|
|
|
|
আজ জামশেদপুরে উপনির্বাচন |
বহুমুখী টানাপোড়েনে দীর্ণ অবস্থায় ভোটের রাজনীতি |
ঋজু বসু • রাঁচি |
কে আনবে পরিবর্তন? সংগঠিত রাজনৈতিক শক্তি না কোনও যোগ্য ব্যক্তির কাজ করার সদিচ্ছা? কাল, শুক্রবার জামশেদপুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন উপলক্ষে এই সারপ্রশ্নই মাথা চাড়া দিচ্ছে।
ঝাড়খণ্ডের পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া জেলাটির লোকসভা আসনের হার-জিতে কেন্দ্র বা রাজ্যের রাজনীতিতে আপাত ভাবে তেমন প্রভাব ফেলবে না ঠিকই, কিন্তু রাজনীতির পরম্পরায় গত দু’দশকের বাঁধা গত থেকে এ বার কিছুটা হলেও বেরনোর স্বপ্ন দেখছে জামশেদপুর। এ তল্লাটের বড় দল বিজেপি, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) বা কংগ্রেসের মৌরসিপাট্টাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা, আজসু বা তৃণমূলও আদাজল খেয়ে নেমেছে।
ঝাড়খণ্ড আন্দোলনের শহিদ, নির্মল মাহাতো ১৯৮৭ সালে খুন হওয়ার পর থেকেই এখানে জেএমএমের রমরমা। তার পর থেকে এই আসনে পালা করে জেএমএম এবং বিজেপি-র ভাগ্যে শিকে ছিঁড়েছে। এই আসনের অন্তর্গত ৬ বিধানসভা আসনের দখলদারির ভাগাভাগিতেও বিজেপি ও জেএমএম-ই এগিয়ে। গ্রামাঞ্চলে বহড়াগোড়া, ঘাটশিলা আসন জেএমএমের দখলে, আবার গ্রামীণ ক্ষেত্রে পোটকা এবং শহরে জামশেদপুর (পূর্ব) কেন্দ্রটি বিজেপি-র।
বাকি দু’টি আসন জামশেদপুর (পশ্চিম) কংগ্রেসের ও জুগসলাই আজসু-র। বিজেপি-র জন্য এই আসনটির সঙ্গে বিশেষ মর্যাদার প্রশ্নও জড়িয়ে। ২০০৯-এ এই আসনটিতে জয়ী বিজেপি সাংসদ অর্জুন মুন্ডা ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ফলেই অসময়ে এই ভোটের দামামা। সুতরাং বিজেপি-র কাছে এই আসন ধরে রাখা প্রকারান্তরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি জনতার আস্থার স্মারক। দলের রাজ্য সভাপতি দীনেশানন্দ গোস্বামীকে তারা টিকিট দিয়েছে। বিজেপি রাজ্য নেতা শিবলাল ঘোষ বলেন, “একমাত্র আমাদেরই এই কেন্দ্রের গ্রাম-শহর সর্বত্র প্রভাব আছে।”
অন্য দিকে, বাবুলাল মরান্ডির দল, ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা বা জেভিএমের প্রার্থী অজয় কুমার বিজেপি-র শহুরে ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসাচ্ছেন। গ্রামেও সুপরিকল্পিত ভাবে লড়ছেন। বিজেপি-র আর একটি সমস্যা ঝাড়খণ্ডে শাসক-জোটের শরিকদের সঙ্গে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ লড়াই। জেএমএম এবং আজসুদু’দলই এ বার বিজেপি-র প্রতিপক্ষ। কিন্তু জোটসঙ্গীদের বিরুদ্ধে কী প্রচার করবে, বিজেপি-কে ঘুরে-ফিরে জাতীয় রাজনীতির দুর্নীতি, মূল্যবৃদ্ধির বিষয় আওড়ে সেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই তোপ দাগতে হচ্ছে। কংগ্রেস প্রার্থী বন্না গুপ্তের সমস্যা স্বয়ং কংগ্রেস। দলের রাজ্য সভাপতি প্রদীপ বালমুচুর অনুগামী, ঘাটশিলার তাপস চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতারা গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে হাত গুটিয়ে নেওয়ায় কংগ্রেস বিপাকে পড়েছে।
জেএমএমের সমস্যাও বিক্ষুব্ধরাই। তাদের প্রার্থী রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুধীর মাহাতোর পথের কাঁটা আজসু-র আস্তিক মাহাতো ও তৃণমূলের সুমন মাহাতো। কুর্মী ভোটে ভাগ বসিয়ে তাঁরা গ্রামাঞ্চলে জেএমএমের প্রাধান্য খর্ব করতে পারেন। আস্তিক আদতে জনপ্রিয় জেএমএম নেতা। প্রাক্তন সাংসদ তৃণমূলের সুমন আবার মাওবাদীদের হাতে ‘শহিদ’, জেএমএমের প্রাক্তন সাংসদ সুনীল মাহাতোর স্ত্রী। |
|
|
|
|
|