|
|
|
|
ট্রেলারের ধাক্কায় মুম্বই রোডে বাবা-ছেলের মৃত্যু |
নিজস্ব সংবাদদাতা • উলুবেড়িয়া |
ট্রেলারের ধাক্কায় মৃত্যু হল মোটরবাইক আরোহী বাবা ও ছেলের। সোমবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় জেলেপাড়া সেতুর কাছে মুম্বই রোডে। মৃত মাবুদ খান (৪৫) ও তাঁর ছেলে মাসুদ (১৭) বাগনানের খাজুরনান গ্রামের বাসিন্দা। দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় যুবকেরা একটি গাড়ি নিয়ে ট্রেলারটিকে ধাওয়া করেন। ধুলাগড়ি টোল-প্লাজার কাছে তাঁরা ট্রেলারটিকে ধরে ফেলেন। চালককে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাবুদ উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে মুহুরির কাজ করতেন। মাসুদ এ বার উচ্চ মাধ্যমিক দিয়ে কলেজে ভর্তির চেষ্টা করছিল। মাস কয়েক ধরে মাবুদ ছেলেকে আদালতে আনছিলেন তাঁর কাজ শেখাতে। প্রতিদিনের মতো এ দিনও মাবুদই বাইক চালিয়ে আদালতে আসছিলেন। পিছনে বসেছিল মাসুদ। মুম্বই রোডে একটি ১২ চাকার ট্রেলার তাঁদের পিছনে আসছিল। নিমদিঘি ছাড়িয়ে জেলেপাড়া সেতুর কাছে মাবুদ বাইকটি ডান দিকে ঘুরিয়ে উলুবেড়িয়া শহরে ঢোকার রাস্তা ধরতে যাচ্ছিলেন। তখনই ট্রেলারটি ধাক্কা মারে। বাবা-ছেলে দু’জনেই বাইক ছেকে ছিটকে পড়েন। ট্রেলারের পিছনের চাকায় পিষ্ট হন। ঘটনাস্থলেই মাবুদের মৃত্যু হয়। কাছেই ইএসআই হাসপাতালে আনার পথে মারা যায় মাসুদ। এই খবর পৌঁছতে শোকের ছায়া নেমে আসে উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে।
দুর্ঘটনার পরে ট্রেলারটিকে দ্রুত গতিতে পালাতে দেখে একটি গাড়ি নিয়ে স্থানীয় কয়েক জন যুবক ধাওয়া করেন। ধুলাগড়ি টোল প্লাজার কাছে তাঁরা ট্রেলারটি ধরে ফেলেন। চালককে মারধর করা হয়। এক যুবক জানান, সেই সময়ে ট্রেলারটির খালাসি রড দিয়ে তাঁদের এক জনকে মারে। পুলিশ ট্রেলারের চালক এবং খালাসিকে গ্রেফতার করেছে। আটক করা হয় ট্রেলারটি। ছেলে, দুই মেয়ে এবং স্ত্রী নিয়ে সংসার ছিল মাবুদের। এ দিন খাজুরনান গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দুর্ঘটনার খবর শুনে প্রতিবেশীরা ওই বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন। মাবুদের স্ত্রী মাসুমা বেগম বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন। তাঁর বড় মেয়ে মোনালিসা খাতুন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএ পড়েন। মোনালিসার বোন মারিয়া খাতুন বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। দু’জনকেই সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন প্রতিবেশীরা। মোনালিসা বলেন, “এ বার আমাদের কী হবে? ভাইকে বাবা কাজ শেখাচ্ছিলেন। ভাই আরও পড়াশোনা করতে চেয়েছিল। সব শেষ হয়ে গেল।” |
|
|
|
|
|