|
|
|
|
ভাড়া বাড়ি থেকে উচ্ছেদই হয়ে গেল কাঁঠালিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • করিমপুর |
শেষ পর্যন্ত উচ্ছেদই হয়ে গেল আস্ত একটা স্বাস্থ্যকেন্দ্র!
উঠছি-উঠব করে বছর কয়েক ধরে ‘ভাড়াটিয়ার’ গড়িমসি আর ‘সহ্য’ না করে দিন কয়েক আগে তাঁর দু কামরার ভিটে থেকে
কাঁঠালিয়া উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটিই তুলে দিয়েছেন বাড়ির মালিক সুলেখা সিকদার। রীতিমতো রুষ্ট মহিলা বলছেন, “আড়াইশো টাকায় দু-দুটো ঘর দখল করে ডাক্তারখানা আর কাঁহাতক চালানো যায়, ছেলেপুলেরা বড় হচ্ছে। ঘর দু’টো দরকার।”
অতএব, উঠেই গিয়েছে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। আর দিন দুয়েক ধরে তার ঠাঁই হয়েছে যেখানে সে’টি আদপে একটি ‘সান্ধ্য আসরের’ ঠিকানা! স্থানীয় সিপিএম পঞ্চায়েত বছর দুয়েক আগে ওই ঘরটি গড়েছিল স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্যই। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার অপরিসর ওই ঘরে শৌচাগারই নেই। পরিত্যক্ত সেই আস্তানা ক্রমেই হয়ে উঠেছিল পঞ্চায়েতের গুদাম ঘর। আর রাতে সেখানেই বসত ‘মদের আসর’। গ্রামবাসীরা এমনই জানিয়েছেন। ফলে নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁঠালিয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি এখন থেকেও নেই। চোয়াপোঁতা, জলঙ্গিপাড়া, টুঙ্গিপাড়া, ৪২ মাইল, রাউতবাটি, তারকগঞ্জের হাজার দশেক মানুষ প্রায় আতান্তরে।
কাঁঠালিয়া পুরাতন বাজারে করিমপুর কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কের পাশে নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উদোগে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রর জন্য যে ঘরটি তৈরি করা হয়েছিল সেখানে উঁকি মেরে দেখা গিয়েছে, পচা খড়ের স্তুপ, পোনা সিগারেট আর অজস্র মদের বোতলের ছড়াছড়ি। পরিকাঠামোহীন ঘরটিতে নেই কোনও আলো। নেই শৌচাগার। কাঁঠালিয়া পুরাতন বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সম্পাদক দেবাশিস দে বলেন, “ঘরটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রর জন্যই তৈরি করেছিল পঞ্চায়েত। কিন্তু সেটা তো হয়নি। উল্টে এখানে রোজ সন্ধের পরেই মদের আসর বসে। চলে নানা রকম বিশৃঙ্খলা। বহু বার স্থানীয় পঞ্চায়েত ও প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হয়নি।”
কাঁঠালিয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্য সহায়িকা সুতপা পাল বলেন, “পঞ্চায়েত বাজারের উপর ওই ঘরটি তৈরি করা হয়েছিল ঠিকই কিন্তু ওটা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য মোটেই উপযুক্ত নয়। ওখানে কোনও শৌচাগার নেই। আমাদের এখানে এলাকার প্রচুর মহিলা আসেন। ফলে, শৌচাগার না-থাকলে খুবই অসুবিধা হবে।” নতিডাঙা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ কেন্দ্রের বি এম ও এইচ প্রণব মল্লিক বলেন, “করিমপুর-২ নং ব্লকে মোট ৩১টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র আছে। তবে কাঁঠালিয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নিয়ে আমরা খুবই সমস্যায় আছি। বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেছি। স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গেও কথা বলব।” নন্দনপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের নৃপেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “মূলত জায়গার অসুবিধার জন্য ওখনে শৌচাগার করতে পারিনি। তবে আমরাও ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সমস্যার একটা পাকাপাকি সমাধান করার সব রকম চেষ্টা করছি।” |
|
|
|
|
|