|
|
|
|
মকুবে নারাজ দিল্লি দুগ্ধ সোসাইটির ঋণ নিয়ে ফাঁপরে রাজ্য |
অশোক সেনগুপ্ত • কলকাতা |
রাজ্যের বকেয়া মকুব করতে আর রাজি নয় ন্যাশনাল ডেয়ারি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (এনডিডিবি)। অবিলম্বে তারা ঋণের টাকা ফেরত চায়। সঙ্কটে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শরণাপন্ন হতে চলেছে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর। দুধ উৎপাদন ও সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ বেশ কিছুটা পিছিয়ে। এর প্রেক্ষিতে রাজ্যে দুধ সংগ্রহের পরিকাঠামো মজবুত করতে এনডিডিবি প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল। ঋণের টাকা মূলত জেলায় জেলায় সমবায়ভিত্তিক বিভিন্ন দুগ্ধ-সোসাইটিকে দেওয়া হয়। ঋণ পরিশোধের দায় নেয় রাজ্য সরকার।
কিন্তু সময়ে টাকা ফেরত না-পেয়ে এনডিডিবি তাগাদা দিতে শুরু করে। রাজ্য অক্ষমতা জানিয়ে বকেয়া মকুবের অনুরোধ জানায়। এনডিডিবি সূত্রের খবর, সেই মতো প্রায় ৫ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা মকুব করা হয়েছে। রাজ্য মিটিয়েছে মাত্র ৯৫ লক্ষ। এর পরেও বকেয়া প্রায় সওয়া ৫ কোটি টাকা। তা মকুব করতে নারাজ এনডিডিবি। দ্রুত তা ফেরত চেয়ে দিল্লি থেকে চিঠি এসেছে মহাকরণে।
কিন্তু ঋণের এই টাকা কোথা থেকে আসবে, তা নিয়ে এখন মহা ধন্দে পড়েছে রাজ্য সরকার। এমন সঙ্কট দেখা দিল কেন? মহাকরণ সূত্রের খবর: অনাদায়ী টাকার বেশিটাই দুই মেদিনীপুর, মালদহ ও দার্জিলিঙের দুগ্ধ-সোসাইটিকে দেওয়া হয়েছিল। এগুলোর ‘দুরবস্থা’র উল্লেখ করেই রাজ্য সরকার এনডিডিবি-কে ঋণ মকুবের আর্জি জানায়। রাজ্যের বক্তব্য: মালদহের সোসাইটি আর কাজ করছে না। তার লিকুইডেশনের পরে এনডিডিবি’র পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হবে। মেদিনীপুর জেলা বিভাজনকে সেখানকার সোসাইটির রুগ্ণতার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখানো হয়। একই সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের একাংশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির উল্লেখ করে রাজ্য লিখেছিল, ‘এই সব অঞ্চলে দুধ সংগ্রহের কাজ টানা ক’বছর মারাত্মক ব্যাহত হয়েছে।
কিন্তু এনডিডিবি এ সব যুক্তি মানতে নারাজ। তারা সাফ জানিয়েছে, এক বার অনেক টাকা মকুব করা হয়েছে। আর নয়। মুশকিল আসানের জন্য তাই খোদ মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন প্রাণিসম্পদ বিকাশমন্ত্রী নূরে আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, “ক’বছর ধরে দার্জিলিঙের হিমুলের অবস্থা খুব খারাপ। মাত্র ১০% উৎপাদন হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ উন্নয়নে দু’শো কোটির প্যাকেজ করছেন। তার কিছুটা হিমুলের উন্নয়নে বরাদ্দ হবে। এ নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে কথা বলেছি।” নূরে আলম মেদিনীপুরে গিয়েও পরিস্থিতি দেখে এসেছেন।
এই সমস্যায় মুখ্যমন্ত্রী কী ভূমিকা নিতে পারেন? প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের এক অফিসার বলেন, ‘এনডিডিবি-র বকেয়া এবং দুধের মূল্যবৃদ্ধির ব্যাপারে আমাদের মন্ত্রী কথা বলতে চান মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। দুধ উৎপাদন ও সংগ্রহের খরচ বিস্তর বেড়ে গিয়েছে। বেসরকারি ডেয়ারিগুলো আগেই দাম বাড়িয়েছে। মাদার ডেয়ারি ও হরিণঘাটার দুধের দাম অবিলম্বে লিটারে অন্তত দু’টাকা না-বাড়ালে লোকসানের বোঝা ভারী হতে থাকবে।” |
|
|
|
|
|