মামলা সিঙ্গুরের কিছু চাষিরও
আবার শুনানি ১৩ দিন পর, নির্দেশ হলফনামার
ক মাসের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করার অনুরোধ জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু আগামী ১৩ দিন কলকাতা হাইকোর্টে সিঙ্গুর মামলার কোনও শুনানিই হচ্ছে না।
সিঙ্গুর জমি বিলের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে টাটা মোটরসের দায়ের ওই মামলার শুনানি ফের শুরু হবে ১৪ জুলাই। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমিত্র পাল এই নির্দেশ দিয়েছেন। এর পাশাপাশি, ওই বিল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে এ দিন সিঙ্গুরের কয়েক জন বাসিন্দা পৃথক একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার শুনানি হবে ১৮ জুলাই।
সিঙ্গুরের জমি বিলের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে টাটা মোটরসের দায়ের করা মামলায় ৮ জুলাইয়ের মধ্যে রাজ্য সরকারকে হলফনামা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সৌমিত্র পাল। ১২ জুলাইয়ের মধ্যে টাটাকে তার জবাব দিতে হবে। ১৪ জুলাই সিঙ্গুর মামলার শুনানি ফের শুরু হবে বলে। অর্থাৎ, ১৪ জুলাইয়ের আগে কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি আর হবে না। নতুন যে মামলাটি এ দিন দায়ের করা হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারকে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি পাল।
টাটা মোটরসের দায়ের করা আবেদনের ভিত্তিতে বুধবারই সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তিকালীন নির্দেশে জানিয়ে দিয়েছিল, কলকাতা হাইকোর্টে চলা মূল মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকার সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি হস্তান্তর করতে পারবে না। পাশাপাশি, এক মাসের মধ্যে সিঙ্গুরের মূল মামলাটির নিষ্পত্তি করতে কলকাতা হাইকোর্টকে অনুরোধ জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট আরও জানিয়েছিল, কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করা মূল মামলায় হস্তক্ষেপ করবে না শীর্ষ আদালত।
সিঙ্গুরে ‘অনিচ্ছুক’ কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দিতে রাজ্য বিধানসভায় যে বিল সম্প্রতি পাশ হয়েছে, তার সংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে টাটা মোটরস ২২ জুন কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছিল। বিচারপতি সৌমিত্র পালের এজলাসে তার শুনানি চলছে। সেটাই মূল মামলা। এ দিন হাইকোর্টে সওয়াল করতে উঠে টাটা মোটরসের আইনজীবী সমরাদিত্য পাল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রতিলিপি জমা দিয়ে বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট পারলে এক মাসের মধ্যে এই মামলার নিষ্পত্তি করতে কলকাতা হাইকোর্টকে অনুরোধ করেছে। পাশাপাশি, মামলার সব পক্ষকেই আদালতের সঙ্গে সহযোগিতা করারও নির্দেশ দিয়েছে। আমরা চাই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হোক।”
দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি পাল সরকার পক্ষকে তাদের বক্তব্য জানিয়ে ৮ জুলাইয়ের মধ্যে হলফনামা দিতে নির্দেশ দেন। টাটা মোটরসকে ১২ জুলাইয়ের মধ্যে তার জবাব দিতে হবে। ১৪ জুলাই ফের মূল মামলারই শুনানি শুরু হবে।
এ দিকে সিঙ্গুর বিল প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়ে সিঙ্গুরের বাসিন্দা বিপ্লব দাস-সহ কয়েক জন কলকাতা হাইকোর্টে এ দিন পৃথক একটি মামলা দায়ের করেন। আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ইচ্ছুক বা অনিচ্ছুক চাষি বলে কিছু হয় না। সিঙ্গুরে রাজ্য সরকার জনস্বার্থে প্রায় ১ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করেছে। সেখানে কোনও চাষির ইচ্ছা-অনিচ্ছার সুযোগ নেই। রাজ্য সরকার জমির যে দাম ঘোষণা করেছিল, তা প্রায় ৮০ শতাংশ চাষি মেনে নেন। বাকি ২০ শতাংশ চাষি তা মানেননি। বিকাশবাবু বলেন, যাঁরা দাম নিলেন তারা ইচ্ছুক, আর যাঁরা দাম নিলেন না তারা অনিচ্ছুক হয়ে গেলেন! এটা হতে পারে না। সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে চাষিদের মধ্যে বিভাজন ঘটানো হচ্ছে। জমি ফেরত দিতে হলে তা সকলকেই ফেরত দিতে হবে।
আবেদনকারীরা আবেদনে বলেছেন, সিঙ্গুরে মূলত দু’শ্রেণির জমি ছিল। শালি ও সোনা। শালি জমি নিচু জমি, সেখানে এক বার ফসল হয়। আর সোনা জমি উঁচু জমি। সেখানে কম পক্ষে তিন বার ফসল হয়। এখন যা জমির অবস্থা, তাতে কোনও জমিতেই সহজে চাষ করা যাবে না। যাঁরা জমি ফেরত পাবেন, তাঁরা অনেকেই জমি বেচবেন। এর ফলে দেখা যাবে, যাঁদের তিন ফসলি জমি ছিল তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন। অন্য দিকে, এক ফসলি জমির মালিকরা লাভবান হলেন। অথচ সরকার জমি নিয়েছিল নিজেদের প্রয়োজনে। তাই ইচ্ছুক-অনিচ্ছুক চাষির এই বিভাজন সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক।
বিচারপতি সৌমিত্র পাল রাজ্য সরকারকে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে তাঁদের বক্তব্য হলফনামা দিয়ে জানাতে বলেছেন। ১৮ জুলাই মামলাটির শুনানি হবে।
Previous Story South Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.