|
|
|
|
সরকারি কর্মীকে ট্রেন থেকে নামিয়ে মারধর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ট্রেন থেকে নামিয়ে মারধর করা হল ডায়মন্ড হারবার ১ ব্লক অফিসের এক কর্মীকে। বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে শিয়ালদহ-ডায়মন্ড হারবার শাখার দেউলা স্টেশনে। সায়ক চট্টোপাধ্যায় নামে প্রহৃত ওই যুবক জিআরপি এবং পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর পিঠে, মাথায়, হাতে আঘাত লেগেছে।
সায়কবাবুর বাড়ি বারুইপুরের মালঞ্চে। পুলিশে দায়ের করা অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, প্রতি দিনের মতোই বুধবার ডায়মন্ড হারবার স্টেশন থেকে ৫টা ৪০ মিনিটের ডাউন ট্রেন ধরে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছিলেন তিনি। ট্রেন ছাড়তেই এক যুবক এসে দাবি জানায়, জানলার ধারের যে সিটে সায়ক বসেছিলেন, সেই সিটে ওই যুবক আগে থেকেই ব্যাগ রেখেছিলেন। অতএব তাঁকে সেখানে বসতে দিতে হবে। সায়কবাবু জানান, এমন কোনও ব্যাগ তাঁর চোখে পড়েনি। এই নিয়ে সামান্য দু’এক কথার পরে দেখা যায়, ব্যাগটি সিটের তলায় পড়ে আছে। ওই যুবক তখনকার মতো চলে যায়।
কিছুটা দূর পরেই দেউলা স্টেশন। ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই জানলা দিয়ে একটি কাঠের টুকরো উড়ে আসে সায়কবাবুদের কামরায়। ট্রেন থামতেই ২০-২৫ জন যুবক হইহই করে ঢুকে পড়ে। শুরু হয় অশ্রাব্য গালিগালাজ। তাদের উগ্র মূর্তি দেখে যাত্রীরা ভয় পেয়ে যান। শুরু হয়ে যায় ছুটোছুটি। ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে পড়ে যান সায়কবাবু। সে সময়ে ওই যুবক সায়কবাবুকে চিহ্নিত করে। শুরু হয়ে যায় মারধর। টেনে-হিঁচড়ে তাঁকে নামানো হয় ট্রেন থেকে। ঘটনার আকস্মিকতায় তখনও বছর সাতাশের যুবক সায়ক বুঝে উঠতে পারছেন না, কোন দোষে তাঁকে মারধর করা হচ্ছে। ওই যুবক বলে, ব্যাগ সরিয়ে সিটে বসে পড়ারই ‘মাসুল’ গুনতে হচ্ছে তাঁকে। সায়কবাবু বোঝাতে চেয়েছিলেন, ব্যাগ তিনি সরাননি। কিন্তু ততক্ষণে কে শোনে কার কথা। এলোপাথাড়ি মারধর চলতে থাকে। মারধরের চোটে জামাকাপড় ছিঁড়ে যায় তাঁর।
ইতিমধ্যে এগিয়ে এসেছিলেন আশপাশের লোকজন। তাঁরাই উন্মত্ত যুবকের হাত থেকে উদ্ধার করেন সায়ককে। তাঁর সঙ্গে দুই সহকর্মীও উঠেছিলেন ডায়মন্ড হারবার স্টেশন থেকে। তাঁরা ওই ট্রেনেই এগিয়ে গিয়েছিলেন পরের স্টেশনে। টেলিফোনে তাঁরা তত ক্ষণে খবর দিয়েছেন বিডিও এবং অন্য আধিকারিকদের। তাঁদের কথা মতো ট্রেন ধরে আসেন ডায়মন্ড হারবারে। তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। জিআরপি-র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সায়ক। পরে মগরাহাট থানাতেও অভিযোগ জানান।
সায়কের কথায়, “প্রতি দিন আমাদের মতো অনেককে ট্রেনে-বাসে যাতায়াত করতে হয়। এ ভাবে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করলে কী ভাবে চলাফেরা করব?” ডায়মন্ড হারবার ১ বিডিও দেবাহুতি ইন্দ্র বলেন, “ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। পুলিশ ও জিআরপিকে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি।” মগরাহাট থানা সূত্রের খবর, দোষী ব্যক্তিদের খোঁজে জিআরপি-র সঙ্গে যৌথ ভাবে তল্লাশি চালাচ্ছে তারা। |
|
|
|
|
|