|
|
|
|
যৌনকর্মীদের ছেলেদের নিয়ে ফুটবল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শেওড়াফুলি |
হাড্ডাহাড্ডি লড়াই আর সব মিলিয়ে তিন-তিনটি গোল।
শনিবার শেওড়াফুলির দি মডার্ন অ্যাথলেটিক ক্লাবের মাঠে যৌনকর্মীদের সংগঠন ‘দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি’ আয়োজিত ফুটবল প্রতিযোগিতার ফাইনাল রীতিমতো জমে উঠেছিল। শেওড়াফুলি-টিটাগড়-বসিরহাট জোন ২-১ গোলে হারিয়ে দেয় রবীন্দ্রসরণি-রামবাগান-শেঠবাগান জোনকে। ফুটবলারদের অধিকাংশই ছিল যৌনকর্মীদের সন্তান। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল সাধারণ ঘরের ছেলেরাও।
চ্যাম্পিয়ন দলের হয়ে গোল করে সন্টু দাস এবং বলরাম নস্কর। রানার্স দলের গোলদাতা সুমন খান। তিন গোলদাতাই যৌনকর্মীর সন্তান। সন্টু প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ গোলদাতা। ফাইনালের সেরা বলরাম। ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট রানার্স দলের অভিজিৎ মান্না। |
|
ছবি: প্রকাশ পাল। |
ফাইনালে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘দুর্বার’-এর প্রতিষ্ঠাতা তথা মুখ্য পরামর্শদাতা স্মরজিৎ জানা, হুগলির পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী, শ্রীরামপুরের আইসি তথাগত পাণ্ডে, বৈদ্যবাটির পুরপ্রধান অজয়প্রতাপ সিংহ প্রমুখ। চ্যাম্পিয়ন দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন পুলিশ সুপার। অজয়প্রতাপবাবু রানার্স দলকে পুরস্কৃত করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, “পিছিয়ে পড়া একটি গোষ্ঠীর ছেলেদের নিয়ে এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এই সব পরিবারের ছেলেরা যে কোনও অংশে পিছিয়ে নন, এই প্রতিযোগিতা তা দেখিয়ে দিয়ে গেল।” এই ধরনের প্রচেষ্টা যত বাড়বে, যৌনকর্মীদের সন্তানদের প্রতি সমাজের একাংশের বিরূপ মনোভাব ততই দূর হবে বলে তন্ময়বাবু আশা প্রকাশ করেন। স্মরজিৎবাবু বলেন, “দুর্বারকে নিয়ে এখন অনেক স্বপ্নই দেখা যায়। এখন অনেক মানুষকে আমরা পাশে পাচ্ছি।”
গত বছর থেকে লিগ ও নক-আউট পদ্ধতিতে রাজ্য জুড়ে এই প্রতিযোগিতা চালু হয়েছে। এ বারে প্রতিযোগিতার ব্যবস্থাপনা করে সংগঠনের শেওড়াফুলি শাখা। গত ৪ জুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়। হুগলি, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা, কলকাতা, বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে দুর্বার-এর শাখা তাতে যোগ দেয়। ২টি অথবা ৩টি শাখা মিলিয়ে একটি করে মোট ৮টি দল গড়া হয়। সামাজিক মেলবন্ধন এবং যৌনকর্মীদের সন্তানদের প্রতি সমাজের বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটাতেই এই উদ্যোগ বলে জানান দুর্বারের কর্তারা। ফাইনাল খেলাটি দেখতে মাঠ ভরে গিয়েছিল। ছেলেদের খেলা দেখতে এসেছিলেন বহু যৌনকর্মীও। তাঁরা আগাগোড়া খেলাটি উপভোগ করেন। |
|
|
|
|
|