মমতা দেখুন ‘নেই’ রোগে আক্রান্ত
নামখানা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র
ক্ষমতায় এসেই রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্তার হাল ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরের কয়েকটি হাসপাতালে আচমকা পরিদর্শনে গিয়ে সেখানকার স্বাস্ত্য পরিষেবার হাল-হকিকতও খিতে দেখেন। রাজ্যের সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল ফেরাতে বিভিন্ন হাসপাতালের সুপার এবং স্বাস্থ্যকর্তাদের নিয়ে বৈঠকও করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সেই তৎপরতার ছোঁয়া জেলার গ্রামীণ হাসপাতাল, ব্লক ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে যে এখনও পৌঁছয় তার প্রমাণ পাওয়া গেল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ মহকুমার নামখানা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
দিন কয়েক আগে স্থানীয় বাসিন্দা নীলকমল জানা ছেলেকে নিয়ে ছুটে যায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। খেলতে গিয়ে তাঁর সাত বছরের ছেলের ডান হাত ভেঙে গিয়েছিল। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার পরে ছেলের হাতের এক্স-রে করার দরকার হয়। না হলে চিকিৎসা শুরু করা যাবে না। কিন্তু সেখানেই ঘটল বিপত্তি। কারণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক্স-রে মেশিন থাকলেও তা ৬ মাস ধরে খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। বাদ্য হয়ে নীলকমলবাবু ছেলেকে নিয়ে ছুটলেন কুড়ি কিলোমিটার দূরের কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে।
শুধু নীলকমলবাবুই নন, নামখানা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক্স-রে করাতে আসা বহু রোগীকেই নিত্য এ ভাবে হয়রান হতে হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় এক লক্ষ মানুষ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু এখানকার বেহাল পরিকাঠামোর জন্য তাঁদের বেশিভাগকেই দায়-দরকারে ছুটতে হয় কাকদ্বীপ বা ডায়মন্ড হারবার মহকুমা হাসপাতালে।
--নিজস্ব চিত্র।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল পরিকাঠামোর বিষয়টি স্বীকার করে নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি কুমারেশ পণ্ডা বলেন, “আমি ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দিন কয়েক আগে বিডিওকে নিয়ে গিয়েছিলাম। ওখানে কোনও স্থায়ী চিকিৎসক নেই। সামগ্রিক পরিষেবার হালও খারাপ। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তাকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।”
এদিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল, প্রয়োজনীয় শয্যার অভাবে একই শয্যায় দু’জন করে রোগী রয়েছেন। দীর্ঘদিন খারাপ হয়ে পড়ে থাকায় এক্স-রে মেশিন মাকড়শার জালে ঢাকা পড়েছে। বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে অপারেশন থিয়েটার। রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। ব্যবস্থা নেই আলট্রাসোনোগ্রাফিরও। সুইপারের অভাবে যত্রতত্র পড়ে আছে জঞ্জালের স্তূপ। স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গেল, পাঁচজন চিকিৎসক ও বিএমওএইচের থাকার কথা। কিন্তু বছক খানেক ধরে কোনও স্থানীয় চিকিৎসক নেই। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দু’জন চিকিৎসক এবং ভারপ্রাপ্ত বিএমওএইচ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালাচ্ছেন। বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে নার্স ও চতুর্থশ্রেণির কর্মীদের আবাসন। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওায় ছাদ চুঁয়ে জল পড়ে। চারপাশে কোনও প্রাচীর নেই। নেই কোনও নিরাপত্তা রক্ষী। সন্ধে নামলেই আবাসন চত্বরে শুরু হয়ে যায় নানা অসামাজিক কার্যকলাপ।
• এক্স রে মেশিন ৬ মাস ধরে খারাপ
• বন্ধ রয়েছে অপারেশন থিয়েটার
• রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই
• কর্মী আবাসনগুলিও বেহাল
ভারপ্রাপ্ত বিএমওএইচ দাশরথি কিস্কু সমস্ত সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, “চিকিৎসক না থাকায় অপারেশন থিয়েটার বন্ধ রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার জানিয়েও এক্স-রে মেশিন সারাতে পারানি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল পরিকাঠামো নিয়েও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। নিরুপায় হয়ে রোগীদের অন্যত্র পাঠালে রোগীদের বাড়ির লোকজনের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে।”
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শিখা অধিকারী বলেন, “ওই ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু’জন স্থায়ী চিকিৎসক পাঠানো হয়েছে। অন্য যে সব সমস্যা রয়েছে সেগুলিরও শীঘ্রই সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Previous Story Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.