিএ’র সহযোগিতা প্রয়োজন সে ব্যাপারেও।
অন্য দিকে, মেদিনীপুর পুরসভারও একগুচ্ছ কাজের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু অর্থ নেই। কথা ছিল, শহরের একমাত্র মহানালার উপরে কালভার্টগুলি সংস্কার করা হবে। দ্বারিবাঁধ খালে জলের চাপ কমাতে নতুন একটি মহানালা তৈরি হবে। আবাস থেকে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশ দিয়ে ওই মহানালা কাঁসাইয়ে গিয়ে মিশবে। ফলে ধর্মার আশাপাশে গড়ে ওঠা নতুন বসতি এলাকার নিকাশি সমস্যারও সমাধান হবে। পাশাপাশি, শহরের গুরুত্বপূণর্র্ কিছু নিকাশি-নালারও নতুন করে সংস্কার জরুরি। প্রয়োজনীয় অর্থ চেয়ে এমকেডিএ’র কাছে একাধিক বার দরবার করেছিলেন পুরপ্রধান প্রণব বসু। কিন্তু সাড়া মেলেনি। মেদিনীপুরের উপ-পুরপ্রধান বলেন, “এ বার আমাদের জোটের বিধায়কই উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান হয়েছেন। এ বার দ্রুততার সঙ্গে কাজ হবে বলেই আশা করছি। শীঘ্রই আমরা পর্ষদের কাছে কিছু প্রকল্পের প্রস্তাব জমা দেব।” এমকেডিএ’কে ঘিরে দুই শহরের প্রত্যাশা যে অনেক, মানছেন পর্ষদের নতুন চেয়ারম্যানও। মৃগেনবাবুর বক্তব্য, “উদ্যোগের অভাব ছিল। ফলে কাজ এগোয়নি। এ বার সব প্রস্তাব খতিয়ে দেখে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।” এমকেডিএ’র আগের নেতৃত্ব যাদের হাতে ছিল, সেই সিপিএম-শিবির অবশ্য দুই পুরসভার সঙ্গে অসহযোগিতার অভিযোগ মানছে না। তাদের বক্তব্য, পর্ষদের সাধ থাকলেও সাধ্য ছিল না। সঙ্গতি কম থাকার ফলেই অনেক কাজই হয়ে ওঠেনি।
Previous Story Medinipur Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.