খন্দ-খানায় ক্ষতবিক্ষত রাস্তাঘাট |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বহরমপুর |
পঞ্চাননতলা রেলগেট থেকে বহরমপুর শহরের ভাগীরথীর উপর রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী সেতু পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার সড়কপথের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। পিচ পাথর উঠে গিয়ে ওই সড়ক পথের কোথাও এখন তিন ফুট, কোথাও দু’ ফুট গর্ত। অথচ সড়কপথে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের জন্য ওই মরণ ফাঁদ উপর দিয়ে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই।
ওই দু’ কিলোমিটার মরণ ফাঁদের মধ্যে বহরমপুর শহরের বুক চিরে চলে যাওয়া পঞ্চাননতলা রেলগেট থেকে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাস পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক পথের নাম বাবুলবোনা রোড। ওই সড়কপথটি বহরমপুর পুরসভার এক্তিয়ারে। বাস টার্মিনাস থেকে রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী সেতু পর্যন্ত বাকি এক কিলোমিটার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কপথের অংশ বিশেষ।
বেহাল দশা বহরমপুর শহরের পশ্চিম প্রান্তে পুরনো কান্দি বাসস্ট্যান্ড থেকে কুঞ্জঘাটা পর্যন্ত ভাগীরথীর পাড় বরাবর প্রায় ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ কাজি নজরুল ইসলাম সরণিরও। বহরমপুর পুরসভা এলাকার ওই সড়কপথটিও মুর্শিদাবাদ জেলাপরিষদের মালিকানায় রয়েছে। ওই সড়কপথের দক্ষিণ প্রান্তের নজরুল ইসলামের মূর্তির পাদদেশ থেকে শুরু করে জেলাশাসকের বাংলো, সার্কিট হাউস এবং কৃষ্ণনাথ কলেজের দেওয়াল ঘেঁষে চলে যাওয়া শহরের দক্ষিণ প্রান্তের গোরাবাজার শ্মশানঘাট পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ নেতাজি রোডের বেহাল অবস্থার কথাও কহতব্য নয়। ওই রাস্তাটির মালিক ফের পুরসভা। এ ছাড়াও পুরসভার এক্তিয়ারে থাকা বহরমপুর শহরের ১২-১৪টি রাজপথের এখন বেহাল দশা। |
|
বেহাল বাবুলবোনা রাস্তা। নিজস্ব চিত্র। |
ফলে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বহরমপুর শহরের মানুষ চলাফেরা করতে বাধ্য হচ্ছে। আর দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গে ও উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যাত্রী বোঝাই ও পণ্য বোঝাই যানবাহন চলাচল করছে পঞ্চাননতলা রেলগেট থেকে ‘মোহনা’ বাস টার্মিনাস পর্যন্ত এক কিলোমিটার দীর্ঘ মরণ ফাঁদ অতিক্রম করে। ‘বাবুলবোনা রোড’ নামের ওই সড়কপথে নতুন করে একটি স্থায়ী সমস্যা খোদ পুরসভাই তৈরি করতে চলেছে। ওই অভিযোগ খোদ বহরমপুর পুরসভার কাউন্সেলর গোপাল সিংহ।
যানজট সামাল দেওয়ার উদ্দেশ্য পঞ্চাননতলা রেলগেট থেকে বাস টার্মিনাস পর্যন্ত সড়কপথ ওয়ান ওয়ে করার জন্য রাস্তায় কংক্রিটের ডিভাইডার বসানোর কাজ চলছে। সম্প্রতি পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে পুরসভার উদ্যোগে নাগরিকসভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় গোপাল সিংহ বলেন, “অপ্রসস্থ বাবুলবোনা রোড় ওয়ান ওয়ে করার ফলে কোনও গাড়ি ওই পথে খারাপ হয়ে গেলে বিপদ মারাত্মক আকার ধারণ করবে। কারণ, মাঝ রাস্তায় বিকল হয়ে যাওয়া গাড়ি সরানো উপায় থাকবে না। যানজটে তখন অবরুদ্ধ হবে বহরমপুর শহর।”
পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য অবশ্য ওই আশঙ্কা উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, “এক দিক থেকে অন্য দিকে যাতায়াতের জন্য মাঝে মাঝে ডিভাইডার দেওয়া হয়নি। ওই ফাঁকা জায়গা দিয়ে বিকল গাড়ি সরিয়ে ফেলা হবে।” পুরপ্রধান বলেন, “পঞ্চাননতলা রেলগেট থেকে বাস টার্মিনাস পর্যন্ত সড়কপথের সংস্কারের জন্য প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। টেন্ডার করে ঠিকাদারও নিয়োগ করা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তারপরই শুরু হয়েছে লাগাতার বৃষ্টি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটলেই কাজ শুরু হবে। শ’ খানেক ভেপার লাইট দিয়ে ওই সড়কপথ সাজানোর কাজ চলছে।” |
|