|
|
|
|
বৃদ্ধ অপহরণে এক জনের যাবজ্জীবন, দু’জন উধাও |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
কয়েক জন মিলে হত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে এক বৃদ্ধকে অপহরণ করেছিল ১২ বছর তিন মাস আগে। সেই মামলায় শাহিদ হুসেন নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আদালত। বৃহস্পতিবার বিচার ভবনে নবম ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক অমিত চট্টোপাধ্যায় এই রায় দেন। নথি জাল করার দায়ে শাহিদ এবং অন্য দু’জনকে সাত বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এই মামলার সরকারি আইনজীবী নবকুমার ঘোষ জানান, বাকি দুই দোষীর নাম প্রেমলাল দাশ ও নিমাই আচার্য। ওই ঘটনায় অন্য দুই অভিযুক্ত আলমগির আলম এবং তার স্ত্রী রেহানা বেগম বিচার চলাকালীনই ফেরার হয়ে যায়। এখনও তাদের খোঁজ মেলেনি।
পুলিশ জানায়, হেস্টিংস এলাকার কমিশারিয়েট রোডে থাকতেন গোপীন্দ্রনাথ দত্ত। জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন নির্দেশক গোপীবাবুর ওই রাস্তাতেই দু’টি বাড়ি ছিল। তারই একটি বাড়ির একতলায় থাকতেন তিনি। সরকারি আইনজীবী জানান, ১৯৯৩ সালে দুষ্কৃতীদের হামলায় নিহত হন গোপীবাবুর স্ত্রী। ওই ঘটনায় কয়েক জন আদালতে সাজাও পায়। ১৯৯৯ সালে নিজের বাড়ি দু’টি বিক্রি করার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেন ওই ব্যক্তি। প্রতিভা বসু নামে এক মহিলা সেই বিষয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। আলমগির আলম নামে অন্য এক ব্যক্তিও বাড়ি দু’টি কিনতে চায়। ওই বছর মার্চে চেন্নাইয়ে চোখের চিকিৎসা করাতে যান গোপীবাবু। সপ্তাহ দুয়েক পরে ফেরেন কলকাতায়। তাঁর একমাত্র ছেলে বিদেশে অধ্যাপনা করতেন। সেই কারণে কলকাতায় ওই বৃদ্ধের আত্মীয়েরা ফোনে নিয়মিত তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।
পুলিশ ও আদালত সূত্রের খবর, ’৯৯ সালের ২২ মার্চ বিকেলের পর থেকে গোপীবাবুর ফোনে কোনও সাড়া পাননি আত্মীয়েরা। পরের দিন সকালে প্রতিভাদেবী কমিশারিয়েট রোডে ওই বৃদ্ধের বাড়িতে যান। দোতলা বাড়ির একতলায় থাকতেন গোপীবাবু। কিন্তু সেখানে তাঁর দেখা মেলেনি। দোতলায় আলমগির, তাঁর স্ত্রী রেহানা এবং শাহিদ হুসেনকে দেখতে পান প্রতিভাদেবী। তাঁর প্রশ্নের উত্তরে আলমগির জানান, বাড়ি-সহ সমস্ত সম্পত্তি তাঁকে বিক্রি করে গোপীবাবু অন্যত্র চলে গিয়েছেন। তার পর থেকে ওই বৃদ্ধের খোঁজ মেলেনি। তদন্তকারীদের সন্দেহ, তাঁকে খুন করে গঙ্গায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মৃতদেহেরও হদিস পায়নি পুলিশ।
পুলিশি সূত্রের খবর, তার পরেই ওই বৃদ্ধের আত্মীয়দের সব জানান প্রতিভাদেবী। খবর দেওয়া হয় গোপীবাবুর ছেলে গৌতমশঙ্কর দত্তকেও। তিনি অধ্যাপনা সূত্রে আর্জেন্তিনায় থাকতেন। তিনি ফিরে হেস্টিংস থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। পুলিশ তদন্তে গিয়ে জানতে পারে, গোপীবাবুর বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি তোলা হয়েছে। গৌতমবাবু পুলিশকে জানিয়েছিলেন, কলকাতায় ফিরে তিনি আলমগিরের সঙ্গে দেখা করেন। আলমগির তাঁকে বাড়ি কেনার নথিপত্র দেখায়।
পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মামলার দুই ফেরার অভিযুক্ত আলমগির ও রেহানা হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিল। তার পরেই তারা বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছে। |
|
|
|
|
|