তছরুপের অভিযোগ প্রধান ও নির্মাণ সহায়কের বিরুদ্ধে
কশো দিনের কাজের প্রকল্পে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত প্রধান এবং পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়কের বিরুদ্ধে। উত্তর ২৪ পরগনার একশো দিনের কাজের প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাস্তুকারেরা তদন্তে অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পান। এর পরেই দু’জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিডিও। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি বাগদা ব্লকের হেলেঞ্চা পঞ্চায়েতের। অভিযোগ, কাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় সত্ত্বেও নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে ঠিকাদারকে পুরো বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত প্রধান তৃণমূলের নিখিল ঘোষ অবশ্য এই ঘটনায় তাঁর দলের একাংশ এবং সিপিএমের ‘চক্রান্ত’ দেখছেন। দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “ঘটনাটি নিয়ে দলের কাছেও অভিযোগ এসেছে। দলীয় স্তরে তা তদন্ত করে দেখা হবে। প্রধান দোষী প্রমাণিত হলে পদত্যাগ করতে হবে। তা ছাড়া, আইন আইনের মতো চলবে। কেউ যদি তাতে হস্তক্ষেপ করে, তা হলেও দলীয় ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অভিযুক্ত নির্মাণ সহায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রের খবর, গত অক্টোবর-নভেম্বর মাসে একশো দিনের প্রকল্পে ওই পঞ্চায়েতের ৫টি ‘স্কিম’ নিয়েই বিতর্ক। কিছু দিন আগে গোটা ঘটনাটি জেলাশাসকের দৃষ্টিগোচর করেন বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের কার্তিক পাইন-সহ গ্রামবাসীদের একাংশ। এরপরেই তদন্তে নামে প্রশাসন। বাগদার বিডিও খোকন বালা বলেন, “জেলাশাসকের নির্দেশেই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি।” বনগাঁর এসডিপিও বিমলকান্তি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। নথিপত্র চেয়ে পাঠিয়েছি। অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নিখিলবাবু ও পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক প্রদীপ পালের (বর্তমানে হাসনাবাদে অন্য অফিসে বদলি হয়ে গিয়েছেন) বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে বিডিও জানান, ওই পাঁচটি স্কিমে কাজ হয়েছিল মাত্র ৬০-৬৫ শতাংশ। কিন্তু একশো শতাংশ কাজের টাকা দেওয়া হয়েছে ঠিকাদারদের। সব মিলিয়ে আর্থিক গড়মিলের পরিমাণ প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, কাগজপত্রে কারচুপি করা হয়। পুরনো তারিখে সইসাবুদ করেছেন প্রধান। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে টাকা দিতে হলে যে সরকারি অনুমোদন লাগে, তা-ও নেওয়া হয়নি।
কিন্তু যে পাঁচটি স্কিমের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলি সরাসরি নির্মাণ সহায়কের দায়িত্বের আওতায় পড়ে। তা হলে পঞ্চায়েত প্রধানকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে কেন? এ ক্ষেত্রে ব্লক প্রশাসন সূত্রের ব্যাখ্যা, পদাধিকার বলে প্রধান সমস্ত কাজেরই দেখভালের দায়িত্বে আছেন। প্রধানের বক্তব্য, “পদ্ধতিগত ভাবে সরকারি কর্মীদের সব কাজ দেখার দায়িত্ব আমার আছে ঠিকই, কিন্তু যে সব কাগজপত্রে সই করতে বলা হয়, তা-ই করে দিয়েছি। তা ছাড়া, কাজ নিয়ে কোনও সমস্যার কথা এত দিনে কেউ আমাকে জানানওনি।” নিখিলবাবু বলেন, “উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ভাবে আমার ও পঞ্চায়েতের সম্মান নষ্ট করতেই আমাদের দলের কেউ কেউ এবং সিপিএমের লোকজন এমন অভিযোগ আনছে।” প্রধানের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সিপিএমের জেলা নেতা সঞ্জয় দত্ত চৌধুরী বলেন, “ওই প্রধান আগে আমাদের দলের সদস্য ছিলেন। দুর্নীতির অভিযোগে ওঁকে বহিষ্কার করা হয়।” প্রধানের পাশে অবশ্য দাঁড়িয়েছেন তৃণমূলের বাগদা ব্লক সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা তরুণ ঘোষ। তাঁরা বলেন, “প্রধান হিসাবে সমস্ত কাজকর্মের ব্যাপারে উনি দায়বদ্ধ। তবে এ ক্ষেত্রে উনি সরাসরি কোনও ভাবেই যুক্ত নন। ওঁকে ফাঁসানোর জন্য চক্রান্ত করা হচ্ছে।”
First Page South Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.