|
|
|
|
সোনার লোভে খুন ব্যবসায়ীকে, দু’জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
ছিনতাই করতে গিয়ে এক সোনা ব্যবসায়ীকে নৃশংস ভাবে খুন করে তাঁর দেহ লোপাটের চেষ্টা করেছিল দুই ব্যক্তি। সেই দায়ে ভাতারের ঊষা গ্রাম ও বর্ধমান থানার সিমডালের দুই বাসিন্দা লালু মাঝি ও শিবনাথ থোমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করল অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত। বৃহস্পতিবার এই আদালতের বিচারক সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলাল কারাদণ্ডাদেশের পাশাপাশি ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। যত দ্রুত সম্ভব নিহত ব্যবসায়ী সনাতন পালের (৪২) স্ত্রী প্রতিমাদেবীর হাতে ওই ঘটনায় লুঠ হওয়া সোনা ও রুপোর গয়না তুলে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ঘটনার সূত্রপাত গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি। বর্ধমান থানার সিমডাল বাজারে অবস্থিত নিজের দোকান থেকে এম-৮০ চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ওই ব্যবসায়ী। কিন্তু রাতে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। পরের দিন এক কিলোমিটার দূরে স্থানীয় গবঘোত পুকুরের পাড়ে তাঁর দু’চাকার গাড়িটিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর পরে কাছাকাছি হৃদয়গোড়ে নামের একটি পুকুর থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ওই ব্যবসায়ীর ফুলে ফেঁপে ওঠা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার তদন্তে নামে বর্ধমান থানার পুলিশ। ওই দিনই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারী অফিসার। দু’জনকে জেল হেফাজতে রেখে মামলার বিচার শুরু হয়।
সনাতনবাবুর প্রতিবেশী, সিমডালের বাসিন্দা দেবদাস কর্মকার বলেন, “আমাদের গ্রামেই বাস করত শিবনাথ থোম। সনাতন নিঁখোজ হওয়ার পরের দিনই একটি রঙিন টিভি ও বেশ কিছু দামি বৈদ্যুতিন সামগ্রী কিনে আনে সে। পরে পুকুর থেকে সনাতনের দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদেহটি খড়ের দড়ি দিয়ে বাবলার ডালে বেঁধে রাখা হয়েছিল। দেহ উদ্ধার হওয়ার পরেই আমাদের সন্দেহ হয়। কারণ, সনাতনের বেশ কিছু সোনা ও রুপোর গয়না অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। আমাদের সন্দেহ হয়, এর পিছনে শিবনাথের হাত আছে। খবর পেয়ে পুলিশ শিবনাথকে গ্রেফতার করে। তার বাড়ির পিছন থেকে পুঁতে রাখা প্রায় ২০ লক্ষ টাকার গয়না উদ্ধার করা হয়।” জেরার মুখে শিবনাথ তার সঙ্গী লালু মাঝির কথা জানিয়ে দেয় পুলিশকে।
সরকারি পক্ষের আইনজীবী রামগোপাল মজুমদার বলেন, “এই নৃশংস খুনের বিচার দ্রুত শুরু ও শেষ করা গিয়েছে পুলিশি তৎপরতায়। বিচারক তাঁদের কঠোর সাজাই দিয়েছেন।” জেলের গাড়িতে ওঠার মুখে লালু বলে, “শিবনাথের পাল্লায় পড়ে আমার জীবনটা নষ্ট হয়ে গেল। খুনের সময় ও আমাকে ডেকে নিয়ে আসে। বলে সব টাকা, গয়না আমরা নিয়ে নির্বিবাদে পালিয়ে যাব। কেউ কিছুই জানতে পারবে না। লোভে পড়ে রাজি হয়েই আমার এই হাল।” পাশে বসে, পুলিশের খাতায় দাগী দুষ্কৃতী বলে পরিচিত শিবনাথ তখন ভাবলেশহীন মুখে বিড়ি টানছে। |
|
|
|
|
|