|
|
|
|
|
|
|
মনোরঞ্জন ২... |
|
পটার-পরব |
কলকাতার জেন-এক্স। প্রচণ্ড আবেগ নিয়ে তাকিয়ে। লিখছেন প্রিয়দর্শিনী রক্ষিত |
‘ইট অল এন্ডস’। এ বার সব শেষ।
তিনটে মাত্র শব্দ। কিন্তু ছোট ছোট এই তিনটে শব্দের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে কলকাতা। এই শহরের হাজার হাজার অনুরাগীর একরাশ খারাপ লাগা। শেষ হয়ে যেতে চলেছে একটা যুগ। পটার-যুগ।
হ্যারি বনাম ভলডেমর্ট-এর শেষ যুদ্ধ দেখার এক সপ্তাহ আগে ঠিক কী ভাবছেন এ শহরের পটার-প্রেমীরা? “বারবার মনে হচ্ছে, আমার ছোটবেলাটাই শেষ হয়ে গেল,” বলছেন অঙ্গনা দেব। একই কথা শোনা গেল মধুবন্তীর মুখে। “প্রথম বইটা পড়তে পড়তে মনে হয়েছিল, আমার সামনে নতুন একটা দুনিয়ার দরজা খুলে গিয়েছে। এই ফিল্ম রিলিজ করার সঙ্গে সঙ্গে দরজাটা একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। ছোটবেলায় যে বন্ধুর সঙ্গে বড় হয়েছি, তাকে গুডবাই বলতে যে রকম কষ্ট হয়, সিনেমার শেষে সেই কষ্টটাই হবে,” বললেন তিনি। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য অবশ্য একটু অন্য রকম কথা বললেন, “সিরিজটা মিস করব। কিন্তু অহেতুক না টেনে গল্পটা এখানেই শেষ করে দিয়ে জে কে রাউলিং ভালই করেছেন। না হলে একটা একঘেয়েমি চলে আসত।”
এঁরা সবাই এখন চাকরি করছেন। হ্যারি পটারের প্রথম বই পড়েছেন স্কুলে থাকতে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এঁদের টেনে রেখেছিল রোগাপাতলা, এলোমেলো কালো চুল, সবুজ চোখের হ্যারি এবং তার নানা অ্যাডভেঞ্চার। ইন্টারনেটের যুগে একটা পুরো প্রজন্মকে আটকে রেখেছিল বইয়ের পাতায়। হ্যারি পটার নিয়ে কতটা পাগল এঁরা? ভোরবেলা বইয়ের দোকানে লাইন দিয়ে সিরিজের টাটকা বই কেনা থেকে ক্লাসের ফাঁকে নতুন বই নিয়ে তুমুল তর্ক বাদ পড়েনি কিছুই। “আমি আর আমার বোন একসঙ্গে বইগুলো পড়তাম। এক জন কেউ এক মিনিটের জন্য উঠলেও অন্য জন বইয়ের পাতা ওল্টাতে পারত না। যাতে দু’জনের কেউ বইটা আগে না পড়ে ফেলে!” বলছেন অঙ্গনা।
স্বপ্নময় এই পথ চলার শেষটাও তাই একটা বড়সড় ইভেন্ট। যার জন্য রীতিমতো যুদ্ধের ছক কষে ফেলেছেন পটার-প্রেমীরা। ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো-র টিকিট ব্লক-বুকিং করছেন কলেজপড়ুয়া থেকে অফিসের বস। “প্রথম শো-টা দেখতে পাব না। কিন্তু শনিবার অফিস থেকেই সিনেমাটা দেখার ব্যবস্থা করে দিয়েছে,” বলে দিলেন অঙ্গনা। তবে ওই একটা দিনও অপেক্ষা করছেন না মধুবন্তী। “বস-কে বলে দিয়েছি, ১৫ জুলাই হাফ-ডে নেব। প্রতিটা সিনেমার প্রথম শো দেখে এসেছি। শেষ বার সেই প্রথা ভাঙতে চাই না!”
পটার-প্রেম থেকে বাদ পড়েনি টলিউডও। অভিনেত্রী জুন যেমন দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে সিনেমাটা দেখতে যাচ্ছেন। “ওরা দু’জনেই হ্যারি পটারের প্রচণ্ড ভক্ত। সিরিজটা শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে আমারও খুব খারাপ লাগছে,” বলছেন তিনি। পটার-পাগল তরুণ অভিনেতা গৌরব চক্রবর্তী বলছেন, “রাউলিংয়ের তৈরি অসাধারণ পৃথিবীটা আমার ভীষণ ভাল লাগে। প্রত্যেকটা বই পড়েছি। সব ক’টা সিনেমা দেখা হয়ে গিয়েছে। শেষ ফিল্মটা যত তাড়াতাড়ি পারব দেখে ফেলব।” তবে শার্লক হোমসের মতো হ্যারি পটারের কামব্যাক
চান না গৌরব, “তা হলে সিরিজের মজাটা কোথাও একটা নষ্ট
হয়ে যাবে।”
শহরের অসংখ্য পটার-পাগলদের অন্তিম অভিজ্ঞতা আরও স্মরণীয় করার জন্য বিভিন্ন মাল্টিপ্লেক্সে থাকছে নানা অফার। আইনক্সের আঞ্চলিক ম্যানেজার শুভাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, “আগের সিনেমাগুলো রিলিজ হওয়ার সময় আমরা বেশ কয়েকটা অফার চালু করেছিলাম। একসঙ্গে বেশি টিকিট কিনলে ফ্রি মার্চেন্ডাইজ দেওয়া হয়েছিল। এ বারও সে রকম কিছু করার পরিকল্পনা আছে।” এ ছাড়া ব্লক বুকিংয়ের সুবিধে তো থাকছেই। এমনকী চাইলে একটা গোটা হল-ই বুক করে নিতে পারেন প্রাইভেট শো-র জন্য।
তা হলে আর দেরি কীসের? আসুন, হ্যারি ও তার বন্ধুদের মনে রাখার মতো একটা ফেয়ারওয়েল জানাই! |
|
|
|
|
|