|
|
|
|
সিপিএম সমর্থক খুন |
যাবজ্জীবন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নবদ্বীপ |
সিপিএম সমর্থককে খুনের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য-সহ ৮ জনের। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালের ২৯ জুন বাহিরচড়া গ্রামের বাসিন্দা ও সিপিএম সমর্থক হরিচরণ ঘোষকে কুপিয়ে খুন করা হয়। সেই খুনের ঘটনায় মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন মৃতের মা অর্চনা ঘোষ। যাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ওই পঞ্চায়েতের তৎকালীন উপপ্রধান তৃণমূলের হারাধন ঘোষ। এখন তিনি ওই পঞ্চায়েতের বিরোধী দল নেতা।
খুনের ঠিক সাত বছর পরে কৃষ্ণনগরের অতিরিক্ত জেলা জজ (দ্বিতীয়) সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরী হারাধনবাবু সহ ৮ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। তিন জনকে তিনি বেকসুর খালাস করে দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার বিচারক হারাধনবাবু সহ ৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় দশ বছর এবং ৩২৬ ধারায় যাবজ্জীবনের রায় দেওয়া হয়েছে। |
|
রায় ঘোষণার পর হারাধন ঘোষ। নিজস্ব চিত্র। |
রায় শোনার পরে অর্চনাদেবী বলেন, “আমার ছেলেকে যে ভাবে কুপিয়ে কুপিয়ে সেই দিন ভোরে খুন করা হয়েছিল, তার সুবিচার পেলাম। ছেলেকে আর ফিরে পাব না। কিন্তু আদালত যে সুবিচার করল, তাতে আমি খুশি।” হরিচরণবাবুর কাকা শৈলেন ঘোষ বলেন, “সে দিন সকাল থেকেই খুব বোমাবাজি হচ্ছিল গ্রামে। হরিচরণ খেত থেকে ঢ্যাঁড়শ তুলে বাজারে বিক্রি করতে যাচ্ছিল। ওকে বারবার যেতে নিষেধ করেছিলাম। ও শোনেনি। রাস্তায় ওকে দেখতে পেয়ে দশ বারো জন ঘিরে ধরে। তারপরে দিনের আলোয় কুপিয়ে খুন করে। তার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সে দিনের উপপ্রধান হারাধন ঘোষ।” সরকার পক্ষের আইনজীবী শ্যামল বিশ্বাস বলেন, “পুরনো গ্রাম্য বিবাদের জেরে এই খুন বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। ছেলেকে বাঁচাতে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন তাঁর মা। দিনের বেলা সবাইকে তিনি চিনতেও পেরেছিলেন।”
মহীশূরা অঞ্চলে সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক হানিফ মণ্ডল বলেন, “যোগ্য বিচার হয়েছে। আইন তার নিজের পথে চলেছে। যে ভাবে সাক্ষ্যপ্রমাণ ছিল তাতে এ ছাড়া অন্য কিছু হওয়ার ছিল না। সামান্য ঢ্যাঁড়শ তোলা নিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে হরিচরণকে। ওর অপরাধ ছিল, ও সিপিএম করত।”
নবদ্বীপের বিধায়ক তৃণমূলের পুণ্ডরীকাক্ষ সাহার অবশ্য বক্তব্য, “হারাধন ঘোষকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। আমি বিষয়টি ২০০৪ সালেই বিধানসভায় বিষয়টি তুলে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম। বলেছিলাম, সঠিক তদন্ত হোক, সর্বদল প্রতিনিধি যাক। কিন্তু সে সব কিছুই হয়নি। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।” |
|
|
|
|
|